Advertisement
২৯ নভেম্বর ২০২৪
Burdwan

টাকা নেই! অসুস্থ স্ত্রীকে টোটোয় করে নিয়ে গেলেন স্বামী, ভাতারে পথেই মৃত্যু মহিলার

বর্ধমানের পারবিরহাটায় অসিতদের বাড়ি। তাঁরা দু’জনেই দিনমজুর। গত সোমবার কয়েক জনের সঙ্গে দম্পতিও ভাতারের কাঁচগড়িয়া গ্রামে বোরোধান কাটার কাজে যান। সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েন মেনকা।

স্ত্রীর মৃতদেহ আগলে স্টেশনের গাছের তলায় বসে অঝোরে কাঁদলেন স্বামী! নিজস্ব চিত্র।

স্ত্রীর মৃতদেহ আগলে স্টেশনের গাছের তলায় বসে অঝোরে কাঁদলেন স্বামী! নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাতার শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৩ ২৩:০১
Share: Save:

অসুস্থ স্ত্রীকে মেডিক্যাল কলেজে ‘রেফার’ করেছে গ্রামের হাসপাতাল। কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে যাওয়ার মতো সামর্থ্য স্বামীর নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির পর এক টোটোচালক স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে দিতে রাজি হন। কিন্তু তপ্ত দুপুরে টোটোয় স্টেশনে পৌঁছনো মাত্রই সব শেষ! স্ত্রীর মৃতদেহ আগলে স্টেশনের গাছের তলায় বসে অঝোরে কাঁদতে লাগলেন স্বামী। বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের এই ঘটনা আবার মনে করিয়ে দিল জলপাইগুড়িতে মায়ের দেহ কাঁধে নিয়ে ছেলের হেঁটে যাওয়ার ঘটনা। সেই ঘটনার মতো ভাতারেও অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের দর হাঁকার প্রবণতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অসুস্থ স্ত্রী মেনকা (৫০)-কে নিয়ে প্রথমে ভাতার গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান স্বামী অসিত কোঁরা। প্রাথমিক চিকিৎসা করে রোগীকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু অত টাকা দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করার সামর্থ্য ছিল না অসিতের। বাধ্য হয়েই স্ত্রীকে টোটোয় চাপিয়ে ট্রেন ধরার জন্য স্টেশনে যান স্বামী। সেখানে পৌঁছনো মাত্রই মৃত্যু হয় মেনকার! এর পর স্থানীয়েরাই চাঁদা তুলে গাড়ি ভাড়া করে দেহ বর্ধমানে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

বর্ধমানের পারবিরহাটায় অসিতদের বাড়ি। তাঁরা দু’জনেই দিনমজুর। গত সোমবার কয়েক জনের সঙ্গে দম্পতিও ভাতারের কাঁচগড়িয়া গ্রামে বোরোধান কাটার কাজে যান। সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েন মেনকা। অসিত বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী দু’দিন ধরেই রোদ-গরমের কারণে অসুস্থ ছিল। ভাতার হাসপাতালে দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলাম। দু’বোতল স্যালাইন দিল। তারপর বর্ধমানে নিয়ে যেতে বলল। আমি অ্যাম্বুল্যান্স চেয়েছিলাম। হাসপাতালে বলল, অ্যাম্বুল্যান্স নেই। গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু কাছে টাকা ছিল না। তাই ট্রেন ধরার জন্য টোটোয় করে স্ত্রীকে নিয়ে আসি। ভাতার স্টেশনে এসে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করার সময় স্ত্রী মারা গেল।’’

এ বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম জানান, ‘‘মিটিংয়ে ব্যস্ত ছিলাম। বিষয়টা খোঁজ নিয়ে দেখছি। তার পরেই বলতে পারব।’’ ভাতারের বি়ডিও অরুণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখছি কী ব্যাপার।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy