মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরের ‘সক্রিয়’ বিজেপি নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁর নিজাম প্যালেসের দফতরে ওই বৈঠক করেন তিনি। আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রী ফের প্রার্থী হচ্ছেন ধরে নিয়েই দলের নেতা-কর্মীদের প্রস্তুতি শুরু করতে বলেছেন বিরোধী দলনেতা।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মমতা তাঁর দলের সর্ব স্তরের নেতাদের আগামী বিধানসভা ভোটের জন্য প্রস্তুতি শুরু করতে বলেছেন। সঙ্গে ভোটার তালিকায় বিজেপি ‘ভুয়ো’ ভোটার সংযোজন করেছে বলে অভিযোগ তুলে গোটা দলকেই বুথে বুথে নামিয়েছেন। বিজেপি নেতৃত্বের আশঙ্কা, সেই ‘কৌশলে’ বিরোধী ভোটারদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে চাইছে শাসক তৃণমূল। বৈঠকে সেই বিষয়ে শুভেন্দু বিস্তারিত আলোচনা করেছেন বলেই বিজেপি সূত্রের খবর। ভোটার তালিকা থেকে যাতে কারও নাম বাদ না যায়, সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রেখে চলার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ কলকাতা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ খটিকের নেতৃত্বে তৃণমূলের ‘ভুয়ো ভোটার সাফাই’ কর্মসূচিতে নজরদারি শুরু করেছে বিজেপি।
আরও পড়ুন:
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়েছিলেন মমতা। সেই তুল্যমূল্য লড়াইয়ে ১,৯৫৬ ভোটে মুখ্যমন্ত্রীকে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে আবার তাঁরা পরস্পরের মুখোমুখি না হলেও ভবানীপুরের বিজেপি প্রার্থীর হয়ে ঘুঁটি সাজাতে শুভেন্দু সক্রিয় থাকছেন বলেই মনে করছেন ভবানীপুর বিধানসভার বিজেপি নেতা-কর্মীরা। বিজেপি সূত্রের খবর, আগামী এক বছরের মধ্যে যাতে প্রতিটি বুথে বিজেপি লড়াই করার মত শক্তি জোগাতে পারে, সেই বিষয়ে এখন থেকেই পদক্ষেপ করতে বলেছেন শুভেন্দু। বৈঠকে বিরোধী দলনেতা জানিয়েছেন, ভবানীপুর বিধানসভার আটটি ওয়ার্ডের মধ্যে লোকসভা নির্বাচনে পাঁচটিতে এগিয়ে ছিল বিজেপি। গত কয়েক বছরের নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গিয়েছে, সামগ্রিক ভাবে ভবানীপুরে ভাল ফল করার জায়গায় রয়েছে বিজেপি। শুভেন্দু মনে করছেন, বুথস্তরে শক্তি জোগাতে পারলে, মুখ্যমন্ত্রীকে লড়াইয়ের মুখে ফেলা যেতে পারে।
আরও পড়ুন:
বৈঠক প্রসঙ্গে দক্ষিণ কলকাতা জেলার এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে লড়াই হবে বলে মানসিক ভাবে আমরা অনেকেই পিছিয়ে থাকি। কিন্তু শুভেন্দুদা আমাদের শক্তি জুগিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বুথে শক্তি জোগাতে পারলেই আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে লড়াইয়ের মুখে ফেলতে পারব।’’ ওই নেতার আরও বক্তব্য, ‘‘প্রতিটি বুথ আগলে রাখতে পারলেই যে জোরদার লড়াই সম্ভব, বৈঠকে আমাদের মনোবল বাড়িয়ে সে কথাই বলেছেন শুভেন্দুদা।’’
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ৬৩, ৭০,৭১, ৭২ এবং ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিল বিজেপি। তবে ৭৩, ৭৭ এবং ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে বড় ব্যবধানে এগিয়ে সার্বিক ভাবে বিধানসভায় এগিয়েছিল তৃণমূল। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে শুধু ভবানীপুরই নয়, দক্ষিণ কলকাতার রাসবিহারী কেন্দ্রেও বিজেপি প্রার্থীর জয় সম্ভব বলে বৈঠকে দাবি করেছেন শুভেন্দু।