স্তব্ধ: ফাঁকা ডায়মন্ড হারবার স্টেশন। নিজস্ব চিত্র
ট্রেন অবরোধের জেরে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নাকাল হলেন শিয়ালদহ-ডায়মন্ড হারবার শাখার যাত্রীরা। কারও পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। কেউ যেতে পারেননি জরুরি কাজে। বেড়াতে গিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়রান হয়েছেন অনেকে।
রেল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এনআরসি ও সিএবির প্রতিবাদে এ দিন সকালে বাসুলডাঙা, হোটরে স্টেশনে ওভারহেডে কলাপাতা ফেলে, রেল লাইনের উপরে কংক্রিটের স্ল্যাব রেখে শুরু হয় অবরোধ। আপ ও ডাউন লাইনে সমস্ত ট্রেন বন্ধ হয়ে যায়। সাড়ে ১১ নাগাদ একটি ট্রেন ডায়মন্ড হারবারে ঢুকলেও পরে আর কোনও ট্রেন আসেনি সন্ধে পর্যন্ত। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে বহু যাত্রী বাড়ির পথ ধরেন। কেউ কেউ সড়ক পথে কলকাতা বা অন্যত্র গিয়েছেন। তবে রাত পর্যন্ত ট্রেন অনিয়মিত থাকায় নাকাল হয়েছেন ফেরার পথে।
ডায়মন্ড হারবারে ভারত সেবাশ্রমের প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়াদের এ দিন পরীক্ষা ছিল। প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত শিশুদের নিয়ে যাতায়াত করেন অভিভাবকেরা। ট্রেন বন্ধ থাকায় অনেকেই স্কুলে পৌঁছতে পারেননি। বেশ কিছু ছাত্র দেরিতে আসায় তাদের পরীক্ষার সময়সূচি বাড়িয়ে আলাদা করে পরীক্ষা নিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষক তামসরঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় অনেকেই বিকল্প পরিবহণ ধরে দেরিতে এসেছে। তাদের ফিরিয়ে না দিয়ে অন্য ঘরে অতিরিক্ত সময় দিয়ে পরীক্ষা নিয়েছি। ১৫-২০ জন ছাত্র আসতেই পারেনি। তাদের নিয়ে পরে চিন্তা-ভাবনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ জানা গেল, স্কুল থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে হোটর থেকে এক পরীক্ষার্থী আসে এই স্কুলে। প্রায় হাজার টাকা অটো ভাড়া দিয়ে সে এসেছিল।
মগরাহাট ১ ব্লকের লক্ষ্মীনারায়ণ পঞ্চায়েতের কর্মী স্বরূপ প্রধান সকাল ১০টা ১০-এর ট্রেন ধরে আধ ঘণ্টার মধ্যে অফিসে পৌঁছন। জানালেন, প্রায় আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ট্রেন পাননি। শেষে ঘুরপথে বাস ধরে বেলা ২টোয় পৌঁছন অফিসে।
রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকটি স্টেশনে সাময়িক ভাবে অবরোধ হলেও তুলে দেওয়া হয় কিছুক্ষণের মধ্যেই। ওভারহেডে কলাপাতাও সরানো হয়। কিন্তু ওই শাখায় শিয়ালদহ থেকে ট্রেন পাঠানো হয়নি ডায়মন্ড হারবার পর্যন্ত। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাতেগোনা কয়েকটি ট্রেন চলেছে।
সকালের দিকে ডায়মন্ড হারবার ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কে ধর্মতলা, কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমাগামী সরকারি-বেসরকারি বাস চলাচলও ছিল অনিয়মিত। অফিস-কাছারি, স্কুল-কলেজে হাজিরা ছিল কম। ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক সুকান্ত সাহা জানান, কোথাও সমস্যার খবর পেলেই পুলিশ-প্রশাসন পৌঁছে গিয়ে তার সমাধান করেছে। তা সত্ত্বেও কিছু অসুবিধা হয়েছে।
পূর্ব রেলের শিয়ালদহ শাখার জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সকাল থেকে ওই শাখায় বেশ কয়েকটি স্টেশনে কলার ওভারহেডে কলাপাতা ফেলে, লাইনের উপরে স্ল্যাব রেখে বিক্ষোভ হয়েছে। ফলে ট্রেন চলাচল অনিয়মিত ছিল। চালকদের নিরাপত্তার কথা ভেবে, সব দিক খতিয়ে দেখে তবেই ট্রেন চালানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy