তিরাট গ্রামে চলছে পুজো। —নিজস্ব চিত্র।
হিন্দুদের গ্রাম। রোগ-ব্যাধি থেকে তাকে রক্ষা করতে এক মুসলিম হাকিম পরিবারের সদস্য গ্রামের চার দিকে আজান পড়ে চারটি পেরেক পুুঁতে দেন। তার পর গ্রামের মানুষ তাঁকে পুরোহিত জ্ঞানে কিছু দক্ষিণা দিয়ে সম্মানিত করেন। রানিগঞ্জের তিরাট গ্রামে সম্প্রীতির এই ছবি প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো বলে জানান পঞ্চায়েত প্রধান শিবদাস চট্টোপাধ্যায়। আজও চলে আসছে এই প্রথা।
জনশ্রুতি, প্রায় দেড়শো বছর আগে গ্রামে কলেরার প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। সে সময় বীরভূমের ইলামবাজারের এক হাকিম কলেরা নিরাময়ে সাহায্য করেছিলেন। তার পর থেকে প্রতি বছর চৈত্র মাসের এক মঙ্গলবারে ওই হাকিমের পরিবারের এক জন সদস্য গ্রামে এসে প্রথমে চার দিকে আজান পড়েন। পরে আজান পড়া জায়গায় একটি করে পেরেক পুঁতে দেন। গ্রামবাসীর বিশ্বাস এতে গ্রাম সুরক্ষিত থাকে। কৃতজ্ঞতা থেকে গ্রামবাসীরা যিনি আজান পড়েন তাঁকে চাল, ডাল, নগদে দক্ষিণা দেন।
গ্রামের সীমানায় একটি গাছ তলায় কয়েকটি মাটির ঘোড়া রেখে গ্রামবাসীরা সেগুলিকে মঙ্গলচণ্ডী, শীতলা ও চিন্তামণি হিসেবে পুজো করেন। কয়েক বছর আগে সেই গাছ তলায় কংক্রিটের মন্দির হয়েছে। এই গাছতলায় বসেই আজান কর্তাকে সবাই দক্ষিণা দেন। গ্রামের বাসিন্দা অনল মুখোপাধ্যায়, মৃণাল বন্দ্যোপাধ্যায়, অসিত মালরা জানান, যে মঙ্গলবার ওই ব্যক্তি আজান পড়তে আসেন, গ্রামে সমস্ত পরিবার নিরামিষ খায়। মহিলারা মঙ্গলচণ্ডীর পুজো করেন।
ওই হাকিম পরিবারের সদস্য, বর্তমানে আজান পড়েন শেখ রাজিব বলেন, “আমরা বংশ পরম্পরায় এ কাজ করে আসছি। বাবা, দাদুদের দেখেছি। আমিও করি। গ্রামের মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে এই প্রথা মানেন। তাঁদের আস্থাতেই ঈশ্বর-আল্লা সকলই এক হয়ে যায়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy