সিপিএমের প্রবীণ নেতা বিমান বসু। —নিজস্ব চিত্র।
ময়দান হোক বা আন্দোলন, যৌবনের স্রোতেই ‘ব্রিগেড’ ভরানোর ডাক দিলেন বর্ষীয়ান বাম নেতা বিমান বসু। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসে যখন প্রবীণ বনাম নবীন দ্বন্দ্বে কাজিয়া তুঙ্গে, সেই সময়েই সিপিএমের প্রবীণ নেতা বিমানবাবু ফের সওয়াল করলেন নবীনদের পক্ষে। সিপিএমের দৈনিক মুখপত্রের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে বুধবার তিনি বলেছেন, ‘‘ন্যায়-বিচার পাওয়ার লক্ষ্যে চাকরি-প্রার্থী তরুণ-তরুণীরা রাস্তায় বসে আছেন, এমন ঘটনা অভাবনীয়। এই ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইকে জোরালো করতে হবে। যৌবনের এই অভিযানকে সফল করতে হবে। যৌবনের ব্রিগেড সফল করতে হবে।’’ আগামী ৭ জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশ এবং আন্দোলনেও ‘কালো কালো মাথা’র এগিয়ে আসার কথা বলেছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান।
বিজেপি ও তৃণমূল, দুই দলের বিরুদ্ধেই যে লড়াই চালাতে হবে এবং তাতে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে, সে কথাই ব্যাখ্যা করেছেন বিমানবাবু। তাঁর মতে, রাজ্যে তৃণমূল নামক ‘জগদ্দল পাথর’ হটাতে সব অংশের মানুষকেই দরকার। সেই সঙ্গেই তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি বলে, তৃণমূলকে আটকাতে হলে বিজেপি-কে দরকার। বামেরা তো শূন্য! কিন্তু বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে ফারাক কোথায়? দু’পক্ষের কেউ আরএসএসের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলে? আমাদের সজাগ থাকতে হবে। দক্ষিণপন্থী রাজনীতির বিপদ সম্পর্কে মানুষকে আরও সচেতন করতে হবে।’’ তৃণমূল দল তৈরি হওয়ার পরে তারাই ‘আসল বামপন্থী’ বলে যে প্রচার হয়েছিল এবং তাদের হাতে রাজ্যের এখন কী হাল, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন বিমানবাবু।
প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে এ দিন ওই অনুষ্ঠানেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’-এর কারবার-সহ দুর্নীতির নানা ঘটনা ধারাবাহিক ভাবে তুলে ধরেছে বামেরাই। এখন বিজেপি ‘কৃতিত্ব’ নেওয়ার চেষ্টা করছে। রাজ্যে বামপন্থার পুনর্জাগরণের লড়াই চলছে বলে তাঁর দাবি। অনুষ্ঠানের পরে সেলিম ফের দাবি করেছেন, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে মহারাষ্ট্রের মতো বাংলায় একনাথ শিন্ডে বানাতে চাইছে বিজেপি। পাশাপাশিই লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে জোট-প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের মন্তব্য, ‘‘তৃণমূল যেচে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের আলোচনা করতে গিয়েছিল। কিন্তু এত সাধাসাধির পরেও কংগ্রেস বোধহয় রাজি হয়নি। তাই কংগ্রেসকে গাল পাড়া শুরু করেছে তৃণমূল!’’
অনুষ্ঠানে ‘আক্রান্ত সংবাদমাধ্যম, বিধ্বস্ত গণতন্ত্র’ শীর্ষক আলোচনায় ‘নিউজ়ক্লিকে’র উপরে সরকারি দমন-পীড়নের দৃষ্টান্ত টেনে শশী কুমার বলেছেন, দেশে এখন ‘অঘোষিত জরুরি অবস্থা’ চলছে। তাঁর মতে, প্রথাগত মূল স্রোতের সংবাদমাধ্যম বা সমাজমাধ্যমে যখন ভুয়ো খবরের ছড়াছড়ি, সেই সময়ে কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে ‘বিকল্প সংবাদমাধ্যম’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy