Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Abhishek Manu Singhvi

সিঙ্ঘভিকে ফের ‘বয়কটে’ অধীরেরা, খোঁচা তৃণমূলের

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি নির্দেশের বিরুদ্ধে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা মামলায় আইনজীবী ছিলেন কংগ্রেসের সিঙ্ঘভি।

Abhishek Manu Singhvi.

অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৩ ০৬:৫০
Share: Save:

দলের সাংসদ ও আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে ঘিরে বিড়ম্বনা কাটছে না বঙ্গ কংগ্রেসের! কখনও বাংলার তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার, কখনও শাসক দলের নেতাদের হয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন সিঙ্ঘভি। রাজ্যের ক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, এর ফলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ময়দানে থাকা দলীয় কর্মীদের অস্বস্তি ও লজ্জায় পড়তে হচ্ছে। এই ঘটনাপ্রবাহের জেরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এই রাজ্যে দলের কর্মসূচিতে সিঙ্ঘভিকে ‘বয়কট’ করার ডাক ফের সামনে এনেছেন। তৃণমূল অবশ্য পাল্টা বলছে, এই রাজ্য থেকে সিঙ্ঘভি রাজ্যসভায় গিয়েছিলেন তৃণমূলের সমর্থন নিয়ে। তাই পেশাগত স্বাধীনতার পাশাপাশি তৃণমূলের প্রতি সিঙ্ঘভির ‘রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা’ও আছে। তাতে এ রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা ক্ষুব্ধ হলেও কিছু করার নেই, এমনই বলছেন তৃণমূলের নেতৃত্ব।

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি নির্দেশের বিরুদ্ধে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা মামলায় আইনজীবী ছিলেন কংগ্রেসের সিঙ্ঘভি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের টিভি সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ টেনে সওয়াল করেছিলেন তিনি। তার প্রেক্ষিতেই নিয়োগ সংক্রান্ত দু’টি মামলা আপাতত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। নতুন করে জলঘোলা শুরু হয়েছে সেই সূত্রেই। চাকরি-প্রার্থীদের বিচার পাওয়ার দাবিতে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের অবস্থানের সমর্থনে কলকাতায় মিছিল করেছে কংগ্রেস। সিঙ্ঘভির কাজকর্মে বাংলার কংগ্রেস কর্মীরা ‘লজ্জিত’ বলে জানিয়ে তাঁকে চিঠি পাঠিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র ও আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর বলছেন, ‘‘এর আগে সারদা ও নারদ-কাণ্ডে সিঙ্ঘভি আদালতে তৃণমূলের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই সময়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে বলেছিলাম, এ রাজ্যে কোনও কর্মসূচিতে তাঁকে দেখতে চাই না। সেই কথা আবার এখন বলছি। তাঁকে আমরা বয়কট করেছি, করব!’’ প্রথম বারের বয়কটের ডাকের পরে কলকাতায় টলি ক্লাবে অনুষ্ঠানে এবং বিমানবন্দরের বাইরে কংগ্রেস কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল সিঙ্ঘভিকে। প্রদেশ সভাপতি অধীর এখন লোকভায় বিরোধী দলের নেতা এবং দলের ওয়ার্কিং কমিটির (এখন তত্ত্বাবধায়ক) সদস্য। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘দিল্লিতে সর্বোচ্চ স্তরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। সিঙ্ঘভির মতো আইনজীবীদের বক্তব্য, পেশার ক্ষেত্রে তাঁরা কী করবেন, সে ব্যাপারে দল বা অন্য কারও মতামত চলতে পারে না। ওঁর যদি পেশাদারি অধিকার থাকে, তা হলে দলের কর্মীদের রাজনৈতিক অসুবিধার জন্য তাঁদেরও প্রতিবাদের অধিকার আছে।’’

কৌস্তভও তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, ‘পেশাদার ও বর্ষীয়ান আইনজীবী হিসেবে মামলা নেওয়ার অধিকার নিশ্চয়ই আপনার আছে। কিন্তু কংগ্রেসের এক জন বর্ষীয়ান নেতা হিসেবে দল ও কর্মীদের প্রতি দায়বদ্ধতাও অস্বীকার করতে পারেন না। বাংলায় তৃণমূলের অপসাশন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কংগ্রেস লড়াই করছে আর আপনি সেই শাসক পক্ষের হয়ে আদালতে সওয়াল করে যাচ্ছেন’। ক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, নারদ-কাণ্ডে দলের নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী যখন তদন্তের আবেদন নিয়ে আদালতে গিয়েছিলেন, কংগ্রেসেরই সিঙ্ঘভি সওয়াল করতে গিয়ে বলেছিলেন একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব তাঁদের রাজনৈতিক স্বার্থে মামলা করছেন! বিচারপতি অবশ্য সেই যুক্তি খারিজ করেছিলেন।

এই প্রেক্ষিতে তৃণমূল নেতা তাপস রায় আবার পাল্টা বলছেন, ‘‘এটা কংগ্রেসের দলীয় বিষয়। তবে শুধু কংগ্রেসের বিধায়ক-সংখ্যার জোরে সিঙ্ঘভি রাজ্যসভায় যেতে পারতেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তৃণমূলের বাড়তি ভোট তাঁকে দেওয়া হয়েছিল, ভোটদাতার তালিকায় আমিও ছিলাম। তখন কংগ্রেস তো সেই সমর্থন প্রত্যাখ্যান করেনি! কাজেই পেশার পাশাপাশি রাজনৈতিক দায়বদ্ধতাও সিঙ্ঘভির আছে।’’ তাঁর আরও কটাক্ষ, ‘‘চিদম্বরম, সিঙ্ঘভিদের নিয়ে যাঁরা এমন বিরোধিতা করছেন, তাঁরা শেষ পর্যন্ত ওই অবস্থান ধরে রাখতে পারবেন তো?’’

অন্য বিষয়গুলি:

Abhishek Manu Singhvi Congress TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy