ডিভিসির তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ‘দুর্গাপুর থার্মাল পাওয়ার স্টেশনের’ (ডিটিপিএস) নতুন ইউনিট স্থাপনের কাজে ‘বাধা’ দিচ্ছে বহিরাগতেরা। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করতে হবে। এই দাবিতে বৃহস্পতিবার ডিটিপিএস ফাঁড়িতে বিক্ষোভ দেখান ডিটিপিএস সংলগ্ন ছ’টি গ্রামের সম্মিলিত ‘ভিলেজ কো-অর্ডিনেশন কমিটি’র প্রতিনিধিরা। নতুন ইউনিটের দাবিতে স্লোগানও দেন। পরে ফাঁড়িতে স্মারকলিপি দেন। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।
মায়াবাজারে ডিটিপিএসে প্রায় আট হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ৮০০ মেগাওয়াটের একটি ‘সুপারক্রিটিক্যাল’ ইউনিট স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ডিভিসি। প্রয়োজনীয় জমির জন্য দখলদারদের এলাকা ফাঁকা করার নোটিস দেওয়া হয়েছে। সেই সব বাসিন্দারা পুনর্বাসনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। বুধবার কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ অভিযানে গেলে ‘বাধা’ দেয় বস্তিবাসীদের কমিটি। বস্তিবাসীরা উঠে যাওয়ার জন্য ১৫ দিন সময় চান। পুলিশ ডিটিপিএস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পরে জানিয়ে দেয়, ১ এপ্রিলের মধ্যে সবাইকে উঠে যেতে হবে। তার পরে ফের উচ্ছেদ অভিযান চালাবেন ডিটিপিএস কর্তৃপক্ষ। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় ভিলেজ কো-অর্ডিনেশন কমিটি। অভিযোগ, ওই সময় কয়েকজন বস্তিবাসীদের নেতা অরিন্দম নায়েকের উপরে চড়াও হন। যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেয় গ্রামবাসীর কমিটি।
ভিলেজ কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্যদের বক্তব্য়, পুনর্বাসনের আন্দোলনের জেরে কারখানা যেন অন্যত্র চলে না যায়, তা সকলকে দেখতে হবে। কারণ, লগ্নি এলে এলাকার আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির উন্নতি হবে। তাঁদের দাবি, অধিকাংশ বস্তিবাসী উঠে গিয়েছেন। বাকিরাও ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছেন। কারণ, সবাই শিল্প চান। কিন্তু বাইরে থেকে কেউ কেউ এসে কয়েক জনকে ভুল বুঝিয়ে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছেন। বার বার সীমানা পাঁচিল নির্মাণে বাধা দিচ্ছেন। কমিটির সহ-সভাপতি, আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “গ্রামবাসী, বস্তিবাসী সবাই ডিটিপিএসের সম্প্রসারণ চাইছেন। সবাই জানেন, শিল্প হলে কর্মসংস্থান হবে, রোজগার বাড়বে। কিন্তু জনাকয়েক বহিরাগত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।” বাসিন্দা অশোক দত্ত বলেন, “আমাদের পূর্বপুরুষ জমি দিয়েছেন। আমরা চাই, নতুন ইউনিট হোক। কয়েকজন বাইরে থেকে এসে উস্কানি দিয়ে, তা বানচাল করার চেষ্টা করলে আমরা ছেড়ে কথা বলব না।”
বহিরাগতদের উস্কানির অভিযোগ উড়িয়ে আন্দোলনকারীদের তরফে চুমকি অঙ্কুর বলেন, “কয়েক দশক ধরে বসবাস করছেন সবাই। জোর করে তাঁদের তুলে দেওয়া হচ্ছে।”
ডিটিপিএসের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার অমিতকুমার মোদী বলেন, “বস্তিবাসী সময় চেয়েছিলেন। পুলিশ-প্রশাসনের মধ্যস্থতায় ঠিক হয়েছে, ১ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দেওয়া হবে। তার মধ্যে জমি খালি করে দিতে হবে।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)