Advertisement
E-Paper

বর্ধমানের শতাব্দীপ্রাচীন কার্জন গেট মমতার তৈরি! সায়নীর মন্তব্যে বিতর্ক

প্রায় ১২০ বছরের পুরনো বর্ধমানের কার্জনগেট। ওই তোরণের সামনে ভাষণ দেওয়ার সময়ে সায়নী দাবি করেন, ১২ বছর আগে তোরণটি ছিল না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে তা তৈরি করা হয়েছে।

Saayoni Ghosh’s comment on Bardhaman Curzon Gate sparks controversy

বর্ধমানের কার্জনগেট নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করেছেন তৃণমূলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:১৩
Share
Save

বর্ধমানের শতাব্দীপ্রাচীন কার্জনগেট নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য তৃণমূলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষের। ১২ বছর আগে নাকি ওই তোরণ ছিলই না বর্ধমানের বুকে। তোরণ তৈরি করা হয়েছে রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগেই ওই তোরণ তৈরি করা হয়েছে। বর্ধমানের যাবতীয় উন্নয়নমূলক কাজ মমতার আমলে হয়েছে বলে দাবি করেছেন সায়নী। তাঁর মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে বর্ধমানে।

বুধবার বর্ধমানের কার্জনগেট সংলগ্ন এলাকায় তৃণমূলের একটি সভায় যোগ দিয়েছিলেন যুবনেত্রী সায়নী। ১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ওই সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই সায়নী বলেন, ‘‘মানুষকে গিয়ে বোঝান, ১২ বছর আগে কী ছিল, আর ১২ বছর পরে কী হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাদের জন্য কী কী করেছেন!’’ এর পর কার্জনগেটের দিকে ইঙ্গিত করে সায়নী বলেন, “১২ বছর আগে এই গেট ছিল? ছিল এই আলো? ছিল এই রোশনাই? ছিল ঝকঝকে রাস্তা? এত হাসপাতাল ছিল? কিচ্ছু ছিল না।’’

বর্ধমানে কার্জনগেটের সামনে ভাষণ দিচ্ছেন সায়নী ঘোষ।

বর্ধমানে কার্জনগেটের সামনে ভাষণ দিচ্ছেন সায়নী ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।

সায়নীর এই মন্তব্যে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। কার্জনগেট বর্ধমান শহরের ঐতিহ্যের সঙ্গে জুড়ে আছে। ১০০ বছরের বেশি পুরনো ওই তোরণ। তৈরি হয়েছিল ইংরেজ আমলে। বর্ধমানের রাজা বিজয়চাঁদ মহতাবের উদ্যোগে ১৯০৩ সালে জিটি রোড এবং বিসি রোডের সংযোগস্থলে তোরণের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৯০৪ সালের ৪ এপ্রিল ভারতের তৎকালীন ভাইসরয় ও বড়লাট মার্কুইস জর্জ ন্যাথানিয়ল কার্জন এই গেট উদ্বোধন করেন। নির্মাণের পর তোরণের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘স্টার গেট অফ ইন্ডিয়া’। পরে লর্ড কার্জনের সফরকালে তাঁর নামে তোরণের নামকরণ করা হয়।

তোরণটি তৈরি করেছিল ‘ম্যাকিনটশ বার্ন’ কোম্পানি। বিদেশি স্থপতি এবং প্রযুক্তিবিদদের নকশায় সেজে উঠেছিল এই তোরণ। পরবর্তী সময়ে দেশ স্বাধীন হলে কার্জনগেটের নাম বদলে রাখা হয় ‘বিজয় তোরণ’। তবে লোকের মুখে মুখে এখনও ওই তোরণ কার্জনগেট নামেই বহুল প্রচলিত। ১৯৭৪ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জনসম্পদ বিভাগ এই তোরণ সংরক্ষণ করছে।

সায়নীর মন্তব্য প্রসঙ্গে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন কিউরেটর তথা ইতিহাসবিদ রঙ্গন জানা বলেন, ‘‘বর্ধমানের ইতিহাস জেনে কথা বলাই ভাল। না জেনে এ সম্পর্কে কথা বলা উচিত নয়।’’

সায়নীর মন্তব্যকে হাতিয়ার করে কোমর বেঁধে নেমেছে বিজেপি, সিপিএমং, কংগ্রেস। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা গৌরম সমাদ্দার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বর্তমানে তৃণমূলের সব স্তরের নেতারাই দলের সুপ্রিমোর চাটুকারিতার শেষ পর্যায়ে চলে গিয়েছেন। তাই ঐতিহাসিক সৌধ নিয়ে এই ধরনের মন্তব্য করতে পারছেন।’’ বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রের কটাক্ষ, ‘‘চাটুকারিতার একটা সীমা আছে। উনি বর্ধমানের ইতিহাস জানেন না। তাই এসব বলছেন।’’

Bardhaman Saayoni Ghosh TMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}