বেহুলা-লখিন্দরের বিয়ে উপলক্ষে পোড়ানো হচ্ছে ধূপ। — নিজস্ব চিত্র।
রীতি মেনেই বেহুলার সঙ্গে লখিন্দরের বিয়ে হল পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে। এই বিয়ে উপলক্ষে উৎসবে মেতে উঠেছে মঙ্গলকোটের জলপাড়া ও পাশ্ববর্তী গণপুর গ্রাম। গত শনিবার থেকে শুরু হয়েছে উৎসব। আগামী শনিবার শেষ হবে এই প্রাচীন প্রথা। স্থানীয়দের দাবি, মঙ্গলকোটে প্রায় ৩০০ বছর ধরে চলছে এই আচার পালন।
মনসামঙ্গল কাব্যে বলা হয়, লখিন্দর ছিলেন চম্পাইনগরের ব্যবসায়ী চাঁদ সওদাগরের ছেলে। তাঁর সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় উজানিনগরের এক ব্যবসায়ীর কন্যা বেহুলার। বিয়ের পর বাসর রাতে নবদম্পতির ঘরে প্রবেশ করেছিল সাপ। সেই সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছিল লখিন্দরের। এর পর মৃত স্বামীর সঙ্গে ভেলায় ভেসে গিয়েছিলেন বেহুলা। বিধাতার সঙ্গে লড়াই করে ফিরিয়ে এনেছিলেন স্বামীর জীবন। মঙ্গলকোটের বাসিন্দাদের দাবি, বেহুলা আসলে সেখানকারই মেয়ে। মনসামঙ্গলকাব্যে যে উজানিনগরের কথা বলা হয়েছে, তা আসলে মঙ্গলকোট। তাই সেখানে আজও বেহুলা-লখিন্দরের বিয়ের অনুষ্ঠান পালন করা হয়। বটগাছের চারদিকে বেঁধে দেওয়া হয় হলুদ রঙের সুতো। তার চার পাশে সাত বার ঘোরানো হয় দেবী মনসার ঘট। তার পর আবার মূল মন্দিরে চলে পুজো। পুজোয় ধুনো পোড়ানো হয়। এই ধুনো পোড়ানোর দৃশ্য দেখতে ভিড় করেন বহু মানুষ। পুজোর সাত দিন আগে থেকে চলে মনসার পালাগান। বিয়ের পর অষ্টমঙ্গলায় শেষ হয় আচার। বিয়ের আচারের পাশাপাশি চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।
স্থানীয় বাসিন্দা তরুণ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ৩০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গ্রামে এই আচার পালন করা হচ্ছে। তবে কেন জলপাড়া ও গণপুরে এই অনুষ্ঠান হয় তার সঠিক কারণ জানা যায় না। মনসা মন্দিরের পুরোহিত দয়াময় পাল জানান, জালপাড়া গ্রামে বহু বছর আগে একটি পুকুর থেকে পাওয়া গিয়েছিল একটি প্রস্তরখণ্ড। সেদিন রাতে এক গ্রামবাসী স্বপ্নে দেখেন যে, ওই প্রস্তরখণ্ডে বিরাজ করছেন দেবী মনসা। তখন থেকেই ওই প্রস্তরমূর্তির পুজো হয়ে আসছে। যখন মূর্তিটি পাওয়া গিয়েছিল, তখন ছিল কার্তিক মাস। তাই এখনও কার্তিক মাসের পঞ্চমী তিথিতে এখানে পুজো হয় মনসার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy