ফাইল চিত্র।
নথিভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে পশ্চিম বর্ধমানের মোট ১৯,২৭৩টি পরিবার শনিবার রাত পর্যন্ত একশো দিনের প্রকল্পের জব-কার্ড পায়নি। প্রকল্পের পোর্টাল থেকে এই তথ্য জানা যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। যদিও, কেন এখনও জব-কার্ড মেলেনি, সে বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে, জেলায় একশো দিনের প্রকল্প আধিকারিক রাজীব পাণ্ডে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।পাশাপাশি, তৃণমূলের দাবি, কেন্দ্র একশো দিনের প্রকল্পের টাকাদিক আগে।
ওই পোর্টাল থেকে জানা যাচ্ছে, জেলার আটটি ব্লকের মধ্যে সব থেকে করুণ অবস্থা পাণ্ডবেশ্বরে। সেখানে ৮,১৯৮টি পরিবার জব-কার্ড পায়নি বলে পোর্টালে দেখা যাচ্ছে। এর পরে রয়েছে যথাক্রমে বারাবনি ও জামুড়িয়া ব্লক। সেখানে যথাক্রমে ২,৭৪৯টি এবং ২,৫৯৭টি পরিবারজব-কার্ড পায়নি।
সমস্যার কথা জানাচ্ছেন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারাও। পাণ্ডবেশ্বরের নবগ্রাম পঞ্চায়েতের নবগ্রামের বাসিন্দা সমর বাগদি, শেখ রব, কেন্দ্রা পঞ্চায়েতের সূর্য রুইদাস, চাঁদ রুইদাসদের অভিযোগ, তাঁরা বহু বার সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের কাছে লিখিত আবেদন করেও জব-কার্ড পাননি। তাঁদের কথায়, “এখন দিনমজুরি করে সংসার চালাতে হয়।সারা বছর কাজ পাওয়া যায় না। ফলে, একশো দিনের কাজ পেলে, অনেকটাই সুবিধা হত।”
যদিও, তৃণমূল পরিচালিত নবগ্রামের প্রধান সনৎ সোমণ্ডল, কেন্দ্রার প্রধান আলপনা সূত্রধরদের দাবি, পরিবারের এক জনের নামেই জব-কার্ড তৈরি করা হয়।সেই কার্ডে পরিবারের অন্য সদস্যদের নাম রাখা যায়। এর পরে পরিবারের সদস্যেরা কোনও কারণে ভাগ হয়ে গেলে তাঁদের পৃথক ভাবে বসবাসের শংসাপত্র জমা দিতে হয়। তা না হলে প্রক্রিয়াগত সমস্যা হয়। উক্ত আবেদনকারীদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই এমনটা হয়েছে বলে দাবি তাঁদের। দুই প্রধানেরই দাবি, অনেক সময় নথিতে ভুল থাকলেও প্রক্রিয়াগত সমস্যা হয়। তবে সূর্য ও চাঁদ পঞ্চায়েতের এই ‘ব্যাখ্যা’ মানছেন না। তাঁদের দাবি, পরিবারের কারও নামেই জব-কার্ড নেই। আবেদনের নথিপত্রে কোথাও কিছু ভুল ছিল কি না, তা-ও সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত থেকেজানানো হয়নি।
জব-কার্ড পাওয়ার নিয়মটি কী? জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রথমত, পঞ্চায়েত কার্যালয়ে নির্দিষ্ট আবেদনপত্র জমা দিতে হয়। সঙ্গে দিতে হয় ভোটার কার্ড, আধার কার্ডের ফটোকপি এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর। দ্বিতীয়ত, পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ আবেদনপত্র খতিয়ে দেখে যোগ্য মনে করলে, তাতে সিলমোহর দিয়ে নির্দিষ্ট পোর্টালে আবেদনকারীর নাম নথিভুক্ত করেন। তৃতীয়ত, এর পরের ধাপেই পঞ্চায়েত সংশ্লিষ্ট উপভোক্তাকে জব-কার্ড দেয়।
পাশাপাশি, উপভোক্তাকে জব-কার্ড দেওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতকে তা নির্দিষ্ট পোর্টালে জানাতে হয়। জানানো না হলে, পোর্টালে জব-কার্ড তৈরির পরেও উপভোক্তাকে তা দেওয়া হয়নি বলে দেখানো হয়। এ ছাড়া নাম নথিভুক্তির পরে জব-কার্ড না দেওয়া হলেও একই কথা লেখা থাকবে।
এ দিকে, এই তথ্যের বিষয়টি সামনে আসার পরেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা। প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান তথা সিপিএম নেতা কাঞ্চন মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “পরিবার ভাগ হলে তা দেখানোর দায়িত্ব পঞ্চায়েতেরই। তা করা হয় না বলে অনেকে জব-কার্ড পান না। দলীয় ভাবে আমরা সমীক্ষা করে দেখেছি, বহু মানুষই যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও জব-কার্ড পাননি।” বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দিলীপ দে বলেন, “গরিব মানুষ জব-কার্ড পাচ্ছেন না, এটা লজ্জার। আসলে তৃণমূলের সবটাই হয় বেছে-বেছে। তাই যাঁরা যোগ্য, তাঁরা প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”তবে বিরোধীদের অভিযোগে আমল না দিয়ে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, “কেন্দ্র আগে একশো দিনের প্রকল্পের টাকা দিক, তার পরে বিজেপি অন্য কথা বলবে। কোথাও কোনও সমস্যা হলে, প্রশাসন তামিটিয়ে ফেলবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy