দাঁতনকাঠিতলার মসজিদের গেটে নোটিস। নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে ইদগাহ বা ময়দানে নমাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলার প্রায় সমস্ত ইদ কমিটি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাড়িতেই খুশির ইদ পালন করার পরামর্শ দিয়েছেন ইমামেরা।
‘জামিয়াতুল আয়মা অল উলেমা’র জেলা সম্পাদক হাফেজ সামশের আলম বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি নেমে নিজের ঘরে পবিত্র ইদ-উল-ফিতরের নমাজ পড়ার জন্য জেলার মানুষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। কোথাও জমায়েত করা যাবে না।’’
বর্ধমান শহরের কেন্দ্রীয় ইদ কমিটি প্রতি বছরই টাউনহল ময়দানে নমাজের আয়োজন করে। হাজার দশেক মানুষের জমায়েত হয় সেখানে। ওই কমিটির সম্পাদক নূর আলম বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মেনে এ বার টাউনহলে ইদের নমাজ পড়ার আয়োজন করছি না। কোনও ভাবেই সেখানে জমায়েত হবে না।’’ টাউনহল ময়দান ছাড়াও বর্ধমান শহর ও তার আশপাশে মসজিদ ও ইদগাহ মিলিয়ে ৫৭টি স্থানে নমাজ পড়া হয়। এ বার সবক’টিই বন্ধ, জানিয়েছেন বর্ধমান শহর ইদ সমন্বয় কমিটির সম্পাদক শেখ মনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘শহরের ১১২টি মসজিদের ইমামেরা মিলে একত্রে নমাজ না পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাটা জরুরি। বাড়িতেই প্রার্থনা করবেন সকলে।’’ জেলার ইমাম ও মতোয়ালিদের দাবি, মানুষ এতটাই আতঙ্কিত যে এক সঙ্গে ‘তারাবি’(রমজান মাসে রাতের প্রার্থনা)নমাজ পড়েননি। ইদেও জমায়েত হবে না। যেখানে মসজিদে নমাজ পড়তেই হবে, সেখানে চাপ কমাতে তিন চার ভাগে নমাজ পড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সকাল ৬টাতেও নমাজ পড়তে চায়ছেন বহু মসজিদ কমিটি। বেঙ্গল ইমাম’স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চিফ মেন্টর ওসমান গনি বলেন, ‘‘এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি কখনও দেখিনি। সবাই রোগ ছড়ানোর ভয় পাচ্ছেন। আমরাও চাইছি সকলে বাড়িতেই নমাজ পড়ুন।’’
কালনার প্রাচীন দাঁতনকাঠিতলার মসজিদের সামনেও আঞ্জুমান সোসাইটির তরফে নোটিস ঝুলিয়ে জমায়েত করতে নিষেধ করা হয়েছে। ওই কমিটির দাবি, ১৯৩৮ সালে পাঁচ জন ধর্মপ্রাণ মানুষ নমাজ শুরু করেছিলেন এখানে। বর্তমানে প্রতি ইদেই হাজার হাজার মানুষের জমায়েত হয়। রবিবার গিয়ে দেখা যায়, রঙের প্রলেপ পড়েনি মসজিদে। আঞ্জুমান কমিটির সভাপতি শাহনওয়াজউদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘‘অন্য বার চার-পাঁচ হাজার মানুষ এলেও এ বার নমাজ পড়বেন ৪০-৫০ জন। তাঁরাও মাল্ক পড়ে, নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে বসবেন।’’ মসজিদ চত্বরে থাকা আব্দুল ওহাব শেখ জানান, ফাঁকা জায়গায় নমাজ পড়ে হবে। ভিড় এড়াতে সকাল ৬টার মধ্যেই অনুষ্ঠান শেষ করা হবে।
গলসির খেঁতুড়া গ্রামের ইদগাহে সাতটি গ্রামের মানুষ নমাজ পড়েন। এ বারও ইদগাহ সাফাই করা হয়েছিল। কিন্তু এলাকার লোকজনই একত্রে জমায়েত করতে উৎসাহী নন। জেলার কোনও বড় ইদগাহ সাজানো বা তোরণ নির্মাণও হয়নি এ বার।
স্কুল শিক্ষক ফিরোজ আলি কাঞ্চন, আইনজীবী জিয়াউল হকরা বলেন, “ইদ মানে উৎসব। কিন্তু সংক্রমণের ভয়ে মানুষ বার হতে চাইছেন না। এ বার সুস্থ থেকে ঘরেই উৎসব হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy