শান্তনু ঠাকুর।
রাজ্যে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে মতুয়া প্রতিনিধি না-থাকা নিয়ে অনেক দিন আগেই রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর ‘দূরত্ব’ তৈরি হয়েছে। সেই ক্ষোভের যে এখনও নিষ্পত্তি হয়নি, তা আরও এক বার প্রকাশ্যে এল শান্তনু ঠাকুরের মন্তব্যেই। রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্যের প্রভাব পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মতুয়া ভোটব্যাঙ্কে পড়তে পারে বলে দলের অন্দরে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে, তা আরও বাড়িয়ে দিলেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ। স্পষ্ট জানালেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে মতুয়ারা বিজেপির সঙ্গে থাকবে কি না, সে ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। যা বলার রাজ্য স্তরের নেতারাই বলবেন।
রাস উৎসব নিয়ে রবিবার সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসঙ্ঘের বৈঠক ছিল ঠাকুরবাড়িতে। সেই বৈঠকে যোগ দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির পাশেই থাকবেন মতুয়ারা? তার জবাব দিতে গিয়ে সাংসদ বলেন, ‘‘এর উত্তর ভাল দেবেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। কী চলছে আর কী চলছে না, আমি সত্যিই কিছু জানি না। রাজ্যের নেতাদের জিজ্ঞাসা করা হোক। তাঁরাই বলতে পারবেন।’’ যা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে বিজেপির অন্দরে।
প্রসঙ্গত, দলের পদাধিকারীমণ্ডলী এবং জেলা সভাপতিদের তালিকা প্রকাশ্যে আসার পরেই রাজ্য বিজেপির অন্দরে কোন্দল শুরু হয় চলতি বছরের গোড়ায়। হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছিলেন পাঁচ মতুয়া বিধায়ক। শান্তনুকেও দেখা গিয়েছিল শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিতে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে রাজ্য পদাধিকারীমণ্ডলীতে মতুয়া প্রতিনিধি আনার দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। যদিও শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবি মানা হয়নি। দলীয় সূত্রে খবর, তার পর থেকে শান্তনুকে দলের কোনও কর্মসূচিতেও সেই ভাবে দেখা যায়নি। দলের চিন্তন শিবিরেও যাননি তিনি। অবশ্য সম্প্রতি রাজ্য-বিজেপিতে ২৪ জনের কোর কমিটি তৈরি হয়েছে, তাতে রয়েছেন শান্তনু।
দলীয় সূত্রের দাবি, সিএএ কার্যকর না-হওয়া নিয়েও ক্ষুব্ধ শান্তনু। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, করোনাকালের পর দেশে সিএএ আইন কার্যকর করা হবে। অতিমারির দাপট থিতু হওয়ার পরেও তা না-হওয়ায় ঘনিষ্ঠমহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তবে রবিবার সিএএ প্রসঙ্গে শান্তনু বলেন, ‘‘সিএএ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বিরোধীদের দায়ের করা মামলার শুনানি চলছে। তার নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত সিএএ কার্যকর করা সম্ভব নয়।’’
শান্তনুর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সঙ্ঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর অবশ্য আশাবাদী, মতুয়া ভোট তৃণমূলের পাশেই থাকবে। তাঁর কথায়, ‘‘মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের কাছ থেকে সরে গিয়েছিল। তবে গত বিধানসভা নির্বাচনে আবার তা তৃণমূলে ফিরে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মতুয়াদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। অনেক উন্নয়ন হয়েছে। মতুয়ারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশেই আছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy