E-Paper

গলা শুনে নাম বলেন দিদিমণি, স্কুল কামাই করতে নারাজ ওরা

স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বকুলতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৮৫। প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা ছ’জন। প্রধান শিক্ষক নিখিল সামন্ত জানান, প্রত্যন্ত এলাকায় স্কুলছুটের সমস্যা বেশি।

পড়াশোনার ফাঁকে খেলাধূলা।

পড়াশোনার ফাঁকে খেলাধূলা। ছবি: দিলীপ নস্কর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৬:৫৬
Share
Save

চেয়ার পেতে বসে ‘দিদিমণি’। পিছনে লাইন করে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন ক্লাসের জনা দশেক ছেলেমেয়ে। কচি কণ্ঠে সম্ভাষণ ভেসে আসছে, ‘গুড আফটারনুন, ভাল আছেন ম্যাম!’ গলা শুনে পড়ুয়াদের নাম বলে দিচ্ছেন শিক্ষিকা। হাততালি পড়ছে চটাপট। বোঝা যাচ্ছে, স্কুলের প্রতিটি ছেলেমেয়েকে কেমন নিবিড় ভাবে চেনেন শিক্ষিকা।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের বকুলতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এমন একটি ভিডিয়ো সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে স্কুলের শিক্ষিকা মোনালিসা রায়কে বাচ্চাদের সঙ্গে এমন স্নেহ-মায়ায় ভরা সময় কাটাতে দেখা যাচ্ছে। খেলার ছলে পড়ুয়াদের সঙ্গে শিক্ষিকার আন্তরিক সম্পর্কের দিকটি নজর কেড়েছে শিক্ষা আধিকারিকদেরও।

মোনালিসা বলেন, ‘‘স্কুলের ছেলেমেয়েরা আমার সন্তানের মতো। ক্লাস করানোর পাশাপাশি ওদের সঙ্গে গল্প করি। মনোযোগ দিয়ে ওদের কথা শুনি। তাই পিছন থেকে গলার স্বর শুনেও চিনতে পারি ওদের।’’

স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বকুলতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৮৫। প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা ছ’জন। প্রধান শিক্ষক নিখিল সামন্ত জানান, প্রত্যন্ত এলাকায় স্কুলছুটের সমস্যা বেশি। তাই স্কুলের প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে নানা রকম পদক্ষেপ করা হয়। ছোটদের নিয়ে নানা রকম খেলাধুলো করান শিক্ষকেরা। ‘চু কিতকিত’, ‘কানামাছি’, ‘লুকোচুরি’, ‘রুমাল চোর’, ‘এক্কাদোক্কা’-র মতো হারিয়ে যেতে বসা গ্রামীণ খেলাধুলোয় ছেলেমেয়েদের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকারাও ময়দানে নেমে পড়েন। শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেদের ভাবনা থেকেও নানা রকম খেলা তৈরি করেন। কণ্ঠস্বর শুনে নাম বলে দেওয়ার ভাবনা তাঁদেরই।

প্রধান শিক্ষক জানালেন, পড়াশোনার পাশাপাশি এখানে জোর দেওয়া হয় পড়ুয়াদের শারীরচর্চায়। নিয়ম করে নাচ, ব্রতচারী শেখানো হয়। পড়ুয়াদের স্কুলে আসার উৎসাহ আগের থেকে বেড়েছে বলে দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘স্কুলে পড়ুয়াদের ভর্তি বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হয়। চেষ্টা করি, ছেলেমেয়েরা যাতে খেলার মাধ্যমে পড়াশোনা শেখে, আনন্দের পরিবেশে বড় হয়।’’

মথুরাপুর ২ ব্লকের দক্ষিণ চক্রের স্কুল পরিদর্শক স্নেহজিৎ দে বলেন, ‘‘ওই স্কুল যে ভাবে পরিচালিত হচ্ছে, তা প্রশংসনীয়। আমরা সব সভাতেই শিক্ষকদের বলি, কোনও ভাবেই স্কুলছুট হতে দেওয়া যাবে না। সেই প্রবণতা আটকাতে বকুলতলা প্রাথমিক বিদ্যালয় এগিয়ে।’’

স্কুল নিয়ে গর্বিত ছাত্রছাত্রী, অভিভাবকেরা। এক অভিভাবক বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমার ছেলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। স্কুল কামাই মোটে করতে চায় না। কোনও কারণে স্কুলে যেতে পারবে না জানলে, রীতি মতো কান্নাকাটি জুড়ে দেয়!’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Students Raidighi School Teachers

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।