অমর্ত্য সেন। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের পরে ভারতে পা রেখেই বুধবার কেন্দ্রের নতুন বিজেপি সরকারকে বিঁধলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তাঁর মতে, ভারত যে হিন্দুরাষ্ট্র নয়, ভারতীয় ভোটারদের মধ্যে সেই মতের প্রতিফলন ঘটেছে। বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের জেলবন্দি করার যে অভিযোগ ওঠে, তা-ও শোনা গিয়েছে অমর্ত্যর মুখে। তবে এ জন্য দেশে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেসও দায় এড়াতে পারে না বলে মনে
করেন অমর্ত্য।
বুধ সন্ধ্যায় দমদম বিমানবন্দরে পৌঁছন অমর্ত্য। সেখানে রামমন্দির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ভারতবর্ষ যে হিন্দুরাষ্ট্র নয়, ভারতীয় ভোটারদের সেই মতের প্রতিফলন ঘটেছে।’’ অমর্ত্যর কথায়, ‘‘অনেক খরচ করে বড় মন্দির বানিয়েছে। এর দু'টো দিক আছে। একটা হল, ভারতবর্ষকে হিন্দুত্বের নিরিখে দেখা। মহাত্মা গান্ধী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুভাষচন্দ্র বসুর দেশে এটা হওয়ার কথা নয়।’’ এই প্রসঙ্গেই দেশে ধনী-গরিবের অসাম্য বাড়ার কথা উল্লেখ করেও বিজেপি সরকারকে নিশানা করেছেন অমর্ত্য। তিনি বলেন, ‘‘ধনীদের উপর নির্ভরশীলতা বেশি, দরিদ্রদের অবহেলা করার প্রথা বহু দিন ধরেই এই সরকারে চলছে। যে মন্ত্রিসভা হয়েছে, তা আগের মন্ত্রিসভার মতোই। মন্ত্রীরা সব একই। একটু রদবদল হলেও, রাজনৈতিক ভাবে যাঁরা শক্তিশালী, তাঁরা এখনও শক্তিশালী।’’
অমর্ত্য এই সরকারের আমলে বিনা বিচারে জেলে রাখার অভিযোগ তুলেছেন। তবে এ জন্য কংগ্রেসেরও দায় রয়েছে বলে তাঁর মত। তাঁর কথায়, ‘‘আমি যখন ছোট ছিলাম, আমার কাকা, তুতো ভাইদের অনেকেই জেলে ছিলেন। আমাদের আশা ছিল, ভারত স্বাধীন বলে বিনা বিচারে জেল বন্ধ হবে। সেটা যে বন্ধ হল না, তাতে কংগ্রেসেরও দোষ আছে। তারা এটা বদলায়নি। তবে এখনকার সরকার সেটাকে বেশি ব্যবহার করছে।’’
দেশের অর্থনীতি নিয়েও নিজের মত জানিয়েছেন অমর্ত্য। তিনি বলেন, ‘‘দেশে বেকারত্ব বাড়ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য অবহেলিত। বেকারের সংখ্যাবৃদ্ধির সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অবহেলার যোগ আছে। কংগ্রেস এবং বামপন্থী নিয়ে আপত্তির কথা তুলতে পারি। তবে তার চেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছি এই বর্তমান সরকারের আমলে। আমাদের এই অবস্থার পরিবর্তন করা দরকার।’’
এ বার লোকসভা ভোটে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। বিরোধীরা আগের তুলনায় অনেক শক্তিশালী। এই পরিস্থিতিতে আশাবাদী অমর্ত্য। তিনি বলছেন, ‘‘নির্বাচনের ফলে কিছু পরিবর্তন হবে, এটা তো আমাদের আশা খুবই আছে ভারতবর্ষে। রাজনীতির দিকেও খোলা মন হওয়া দরকার। বিশেষত ভারতবর্ষ একটা ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। আমাদের সংবিধানও ধর্মনিরপেক্ষ। সেটাকে একটা হিন্দুরাষ্ট্রে পরিণত করাটা সমীচীন নয় বলে আমি
মনে করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy