ভস্মীভূত: এমনই হাল হয়েছে দুর্গাপুরের এ-জ়োন পুলিশ ফাঁড়িটির। নিজস্ব চিত্র
ভোর পৌনে ৫টা। পুলিশ ফাঁড়ির দরজায় পাহারায় ছিলেন এক পুলিশকর্মী। আচমকা বিকট শব্দ শুনতে পান তিনি। দেখেন ফাঁড়ির ভিতর থেকে কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে। কালক্রমে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ফাঁড়িতে থাকা বেশির ভাগ নথি, আসবাবপত্র। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফাঁড়ির ভবনটিও। শনিবার এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল দুর্গাপুরের এ-জ়োন ফাঁড়ি।
কর্তব্যরত পুলিশকর্মী জানান, ঘটনার সময়ে ফাঁড়ির ভিতরে কেউ ছিলেন না। তিনি বিকট শব্দ শুনে ও ধোঁয়া দেখে ভিতরে ঢোকেন। দেখেন, ফাঁড়ির অফিস ঘরে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। দ্রুত তিনি অন্য পুলিশকর্মীদের খবর দেন। সবাই মিলে আগুন নেভাতে শুরু করেন। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকাবাসীর একাংশ আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। কিন্তু আগুন ক্রমশ বাড়তে থাকায় খবর দেওয়া হয় দমকলে। কিছুক্ষণের মধ্যেই দুর্গাপুর দমকলকেন্দ্র থেকে একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুননিয়ন্ত্রণে আসে।
কেন এই ঘটনা? দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুন লেগে থাকতে পারে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশেরও দাবি, সিসিটিভি-র ডিভিআর শর্ট সার্কিটের ফলে বিকট শব্দে ফেটে যায়। সেটির সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে, প্লাইউডে আগুন ধরে। ফাঁড়িতে থাকা বিভিন্ন কাগজে আগুন লেগে দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে। পুরো ফাঁড়িটি আগুনের কবলে চলে আসে। ফাঁড়িতে একটি অফিস ঘর, একটি লক-আপ, অস্ত্র রাখার ঘর রয়েছে। পুলিশের দাবি, ফাঁড়িতে মজুত আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজে ক্ষতি হয়নি। তবে একটি রিভলভারে আগুনের আঁচ লেগেছে। সেটি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এসিপি (দুর্গাপুর) তথাগত পাণ্ডের বক্তব্য, “ফাঁড়ির বেশ কিছু নথি পুড়ে গিয়েছে। তবে কত টাকার ক্ষতি হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। সিসিটিভির ডিভিআর ফেটে এই অগ্নিকাণ্ড।”
ফাঁড়ির ভবনটি কাঠের। ছাউনি টিনের। ভিতর কাঠের প্লাইউড দেওয়া। তাই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।
এ দিকে, কী-কী নথি পুড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে, তা অবশ্য রাত পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, কোনও মামলার নথি হয়তো নষ্ট হয়নি।কারণ, পুলিশের দাবি, মামলা বা এফআইআর-এর কাগজ ফাঁড়িতে রাখা হয় না। কেস ডায়েরি থাকে তদন্তকারী অফিসারের তত্ত্বাবধানে। তা ছাড়া, আদালত ও পুলিশের সিআই কার্যালয়েও সে সব নথি রাখা থাকে। ফলে, ভুলবশত ফাঁড়িতে রাখা কোনও নথি যদি নষ্ট হয়েও যায়, তবে তার ‘কপি’ পাওয়া যাবে। আইনজীবীরা বিষয়টি নিয়ে এক মত। কিন্তু তাঁরা জানান, জেনারেল ডায়েরির জন্য প্রতিটি থানা বা ফাঁড়িতে একটি খাতা থাকে। এ ক্ষেত্রে জেনারেল ডায়েরির খাতার কোনও ক্ষতি হলে, সংশ্লিষ্ট অভিযোগকারীদের সমস্যায় পড়তে হবে। দুর্গাপুর বার কাউন্সিলের সভাপতি দেবব্রত সাঁই বলেন, “এ ক্ষেত্রে তেমন কিছু ঘটলে, একটু সময় লাগবে। তা ছাড়া, অন্য মামলার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।” এসিপি তথাগত বলেন, “মামলা বা বিচারপ্রার্থীদের সমস্যা হবে না। ফাঁড়িতে কোনও গুরুত্বপূর্ণ মামলা সে ভাবে নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy