রাজ্যের ঋণ, রাজস্ব ঘাটতি এবং বেকারি নিয়ে নির্দিষ্ট প্রশ্ন তুলল বিজেপি। আর কেন্দ্রের ঋণ এবং বাজেটের দিশা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়েছে শাসক তৃণমূলও।
বিধানসভায় বাজেট বিতর্কে অংশ নিয়ে বুধবার বিজেপির অর্থনীতিবিদ-বিধায়ক অশোক লাহিড়ী প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে। অশোকের অভিযোগ, আর্থিক উন্নয়নের প্রশ্নে এত দিনেও কার্যকরী পদক্ষেপ করতে পারেনি রাজ্য! তাঁর দাবি, ২০২৪-২৫ বছরের বাজেট অনুমান (৩.৭৬%) ছাপিয়ে সে বছরের সংশোধিত বাজেটে রাজকোষ ঘাটতির পরিমাণ পৌঁছেছে ৪.০২%-এ। এই ২০২৫-২৬ সালের বাজেটে যা কমিয়ে ৩.৬০% করা যাবে বলে সরকারের অনুমান। অশোকের প্রশ্ন, ২০১১-১২ বছরে তা যেখানে ছিল ৩.৪০%, সেখানে আগামী বছরের বাজেট অনুমান তার চেয়েও বেশি। অশোকের প্রশ্ন, “বামেরা তো অনেক পাপ করেছেন। আপনারা (শাসক দলের উদ্দেশে) এত দিন কী করলেন?”
যদিও তৃণমূল বিধায়ক দেবব্রত মজুমদারের যুক্তি, “জিএসডিপি-র নিরিখে রাজস্ব ঘাটতি ৩.৭৫ থেকে কমিয়ে করা গিয়েছে ১.৫৬%। ১২.৮৩% রাজস্ব খাতে খরচ করা হয়েছে। বাকিটা হয়েছে মূলধনী খাতে।”
অশোকের প্রশ্ন, তাজপুরে গভীর সমুদ্রবন্দর তৈরির কথা থাকলেও তা কেন চোখে পড়ছে না? ডেউচা পাচামির মতো খনিপ্রকল্পের জন্য মূলধন কোথা থেকে আসবে, সহযোগী কারা বা কী শর্তে সেই প্রকল্পের কাজ এগোবে, তা-ও নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এই বিজেপি বিধায়ক। তাঁর সংযোজন, “বেকারত্বের হার সম্পর্কে ভাল কথা রয়েছে বাজেটে। তা হলে পরিযায়ী শ্রমিকদের এত সংখ্যা কেন?” যদিও দেবব্রতের পাল্টা দাবি, ‘‘আমাদের রাজ্যের মানুষ অন্য রাজ্যে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠলে দেশের লোক আমেরিকায় গিয়ে যে সমস্যায় পড়ছেন, তার দায় কেন্দ্রের।”
রাজ্যের অনুদান প্রকল্পে দারিদ্র্যের স্থায়ী সমাধান হচ্ছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অশোকের যুক্তি, আর্থিক বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজস্বের একটা অংশ মূলধনী বা পরিকাঠামো খাতে ব্যয় প্রয়োজন। সেখানে রাজ্যে মোট খরচের ৩.৪৪% ব্যয় হচ্ছে মূলধনী খাতে। যদিও উত্তরপ্রদেশ (১৭.৬%), মহারাষ্ট্র (১০.০৮%), গুজরাতে (৭.৯%) এমনকি, ওড়িশার (৫.৮%) এই খরচ পশ্চিমবঙ্গের থেকে বেশি। দেবব্রতের পাল্টা দাবি, মোট খরচের নিরিখে মূলধনী খরচ ৩.৬১% থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১০.৪০%।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)