পদ্ম তুলতে ব্যস্ত চাষি, জামালপুরে। ছবি: জয়ন্ত বিশ্বাস।
পুজো একেবারে দুয়ারে চলে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী ‘ভার্চুয়ালি’ বেশ কয়েকটা পুজোর উদ্বোধনও করে দিয়েছেন। কিন্তু দুর্গাপুজোর অন্যতম উপাচার পদ্মফুলের জোগান নিয়ে চিন্তা যাচ্ছে না উদ্যোক্তা থেকে বিক্রেতাদের।
বিক্রেতাদের একাংশের দাবি, গত বছর উৎসবের মরসুমেও ১০ টাকায় দু’টি পদ্মফুল পাওয়া গিয়েছে। এখন একদম ছোট পদ্মের দামই ১০ টাকা। গড়ে ২০-২৫ টাকার নীচে ভাল মানের পদ্ম ফুল পাওয়া যাচ্ছে না। পুজো যত এগিয়ে আসবে, তত পদ্মের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে তাঁরা মনে করছেন। বিক্রেতাদের দাবি, স্থানীয় ভাবে প্রচুর পরিমাণের পদ্ম বর্ধমানের বাজারে পাওয়া যেত। এ বার স্থানীয় পদ্মের জোগান অনেকটাই কম, যা আসছে তারও গুণমান ভাল নয়। আবার কলকাতার বাজার থেকে মেদিনীপুর বা দক্ষিণ ২৪ পরগণার পদ্মফুল কিনে এনে বিক্রি করাটাও ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হয়ে যাচ্ছে। কারণ কলকাতার বাজারেও পদ্মের দাম খুবই ওঠানামা করছে।
পদ্ম চাষিদের দাবি, চৈত্র থেকে পুকুরে পদ্ম ফুটতে শুরু করে। এ বার প্রথমে জলের অভাবে গাছে ফুল ধরতে দেরি হয়েছিল। আবার ফুল তোলার সময়ে নিম্নচাপের বৃষ্টির জলে পুকুর ভরে গিয়েছে। ফলে, পদ্ম গাছ ডুবে গিয়েছিল। এখন আবহাওয়ার উন্নতি ঘটলেও উৎপাদনের ঘাটতি মেটানো যাচ্ছে না। চাষিদের দাবি, নিম্নচাপের আগে হাজার-বারশো পদ্মে পুকুর ভরে ছিল। বৃষ্টির পরে সেই সব পুকুরেই দেড়শো থেকে দু’শোটি পদ্ম ফুটেছে। শিশির ও কুয়াশা যত বাড়বে, পদ্মের উৎপাদন তত কমবে, দাবি তাঁদের।
পদ্ম চাষি সন্তু দত্ত, অমিত মল্লিকদের দাবি, “বিশ্বকর্মা থেকে কালী পুজো পর্যন্ত পদ্মের চাহিদা বেশি থাকে। এ বছর বিশ্বকর্মা পুজোর কয়েক দিন পর থেকে প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরে টানা বৃষ্টিপাতের জেরে পদ্ম চাষে ক্ষতি হয়েছে। নষ্ট হয়ে গিয়েছে পদ্মের কুঁড়ি ও পাতা।’’ তাঁরা মনে করেন, কখনও জোগান বেশি আবার কখনও জোগান কমের কারণে পুজোর মুখে পদ্ম ফুল পাওয়া নিয়ে চিন্তার হয়ে দাঁড়ায়। পদ্ম রাখার মতো হিমঘর থাকলে এই দুশ্চিন্তা হবে না। চাষিরাও পদ্ম ফুটিয়ে পুজোর সময় হাসিমুখে থাকতে পারবেন।
ভোর হতেই সাইকেলে টিউবের ভেলা বেঁধে প্রায় তিন কিলোমিটার পথ পেরিয়ে দামোদরের সেচখালে পদ্ম তুলতে যান বর্ধমান ২ ব্লকের অন্নদাপল্লির পদ্ম চাষি দিলীপ মণ্ডল। কখনও সাপ, জলজ কীটপতঙ্গের ভয়, আবার মহালয়া থেকে কালীপুজো পর্যন্ত পদ্ম পাহারা দিতে হয়। তবে এত ঝুঁকি নিয়েও এ বার লাভের মুখ দেখার ভরসা করতে পারছেন না তিনি।
জেলা পরিষদের দাবি, পূর্ব বর্ধমানে আউশগ্রাম, ভাতার, গলসি, জামালপুর, কাটোয়া-সহ বেশি কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে পদ্ম চাষ হয়। হিমঘর তৈরি নিয়ে চাষি বা অন্য কোনও সংগঠন দাবি করেনি, সে জন্য আলোচনাও হয়নি। জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি গার্গী নাহা বলেন, “কৃষি, সেচ ও সমবায় সমিতিতে এ নিয়ে আলোচনা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy