বিকেলের পরেই অন্ধকারে ডুবে যায় এই রাস্তা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
বনগাঁ মহকুমা এলাকায় গ্রামীণ রাস্তাগুলির অনেক উন্নতি হয়েছে। এবড়োখেবড়ো ইট-ঝামা বা মাটির রাস্তার বদলে ঢালাই রাস্তা হয়েছে প্রচুর। কিন্তু সে সব রাস্তা সন্ধের পরে ডুবে যায় অন্ধকারে।
আগে ওই সব রাস্তায় যানবাহন চলাচল করতে অসুবিধা হত। ভাঙাচোরা রাস্তায় যাতায়াত করতে গিয়ে গায়ে ব্যথা নিয়ে বাড়ি ফিরতেন মানুষ। বর্ষার সময়ে রাস্তা জলকাদায় ডুবে যেত। চাষিরা ফসল নিয়ে হাটেবাজারে যেতে সমস্যায় পড়তেন। ঢালাই রাস্তা তৈরি করায় সে সমস্যা মিটেছে। তবে বেশির ভাগ ঢালাই রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা আজও হল না।
বহু গ্রামবাসীর বক্তব্য, গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুতের ব্যবস্থা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি আলো পৌঁছেছে। কিন্তু পথঘাট ডুবে থাকে আঁধারেই। রাতে অন্ধকারে যাতায়াত করতে মানুষ ভয় পান। অপরাধপ্রবণতাও তাতে বাড়ার আশঙ্কা থাকে। কোনও কোনও পঞ্চায়েত অবশ্য নিজস্ব আয় বাড়িয়ে ঢালাই রাস্তার আলো ব্যবস্থা করেছে। সে সব এলাকার মানুষ তাতে সন্তুষ্ট।
বনগাঁ মহকুমার গোপালনগর থানার নতুনগ্রাম, পোলতা, রামচন্দ্রপুর, বনগাঁ থানার বাগের বটতলা এলাকা, বোয়ালদহ এবং বাগদা থানার খড়ের মাঠ, বাজিতপুরে ঘুরে দেখা গেল, ঢালাই রাস্তায় কোথাও আলো নেই। রাস্তাগুলি অবশ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রচুর যানবাহন চলাচল করে।
বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানানো হয়েছে, বনগাঁ ব্লক এলাকায় প্রায় ২০০ কিলোমিটার ঢালাই রাস্তা আছে। সেই সব রাস্তার অধিকাংশই বিদ্যুৎহীন। কেন ঢালাই রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করা যায়নি? বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন দত্ত বলেন, ‘‘পুরসভা যে পরিমাণ রাজস্ব পায়, পঞ্চায়েতগুলির সেই আয় নেই। পঞ্চায়েত কেবল মাত্র সম্পত্তি ট্যাক্সের টাকা পায়। তা-ও এ ক্ষেত্রে বছরে পরিবার-পিছু পঞ্চায়েত পায় ৫০-৬০ টাকা মাত্র। ফলে পঞ্চায়েতগুলির পক্ষে বিদ্যুতের বিল মেটানো সম্ভব হয় না।’’
তবে ব্যতিক্রমও আছে। বনগাঁ ব্লকের ছয়ঘড়িয়া পঞ্চায়েতই যেমন। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৮০ শতাংশ রাস্তা ঢালাইয়ের। তার মধ্যে ৬০ শতাংশ রাস্তায় বিদ্যুৎ আছে। সীমান্ত-লাগোয়া এই সব এলাকায় রাস্তায় আলো থাকায় অপরাধমূলক কাজ আগের থেকে কমেছে বলে দাবি পঞ্চায়েতের। চাষিরাও খেতের ফসল যানবাহনে তুলে নির্বিঘ্নে হাটে-বাজারে নিয়ে যেতে পারেন।
কী ভাবে এটা সম্ভব হল?
পঞ্চায়েত প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘গ্রামের ঢালাই রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতের নিজস্ব আয় কম থাকাই মূল বাধা। আলো বসানোর পাশাপাশি রক্ষণাবেক্ষণ করার খরচ দরকার।’’ তারা কী ভাবে আলো বসাতে পারলেন?
প্রসেনজিৎ বলেন, ‘‘আমরা পঞ্চায়েতের নিজস্ব আয় বাড়িয়েছি। ট্যাক্স এবং নন-ট্যাক্স থেকে আয় বাড়াতে পেরেছি। মূলত বিল্ডিং প্ল্যান, টেন্ড লাইসেন্স এবং জমির চরিত্র বদল হলে উন্নয়ন ফি নেওয়া হয়। আয় বেড়েছে বলেই বেশিরভাগ রাস্তায় আলো দিতে পেরেছি।’’
গাইঘাটা ব্লক এলাকার বেশিরভাগ ঢালাই রাস্তায় আলো নেই। গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোবিন্দ দাস বলেন, ‘‘ঢালাই রাস্তায় আলো আমরা বসাতেই পারি। কিন্তু বিদ্যুতের বিলটা কে দেবে! পঞ্চায়েতের নিজস্ব আয় অনেক কমে গিয়েছে। তবুও আমরা ঢালাই রাস্তায় আলো বসানোর বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy