ওমপ্রকাশ মিশ্র। —নিজস্ব চিত্র।
টাকি বয়েজ় স্কুলের সামনে অজস্র পরীক্ষার্থীদের মধ্যে একটু যেন বেমানান তিনি।
মাথাজোড়া টাক। গালে হালকা দাড়ি। তা-ও প্রায় সবই পেকে গিয়েছে। হন্তদন্ত ভাবে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকছিলেন তিনি। একটু দেরিই হয়ে গিয়েছে।
পরীক্ষাকেন্দ্রের পরিদর্শক? না। ওমপ্রকাশ মিশ্র পরীক্ষার্থী। বয়স ৫৮। ট্যাংরার একটি প্রাথমিক স্কুলের পার্শ্ব শিক্ষক তিনি। দু’বছর দূরে অবসর। তবু স্বপ্ন দেখেন। টেট পাশ করে প্রাথমিক স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক হবেন। নির্দিষ্ট বেতন কাঠামোতে শিক্ষকতা করবেন।
স্কুলের সামনে অজস্র যুবক-যুবতী পরীক্ষার্থীর মাঝে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী ওমপ্রকাশ। বলেন, ‘‘শিক্ষকতার ফাঁকে, পারিবারিক কাজের মধ্যেও রোজ পড়তে বসেছি। প্রস্তুতিও ভাল হয়েছে। ২০১৪-এ টেটে বসেছিলাম। পাশ করিনি। আশাও ছাড়িনি।’’
পাশ করলেও কি আশা করেন, এই নিয়োগ জট কেটে দু’বছরের মধ্যে স্থায়ী চাকরি পাবেন? ২০১৪, ২০১৭, ২০২২-এর হাজার হাজার পরীক্ষার্থী টেট পাশ করে বসে আছেন। ওমপ্রকাশ বলেন, ‘‘টেটের বর্তমান পরিস্থিতির পুরোটাই অবগত। মামলাও চলছে। শিক্ষামন্ত্রী বলছেন গভীর এই জট খোলার চেষ্টা চলছে। আমিও আশা ছাড়ছি না। যদি এই জট খুলে যায় তাড়াতাড়ি। এক বছরও যদি নির্দিষ্ট বেতন কাঠামোতে চাকরি করতে পারি তা হলে আমার পরিবার আর্থিক ভাবে লাভবান হবে। অবসরকালীন কিছু সুবিধা তো পাব।’’
১৯ বছর পার্শ্ব শিক্ষকের কাজ করছেন। ওমপ্রকাশের প্রশ্ন, ‘‘পার্শ্ব শিক্ষকদের বেতন কাঠামো কেন তৈরি হল না? অনেক আন্দোলন হয়েছে। কিছু হয়নি। পার্শ্ব শিক্ষকেরাও তো বঞ্চনার শিকার।’’
পার্শ্ব শিক্ষকদের টেটে বসার ক্ষেত্রে বয়সের কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই। তাই ৫৮ বছর বয়সেও টেটে বসার সুযোগটা নিতে পেরেছেন ওমপ্রকাশ। বাড়িতে স্ত্রী এবং দুই ছেলে। পরে তপসিয়ায় বাড়িতে বসে বলেন, ‘‘প্রশ্ন একটু কঠিন ছিল। তবে পরীক্ষা ভালই দিয়েছি। আশা করছি পাশ করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy