চাকরি বাতিল নিয়ে রাজ্য জুড়ে টানাপড়েনের আবহে শিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ মিলল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে। মৃতের নাম প্রণব প্রতীব নাইয়া (৪২)। তিনি তেঁতুলবেড়িয়া গোচরণ টিএস সনাতন হাই স্কুলের বাংলার শিক্ষক ছিলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রণবের দেহ তাঁর ঘর থেকেই উদ্ধার হয়েছে। মিলেছে একটি সুইসাইড নোটও। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, যুবকের মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
২০১২ সালে শিক্ষক হিসাবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন প্রণব। প্রথম চাকরি পেয়েছিলেন মুর্শিদাবাদে। ২০২১ সালে তিনি বদলি হয়ে বাড়ির কাছে স্কুলে চাকরি পান। পরিবার সূত্রে খবর, কয়েক দিন ধরেই তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। কারও সঙ্গে সেই ভাবে মেলামেশা করতেন না। কথা বলতেন না। স্কুল কর্তৃপক্ষেরও দাবি, নিয়মিত স্কুলেও যেতেন না প্রণব। গেলেও সেই ভাবে ক্লাস নিতেন না। কী কারণে প্রণব মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে।
তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, যুবকের বাড়ি থেকে যে সুইসাইড নোটটি উদ্ধার হয়েছে, তাতে লেখা, ‘‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’’ মা-বাবাকে দেখাশোনার করার জন্য পরিবারের বাকি সদস্যদের অনুরোধও করেছেন যুবক। পাশাপাশি, লেখা, ‘‘বডিটা মেডিক্যাল কলেজে দিস।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত এই সুইসাইড নোটের অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। কথা বলা হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে।
যুবকের বাবার দাবি, ‘‘এত শিক্ষকের যে চাকরি চলে গিয়েছে, তা নিয়ে খুবই চিন্তায় ছিল ছেলে। সারা দিন মোবাইল দেখত। আমি বার বার বলতাম, এত চিন্তা করিস না। কিন্তু শুনত না।’’
বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি বলেন, ‘‘এই মৃত্যু নিয়ে সমাজমাধ্যমে নানা রকমের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। প্রণব নাইয়া চাকরি হারিয়েছেন বলে সমাজমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে। যা একেবারেই সঠিক নয়। যাঁরা গুজব রটাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’