Advertisement
০৪ জুলাই ২০২৪
TMC Leader arrested in Purba Bardhaman

জুতোপেটা করে বৃদ্ধাকে খুনের অভিযোগ, ধৃত কেতুগ্রামের তৃণমূল নেতা! কী বলছে ঘাসফুল শিবির?

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম বিশ্বজিৎ আচার্য। কেতুগ্রামের নৈহাটি গ্রামে তাঁর বাড়ি। অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁর ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

arrest

—প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪ ২২:২৭
Share: Save:

মারের চোটে এক বৃদ্ধার খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হলেন তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্য। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের সীতাহাটি পঞ্চায়েতের ঘটনা। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম বিশ্বজিৎ আচার্য। কেতুগ্রামের নৈহাটি গ্রামে তাঁর বাড়ি। সোমবার অভিযুক্তকে কাটোয়া মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁর ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার দুপুরে। সীতাহাটি পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দু’টি গ্রাম এনায়েতপুর এবং নৈহাটি। এনায়েতপুরের বাসিন্দা ইতি দাস এবং দীপক দাসের মেয়ে পূজা এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন। রবিবার দুপুরে থেকে তাঁর খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। তাঁর মা জানতে পারেন, নৈহাটি গ্রামের বাসিন্দা এক যুবকের বাড়িতে রয়েছেন মেয়ে। খবর পেয়ে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ওই বাড়িতে গেলে তাঁদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয় বলে অভিযোগ। দ্বিতীয় বার ওই বাড়িকে গেলে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বিশ্বজিৎ ইতির মা বিন্দুবালা দেবীকে জুতো খুলে মারধর করেন বলে অভিযোগ। দাস পরিবারের দাবি, ওই মারের চোটে মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধার। এ নিয়ে তারা পুলিশের দ্বারস্থ হলে রবিবার রাতে গ্রেফতার হন তৃণমূল নেতা। যদিও তাঁর দলের দাবি, ঝগড়াঝাঁটির মধ্যে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধার। মারধরের ঘটনা ঘটেনি।

ওই ঘটনা নিয়ে ইতি দেবী বলেন, ‘‘আমি, আমার স্বামী, ভাসুর, প্রতিবেশী এক মহিলা, ছোট মেয়েকে নিয়ে বড় মেয়ের খোঁজে অর্জুন দেবনাথের বাড়িতে যাই। ওখানে গিয়ে জানতে পারি, বড় মেয়ে ওই বাড়িতেই রয়েছে। কিন্তু অর্জুন এবং তার বাবা কিছুতেই আমাদের মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে দিতে চাইছিল না। তখন ওই গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য বিশ্বজিৎ আচার্য চলে আসে। সে আমাদের হুমকি দিয়ে বলে বাড়ি চলে যেতে। তিনি জানিয়ে দেন, মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হবে না।’’

ইতি আরও জানান, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোয় গ্রামের কেউ আর বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি। তাই তাঁরাও বাড়ি আসছিলেন। টোটোয় করে তাঁরা বাড়ি ফেরার সময় তাঁর মা বিন্দুবালার সঙ্গে দেখা হয়। তিনি বিকেলেই হুগলির জিরাট থেকে মেয়ের বাড়িতে আসছিলেন।

মেয়ের মুখে বিন্দুবালা সব কথা শোনার পর তাঁকে অর্জুনের বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেন। অভিযোগ, সেখানেই মারধর করেন অভিযুক্ত। ইতির কথায়, ‘‘মায়ের কথাতে আমি আবার ওই বাড়িতে যাই। তখনও বিশ্বজিৎ আচার্য আমাদের সামনে এসে গালাগালি করতে থাকে। তাঁর ওই রূপ দেখে মা বলে ফেলেন, ‘গাধা কোথাকার। তোমার বাড়ির মেয়ে হলে কী করতে?’ এ কথা বলার পরেই বিশ্বজিৎ মাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে জুতো খুলে বুকে সজোরে আঘাত করে। মা আর উঠতে পারেনি। ওখানেই মৃত্যু হয়।’’ ৬২ বছরের বৃদ্ধাকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তার পর রবিবার রাতেই বিশ্বজিৎ-সহ দু’জনের নামে থানায় এফআইআর দায়ের করেন ইতি। পুলিশ তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করলেও বাকি দুই অভিযুক্ত পলাতক। এই ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক মহলেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কেতুগ্রাম-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘শুনেছি ওই বৃদ্ধার হার্টের সমস্যা ছিল। ঝগড়াঝাঁটির পর হৃদ্‌রোগে মৃত্যু হয়েছে ওঁর। আমাদের পঞ্চায়েত সদস্যকে ফাঁসানো হয়েছে।’’ অন্য দিকে, পুলিশ জানিয়েছে অভিযোগ পেয়েই তারা পদক্ষেপ করেছে। বাকি দুই অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Katwa arrest tmc leader arrested
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE