বর্ধমান পুলিশ লাইনে। নিজস্ব চিত্র
ছেলেমেয়েরা কর্মসূত্রে বাইরে। বাড়িতে নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ বাবা-মা। প্রতিটি শহরেই এমন পরিবারের সংখ্যা কম নয়। তবু প্রাতর্ভ্রমণে যাওয়া বা বিকেলের আড্ডার সূত্রে প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে যেটুকু প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল, কোভিড- পরিস্থিতিতিতে অনেকের ক্ষেত্রেই ঘুচেছে সেটুকু। বাড়ছে অবসাদও। এমন বয়স্কদের প্রয়োজনে পাশে দাঁড়ানোর ভরসা দিচ্ছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ।
মঙ্গলবার পুলিশ দিবসে জেলা পুলিশ লাইনের মঞ্চ থেকে ‘সম্মান’ প্রকল্পের সূচনা করেন আইজি (বর্ধমান রেঞ্জ) বি এল মিনা। ছিলেন পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুকল্যাণ সিংহরায়। তাঁরা জানান, শহরের ৩৫টি ওয়ার্ড থেকে ৫০ জন একাকী বয়স্কদের নিয়ে এই প্রকল্প শুরু করা হচ্ছে। এই ৫০ জনকে একটি করে ‘সম্মান’ কার্ড দেওয়া হবে। কার্ডে থাকবে একটি সর্বক্ষণের হেল্প লাইন নম্বর। সেখানে ফোন করলেই চিকিৎসা সংক্রান্ত বা পরিষেবা সংক্রান্ত সাহায্য পাবেন তাঁরা। এ ছাড়া, নথিভুক্ত সদস্যদের প্রতি সপ্তাহে ফোন করে খবর নেওয়া হবে। মাসে এক বার প্রতি সদস্যের বাড়িতে গিয়েও খোঁজখবর করা হবে, দাবি পুলিশের।
সম্প্রতি প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা জুড়ে, বিশেষত শহরাঞ্চলে প্রবীণদের এই সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তাঁদের প্রয়োজনে এগিয়ে আসতে বলেন পুলিশকে। বর্ধমানে অবশ্য লকডাউন পর্বে ফোন নম্বর দেওয়া বা প্রয়োজনীয় সামগ্রী বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার মতো কাজ গোড়া থেকেই করছিল পুলিশ। জেলা পুলিশের দাবি, নথিভুক্ত সদস্যেরা কোনও শারীরিক সমস্যায় পড়লে দ্রুত পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে। বেশ কিছু নার্সিংহোম, চিকিৎসক, ওষুধের দোকানকেও এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে সেই কারণে। এ ছাড়া, বয়স্কদের নিরাপত্তার বিষয়টি নজরে রাখা হবে।
পুলিশ সুপারের কথায়, ‘‘বর্তমান সময়ে পেশাগত কারণে পরিবারের অনেক সদস্যই বাইরে থাকেন। ফলে, বাড়িতে একা পড়ে যান প্রবীণ মানুষেরা। তাঁরা বিভিন্ন সময়ে নানা সমস্যার মুখোমুখি হন। সেটা শারীরিক সমস্যাই হোক বা আইনগত। এই সব সমস্যা মেটানোর জন্যই এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।’’ আগামী দিনে শহরের বাইরেও এই প্রকল্প ছড়িয়ে দেওয়া হবে, আশ্বাস তাঁর। বর্ধমান নার্সিংহোম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শেখ আলহাজউদ্দিন বলেন, ‘‘বেশ কিছু নার্সিংহোম, অ্যাম্বুল্যান্সের নম্বর পুলিশকে দেওয়া আছে। যে কোনও মুহূর্তে পরিষেবার জন্য তাঁরা তৈরি।’’
বর্ধমানের প্রবীণদের একটি সংগঠনের সম্পাদক প্রবীর ভট্টাচার্যও বলেন, ‘‘কোভিড-পরিস্থিতিতে বৃদ্ধবৃদ্ধারা অনেকেই খুব একা হয়ে গিয়েছেন। অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। পুলিশের এমন মানবিক উদ্যোগ, অত্যন্ত প্রশংসনীয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy