বাড়িতে নিতাই বাউড়ি। নিজস্ব চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের হাথরস থেকে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের দূরত্ব প্রায় ১,১৫২ কিলোমিটার। কিন্তু সেই দূরত্ব ঘুচিয়ে দিয়েছেন হাথরসের নির্যাতিতা তরুণী। তাঁর কথা উঠলেই ক্ষোভে-দুঃখে বার্নপুরের নরসিংহবাঁধের বাসিন্দা বছর ৭৫-এর নিতাই বাউড়ি বলে ওঠেন, ‘‘কোনও দিন কথা হয়নি ওর সঙ্গে। কিন্তু ও তো আমার নাতনিরই মতো। নাতনির এই পরিণতির জন্য যারা দায়ী, তাদের কড়া শাস্তি চাইছি।’’
‘নাতনি’? প্রশ্ন শুনে নিতাইবাবু জানান, হাথরসের তরুণীটির ঠাকুরদা ও তিনি আসানসোল মহকুমারই একটি রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানায় কাজ করতেন। তরুণীর ঠাকুরদা দীর্ঘদিন সপরিবার বাস করেছেন শহরে কারখানার আবাসনে। তরুণীর বাবার জন্ম, দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা এখানেই। নিতাইবাবু স্মৃতি খুঁড়ে চলে যান ৮০-র দশকে: ‘‘মেয়েটির ঠাকুরদা আর আমি পাশাপাশি কাজ করেছি। এক সঙ্গে টিফিন খাওয়া, সুখ-দুঃখের গল্প, কত স্মৃতি রয়েছে। ভাবতেই পারছি না, ওঁর পরিবারে এই ঘটনা।’’
১৯৯৯-এ তরুণীর ঠাকুরদা কারখানা থেকে স্বেচ্ছাবসর নিয়ে সপরিবার হাথরসে ফিরে যান। তার পরেও নিতাইবাবুর সঙ্গে নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ ছিল তরুণীর ঠাকুরদার। ফোন-সূত্রেই তিনি ছেলের বিয়ে, নাতনিদের জন্ম-সহ পরিবারের নানা আনন্দ-সংবাদ ভাগ করে নিয়েছিলেন নিতাইবাবুর সঙ্গে। এমনকি, তরুণীর ঠাকুরদার মৃত্যুর পরেও পরিবারটির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল বলে জানান নিতাইবাবু।
নিতাইবাবু জানান, দিন কয়েক ধরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে হাথরস নামটা শোনার পরে থেকেই মনটা কেমন যেন ‘কু’ ডাকছিল। রবিবার সকালে তরুণীর এক দূর সম্পর্কের জেঠুর থেকে বিষয়টি জানতে পারেন। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মী, তরুণীর ওই আত্মীয়ও এখন থাকেন আসানসোলে। তিনিও বলেন, ‘‘শনিবার রাতে হাথরসে গ্রামের বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছি। দোষীদের কড়া শাস্তি চাইছি।’’
হাথরস-কাণ্ডে উত্তরপ্রদেশ সরকারের ভূমিকা নিয়ে অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি নিতাইবাবু ও তরুণীর সম্পর্কিত জেঠু। তবে দু’জনেরই বক্তব্য, ‘‘এত মানুষ পথে নেমেছেন। দেশে এমন নারকীয় ঘটনা এ বার অন্তত শেষ হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy