ডিসিএল কলোনিতে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি। ছবি: বিশ্বনাথ মশান।
দুর্গাপুজোর জন্য উদ্যোক্তাদের এ বছর ৮৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বছরের থেকে অনুদান বাড়ানো হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। তবে কিছু পুজো কমিটির দাবি, এই অনুদানটুকুই তাদের ভরসা।
মুখ্যমন্ত্রী পরের বছর আরও ১৫ হাজার টাকা অনুদান বাড়ানোর আগাম প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেই সঙ্গে বিদ্যুতের বিলেও বাড়তি ছাড়ের কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় খুশি পুজো উদ্যোক্তাদের অনেকেই। দুর্গাপুরের অন্যতম বড় পুজোর উদ্যোক্তা বিধাননগরের ক্লাব স্যান্টোসের তরফে হৃদয় সাঁই বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর এই অনুদান যে কোনও পুজো কমিটির কাছেই একটা সম্মানের বিষয়। শুধু আর্থিক মূল্যে এর বিচার হয় না।”
মুখ্যমন্ত্রীর অনুদানের উপরে ভরসা করেই তাঁদের পুজো হচ্ছে, দাবি ডিসিএল আদিবেদী দুর্গোৎসব কমিটির। উদ্যোক্তাদের তরফে বিপত্তারণ মণ্ডল জানান, আগে কারখানা কর্তৃপক্ষ অনুদান দিতেন। কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অনুদান মেলে না। কারখানা বন্ধ হওয়ায় কর্মীরা অধিকাংশই কলোনি ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘চাঁদা তুলে পুজো করা সম্ভব নয়। কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যে ক’জন আছেন তাঁদের পক্ষে বেশি চাঁদা দেওয়া সম্ভব নয়। মুখ্যমন্ত্রী অনুদান না দিলে আমাদের পুজো বন্ধ হয়ে যাবে। পরের বছর অনুদান বাড়বেন বলেছেন। আমরা খুশি।’’ একই কথা জানিয়েছেন অগ্রগামী দুর্গাপুজো কমিটির তরফে রণজিৎ রায়।
দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের প্রশ্ন, ‘‘রাজ্যে ক’টা পুজো আছে যে ওই অনুদানের উপরে ভরসা করে থাকে? আসল লক্ষ্য, ক্লাবগুলিকে খুশি করে হাতে রাখা। ভোটের সময়ে কাজে লাগানো। আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, আগামী বছর কত টাকা বাড়ানো হবে। রাজ্যে শিল্প নেই, কর্মসংস্থান নেই। সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে আছেন। সে দিকে কোনও নজর নেই সরকারের।” কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীর দাবি, “মনে হচ্ছে যেন পরিবারের টাকা, দানছত্রের মতো বিলানো হচ্ছে। আগে ক্লাবগুলিকে টাকা দেওয়া হয়েছে। পুজোর নাম করে ফের টাকা দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুতে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের মানুষের স্থায়ী উন্নয়নে কোনও নজর নেই। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।”
তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘সব বিষয়ে রাজনীতি না করে ভাল কাজকে স্বাগত জানানো উচিত বিরোধীদের। রাজ্যের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত। পর পর ভোটে তা প্রমাণ করে দিচ্ছেন তাঁরা। তার পরেও চেতনা নেই বিরোধীদের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy