Advertisement
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
arrest

ভয় দেখিয়ে তোলাবাজি, গ্রেফতার কাটোয়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের ভাগ্নে! অস্বস্তিতে তৃণমূল শিবির

কাটোয়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের ভাগ্নে গ্রেফতারের ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ মিলেছে।

—প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:০১
Share: Save:

ভয় দেখিয়ে তোলাবাজির অভিযোগে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান লখিন্দর মণ্ডলের এক আত্মীয়কে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম অমিতকুমার মণ্ডল ওরফে বাপ্পা। কাটোয়া পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে সার্কাস ময়দানে ধৃতের বাড়ি। সম্পর্কে তিনি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের ভাগ্নে। তাঁর বিরুদ্ধে ইমাদুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী শুক্রবার কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

ইমাদুল জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার একটি অচেনা নম্বর থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে। ‘কলার আইডি’-তে ওঠে ‘সাদ্দাম শেখ’-এর নাম। ব্যবসায়ীর অভিযোগ, তাঁর কাছে ৫০০০ টাকা দাবি করা হয়। না-দিলে খুন করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। বলা হয় ওই টাকা যেন ‘বাপ্পার হাতে’ দিয়ে আসা হয়। তার পর গত বৃহস্পতিবার আরও একটি অচেনা নম্বর থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে। তখন সেই নম্বরটির পরিচয় কলার আইডি-তে দেখানো হয়, ‘বাপ্পা, কাটোয়া রবীন্দ্রপল্লী’। ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘ওই নম্বর থেকে আমাকে বলা হয় সাদ্দামের সঙ্গে যা কথা হয়েছে, সেই টাকাটা নিয়ে আসতে। বাপ্পা নামে ওই যুবক তাঁর মামার পিঁয়াজের আড়তের পাশে একটি রেস্টুরেন্টের সামনে আমায় রাস্তায় আসতে বলা হয়। শেষ পর্যন্ত বাপ্পার হাতে ৩০০০ টাকা দিয়ে আসেন ইমাদুল। তাঁর আরও অভিযোগ, ওই টাকা নেওয়ার পর বাপ্পা তাকে বলেন, ‘জঙ্গল শেখ ও সাদ্দাম শেখ জেল থেকে বেরিয়ে আসবে। তখন আরও টাকা দিতে হবে।’ এই কথা শুনে ভয় পেয়ে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন।

ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নামে। ইমাদুলের কাছে যে দুটি নম্বর থেকে ফোন এসেছিল সেই দুটি নম্বর খতিয়ে দেখা হয়। পুলিশ জানতে পারে প্রথম যে নম্বরটি থেকে ইমাদুলকে ফোন করে টাকা চাওয়া হয়েছিল, তার ‘কলার’ ছিলেন বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের আশপাশে। বর্তমানে জঙ্গল শেখের ছেলে সাদ্দাম বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি। পুলিশ সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ় পরীক্ষা করে বাপ্পার সঙ্গে অভিযোগকারীর সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার প্রমাণও পায়। তার পরেই বাপ্পাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার ধৃতকে কাটোয়া আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে নয় দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। জেলবন্দি সাদ্দামকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিতে আদালতের কাছে আবেদন করেছে পুলিশ।

কাটোয়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের ভাগ্নে গ্রেফতারের ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুনেছি, তোলাবাজি করার অভিযোগে এক জনকে ধরা হয়েছে। কাটোয়ায় একাধিক ব্যক্তির কাছে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করার ঘটনা আগেও আমার কানে এসেছে। তবে অনেকেই ভয়ে অভিযোগ জানাতে পারেননি। এক জন সাহস করে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। আইন আইনের পথেই চলবে।’’ ভাগ্নের গ্রেফতারির পর লখিন্দর বলেন, ‘‘ওকে কেন গ্রেফতার করা হল, ও কী করেছে, সে সব কিছুই জানি না। আমি আমার ব্যবসা এবং পুরসভার কাজ নিয়েই থাকি। কে কী করছে, অত খবর রাখি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

arrest Katwa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE