আসানসোলে সরকারি জমি উদ্ধার করা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র Stock Photographer
১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে আসানসোলের গাড়ুই গ্রামের কাছে আড়াই কাঠা জমি কেনার জন্য জমি কেনা-বেচার বেসরকারি একটি সংস্থাকে সওয়া দু’লক্ষ টাকা অগ্রিম দিয়েছিলেন। কিন্তু জমি মেলেনি। এই মর্মে আসানসোল উত্তর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন পরিতোষ নন্দী নামে এক জন। পরে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট সংস্থাটি সরকারি খাসজমি দখল করে তা প্লট হিসেবে বিক্রির চেষ্টা করেছিল। জেলা প্রশাসন জমি পুনরুদ্ধার করে। অভিযোগ, তার পরে আর সংস্থাটির কাউকে এলাকায় দেখা যায়নি। শুধু পরিতোষ নন, আসানসোলের নানা প্রান্তে অনেকেই জমি-প্রতারণার অভিযোগ করেছেন।
পরিতোষ বলেন, “চাকরি জীবন থেকে অবসর নেওয়ার পরে সঞ্চয়ের অর্থ খরচ করে এক চিলতে বাড়ি করার স্বপ্ন দেখেছিলাম। ভূমি-মাফিয়াদের প্রতারণায় সে টাকা জলে গিয়েছে।” বিএলএলআরও থেকে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর, দফতরের অতিরিক্ত জেলাশাসকের কাছেও প্রতারিতেরা নানা অভিযোগ করছেন বলে জানা গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) সন্দীপ টুডু বলেন, “আমিও এমন বহু অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করার আশ্বাস দিয়ে সব দিক ভাল করে খতিয়ে দেখে জমি কেনারপরামর্শ দিয়েছি।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল মহকুমা জুড়েই এখন প্লট করা জমি কেনাবেচার কারবার শুরু হয়েছে। সাধারণ ভাবে, কিছু সংস্থা এক লপ্তে কয়েক একর জমি ঘিরে নিয়ে ছোট-ছোট টাউনশিপের আদলে জমি প্লট করে সেগুলি বিক্রি করছে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে ওই কারবারিদের একাংশ সরকারি খাসজমি দখল করে বিক্রি করে দিচ্ছেন। সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে সরকারি খাসজমি দখল করার অভিযোগে সাতটি এমন সংস্থাকে নোটিসও দেয় জেলা প্রশাসন। জমি উদ্ধারও শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, জমি কেনার আগে ক্রেতাদের ভূমি দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিচ্ছেন আধিকারিকেরা।
কিন্তু এ ধরনের কারবার চলছে বা হয়েছে কী ভাবে? সিপিএম নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায় থেকে বিজেপি নেতা লক্ষ্মণ ঘোড়ুইদের অভিযোগ, “জমি হাঙরেরা পুলিশ, প্রশাসন, পুরসভার নাকের ডগাতেই সক্রিয়। সব জেনেও চুপ করে বসেছিল প্রশাসন। এখন চাপে পড়ে ‘অভিযান’দেখাতে হচ্ছে।”
অভিযোগ মানেননি আসানসোল পুরসভার মেয়র বিধান উপাধ্যায়। তাঁর সংযোজন: “পুর-এলাকায় প্লট করা জমি কেনাবেচার কারবার করতে হলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে আগাম অনুমতি নিতে হবে, এমন বিধি চালু করা হচ্ছে।” তিনি জানান, কোন এলাকায় এক লপ্তে কতটা জমি ঘেরা হচ্ছে, কতগুলি প্লট করে বিক্রির পরিকল্পনা হয়েছে, জমির দাগ ও খতিয়ান নম্বর, মৌজা ও যাবতীয় বিবরণ-সহ একটি মানচিত্র পুরসভায় জমা করতে হবে। পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা সেটি ভাল ভাবে পরীক্ষা করে দেখবেন, সেটি সরকারি খাস জমি দখল করে করা হয়েছে কি না। এর পরে পুরসভা নো-অবজেকশান শংসাপত্র দেবে। বিনিময়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থা পুরসভার কাছে একটি নির্দিষ্ট রাজস্ব জমাদিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy