E-Paper
BB_2025_Lead Zero Banner

তদন্তের মধ্যেও দেদার কয়লা চুরির নালিশ

রাজ্যের শাসক দলের নেতা-কর্মীরা জড়িত বলেই এই কারবার বন্ধে প্রশাসন সদর্থক ভূমিকা নিতে পারছে না, দাবি তাদের।

অবৈধ খাদান ভরাট।

অবৈধ খাদান ভরাট। নিজস্ব চিত্র।

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৭
Share
Save

সিবিআই কয়লা চুরির তদন্ত শেষ করার পরে আসানসোলের সিবিআই আদালতে চার্জ গঠন হয়েছে। এ বার বিচার প্রক্রিয়ার পালা। কিন্তু কয়লা চুরিতে কতটা লাগাম পরানো যাচ্ছে, প্রশ্ন তুলছেন খনি অঞ্চলের বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ। বিরোধীদের অভিযোগ, কয়েক বছর ধরে চলা সিবিআই তদন্তের মাঝেও আসানসোল-রানিগঞ্জ খনি এলাকায় রমরমিয়ে চলেছে কয়লা চুরি। অবৈধ কয়লা বোঝাই ট্রাক পুলিশ এবং সিআইএসএফের হাতে ধরা পড়ার ঘটনা ঘটছে বার বারই। ফলে, কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তের পরেও বেআইনি এই কারবার বন্ধ হয়নি, দাবি তাদের।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৮ সালে কয়লা চুরি ও পাচারের তদন্ত শুরু করে সিবিআই। প্রথম অভিযোগ দায়ের হয় ২০২০ সালে। কিন্তু তার পরেও যে কয়লা চুরি রোখা যায়নি, সেই অভিযোগ শোনা গিয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেই। তাঁর অভিযোগ, সিআইএসএফের সঙ্গে মিলে নিচুতলার পুলিশকর্মীদের একাংশ কয়লা চুরিতে জড়িত। রাজ্য পুলিশের শীর্ষ স্তরকে এ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগের পরে সুর চড়িয়েছে বিরোধীরাও। তাদের দাবি, কয়লা চুরি কাণ্ডে তৃণমূলেরই একাংশ জড়িত। সিবিআইয়ের অভিযুক্তের তালিকায় নাম রয়েছে যুব তৃণমূল নেতা বিনয় মিশ্রের। রাজ্যের শাসক দলের নেতা-কর্মীরা জড়িত বলেই এই কারবার বন্ধে প্রশাসন সদর্থক ভূমিকা নিতে পারছে না,
দাবি তাদের। বিরোধীদের অভিযোগ, ৩০ নভেম্বর রাতে রানিগঞ্জের জেকে নগরে ইসিএলের কেন্দ্রীয় সাইডিংয়ে অবৈধ কয়লা বোঝাই একটি ট্রাক আটক করে সিআইএসএফ। সেটিতে সাইডিং থেকে প্রায় ৫০ টন কয়লা চুরি করে বোঝাই করা হয়েছিল
বলে অভিযোগ। তাতে জড়িত
হিসেবে ৮ জনের নামে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়। তাঁদের মধ্যে নাম রয়েছে রানিগঞ্জের জেমারি পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য কালীচরণ বাউড়ির। আবার, সম্প্রতি জামুড়িয়ায় একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ
দিতে গিয়ে কয়লা পাচার মামলায় অভিযুক্ত শেখ সদরুদ্দিনের হাত থেকে সংবর্ধনা নিতে দেখা যায়
পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউড়িকে।

বিজেপির রাজ্য নেত্রী তথা আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের দাবি, ‘‘কয়লা চুরিতে অভিযুক্তের হাত থেকে সংবর্ধনা নিচ্ছেন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি। আবার, কয়লা চুরিতে সরাসরি নামও জড়াচ্ছে তৃণমূল নেতার। এর পরে আশা করার কোনও কারণ নেই যে কয়লা চুরিতে লাগাম টানতে পারবে রাজ্য প্রশাসন। যা করার সিআইএসএফকেই করতে হবে।’’

ইসিএল কর্তৃপক্ষের দাবি, কয়লা চুরি বন্ধে সিআইএসএফের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। খনি এলাকায় ড্রোন ক্যামেরার সাহায্যে চুরির গতিপ্রকৃতি দেখা হচ্ছে। একটি বিশেষ মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের নজরে কয়লা চুরির ঘটনা এলে নাম-পরিচয় গোপন রেখে ওই অ্যাপে খবর পাঠানো যাবে। সিআইএসএফের এক অফিসার জানান, গত কয়েক দিনে বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু চোরাই কয়লা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
তাঁদের অভিযোগ, সাতগ্রাম ও কুনুস্তরিয়া এরিয়ার নানা অঞ্চলে জঙ্গলের মধ্যে কয়লা চোরেরা অবৈধ ডিপো তৈরি করেছে।

নিয়মিত এই কয়লা চুরির ঘটনা উদ্বেগজনক দাবি করে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য বংশগোপাল চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘এই অবৈধ কাজে শাসক দলের একাংশের সঙ্গে নিচুতলার কিছু পুলিশকর্মীও জড়িত। এই চুরি বন্ধ করা না গেলে, খনি-শিল্পাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে
ধস নামবে।’’

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে অবৈধ খাদান বন্ধে তাঁরা বিশেষ অভিযান শুরু করেছেন বলে দাবি করেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা। তিনি জানান, ২ ডিসেম্বরেই রানিগঞ্জ এলাকায় একাধিক অবৈধ খাদান বন্ধ করেছে পুলিশ।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কয়লা চুরির বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বক্তব্য রেখেছেন। তবে জেলায় কোনও অবৈধ কাজে তৃণমূল মদত জোগায় না। বিজেপি এবং সিপিএম যে কোনও বিষয়ে তৃণমূলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে সুখ পায়। ওদের কথা মানুষ গুরুত্ব দেন না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Asansol

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।