প্রেম দিবসে বন্ধুরা মিলে পাহাড়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন। সেখানে এক তরুণীকে চার বন্ধু মিলে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠল পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে। ইতিমধ্যেই পুলিশে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ তদন্তও শুরু করেছে। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, চার অভিযুক্ত পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। এক অভিযুক্তের মা-বাবাকে ইতিমধ্যেই আটক করা হয়েছে।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল ধ্রুব দাস বলেন, ‘‘নির্যাতিতার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে আসানসোল মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, দুর্গাপুরের ওই তরুণী দীর্ঘ দিন ধরেই আসানসোলের বার্নপুরে মামার বাড়িতে থাকছিলেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মামাতো বোনের বন্ধুদের সঙ্গে তিনি বাঁকুড়ার শালতোড়ার বিহারীনাথ পাহাড়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন। মামাতো বোনের বন্ধুদের মধ্যে ছিলেন চার তরুণ এবং চার তরুণী। সেখানে দুর্গাপুরের ওই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে দুর্গাপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
‘নির্যাতিতা’র পরিবার সূত্রে খবর, বাঁকুড়ায় তরুণীকে ধর্ষণের পরেই সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন চার অভিযুক্ত যুবক। এর পর শুক্রবার তরুণীর বন্ধুরাই তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাড়ি ফিরে তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়ার পরেই পরিবারের লোকেদের সন্দেহ হয়। তরুণী বাড়িতে সব কথা জানানোর পরেই পুলিশের দ্বারস্থ হন পরিবারের লোকেরা। এর পর পুলিশের কথামতোই তরুণীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত চার জনই আসানসোলের বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে এক জনের মা-বাবাকে আটক করেছে আসানসোলের হিরাপুর থানার পুলিশ।
‘নির্যাতিতা’ হাসপাতালে ভর্তি, শনিবার সেখানে গিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘড়ুই। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে ‘নির্যাতিতার’ পরিবারের লোকেদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিধায়ক বলেন, ‘‘আমার বিধানসভার এক তরুণীকে চার যুবক মিলে ধর্ষণ করেছে। আমি খবর পেয়ে দেখা করতে এসেছি। সুপার বলছেন, আসানসোলে আছে। এখানে কর্মীরা বলছে, দেখা করা যাবে না। কেন? সারা বাংলায় যা চলছে, এখানেও তা চলছে। মহিলা মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, যারা এ সব ঘটনা ঘটাচ্ছে, তাদের ফাঁসি দেওয়া হবে। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করছি, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত যারা, তাদের ফাঁসি দেওয়া হবে তো? আমি আধ ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি, আমাকে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। তৃণমূলের দালালেরা, নিরাপত্তারক্ষীরা আমাকে বাধা দিয়েছে। এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব। যদি ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তা হলে দুর্গাপুর অবরুদ্ধ করে দেব।’’
পাল্টা দুর্গাপুরের ওই হাসপাতালের কর্মী অনন্তরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিয়ম ভেঙে অনেক জন মিলে একসঙ্গে হাসপাতালের ভিতর ঢোকার চেষ্টা করেছিল। সেই জন্যই নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের বাধা দিয়েছে। নির্দিষ্ট সময় ছাড়া ঢুকতে দেওয়া যাবে না।’’