পরীক্ষাকেন্দ্রের কাছাকাছি থাকতে আগের বৃহস্পতিবারই যাত্রা ছাত্রছাত্রীদের। মৌসুনি দ্বীপে। ছবি: সমরেশ মণ্ডল।
একে পরীক্ষার সময় এগিয়ে এসেছে। তার উপরে আকাশের মুখ ভার। ফলে, আজ শুক্রবার মাধ্যমিক শুরুর দিন সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনো যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে বহু পরীক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকেরা। বিশেষ করে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার অনেক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে হবে জলপথে।
প্রশাসনের দাবি, পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে সঠিক সময়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সড়ক এবং জলপথ পরিবহণ ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে বহু জায়গায়। কোথাও আবার অটো-টোটোর চালকেরা স্বেচ্ছায় সকালবেলা পরীক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য রাস্তায় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গঙ্গার ধার বরাবর উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের ৯৬টি কেন্দ্রে ৩১ হাজার ৫৩১ জন এ বার মাধ্যমিক দেবে। এই শিল্পাঞ্চলের ১৮টি ফেরিঘাটে সকাল সাতটা থেকে ১০টা পর্যন্ত ফেরি চলাচলের সময়ের ব্যবধান কমিয়ে আনা হয়েছে ও স্থানীয় রুটে বাস, অটো বেশি সংখ্যায় চালানোর কথা মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে পথে পরীক্ষার্থীদের কোনও অসুবিধা হলে ট্র্যাফিক পুলিশকে সঙ্গে সঙ্গে সাহায্য করতেও নির্দেশ দিয়েছেন ব্যারাকপুরের নগরপাল অলোক রাজোরিয়া।
জেলার আরেক প্রান্তে হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের নেবুখালি-দুলদুলি খেয়াঘাট দিয়ে সবচয়ে বেশি যাত্রী পারাপার করেন। এই খেয়াঘাট দিয়েই পরীক্ষার্থীরা মূলত যাতায়াত করবে বলে সকাল ছ’টা থেকেই পুলিশি নজরদারিতে অতিরিক্ত নৌকো চলাচল করবে। থাকবেন জলপথ পরিবহণ, সিভিল ডিফেন্স-এর কর্মীরাও। হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কয়েকটি নৌকো বেশি চলবে। খেয়াঘাটে পরীক্ষার্থী এলেই পার করিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
একই চিত্র সন্দেশখালিতেও। স্থানীয় ধামাখালি, খুলনা, বড় তুষখালি, আজিজের খেয়াঘাট-সহ বিভিন্ন খেয়াঘাট দিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা নদী পারাপার করবে বলে নৌকো বাড়ানো হয়েছে। সন্দেশখালি ২–এর বিডিও অরুণকুমার সামন্ত বলেন, ‘‘এই ঘাটগুলিতে বাড়তি নৌকো থাকবে। ঘন ঘন নৌকো চালানো হবে। মোটর ভ্যান, টোটো স্ট্যান্ডেও পুলিশ থাকবে যাতে সমস্যা না হয়।’’ সন্দেশখালি ১ ব্লকের ন্যাজাট, কালীনগর, গাজিখালি-সহ গুরুত্বপূর্ণ খেয়াঘাটেও বাড়তি নৌকা থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং ১ ব্লকে ৯টি, বাসন্তী ব্লকে ৮টি এবং গোসাবা ব্লকে ৮টি পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। গোসাবায় জলপথে পরীক্ষার্থীদের যেতে হবে বলে ফেরিঘাটগুলিতে দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার জন্য অটো, ভ্যান এবং ঘন ঘন ফেরি পারাপারের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। অ্যাডমিট কার্ড আনতে ভুলে গেলে পরীক্ষার্থীর বাড়ি গিয়ে তা নিয়ে আসার জন্য ‘ক্যুইক রেসপন্স টিম’ তৈরি করা হয়েছে ব্লকে।
অন্যদিকে, মৌসুনি দ্বীপের বলিয়াড়া কিশোর হাই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য নৌকো ও গাড়ির ব্যবস্থা হয়েছে। রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের জটা নগেন্দ্রপুর হাই স্কুলের ৯০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেবে কুমড়োপাড়া দেলোয়ার হোসেন হাই স্কুলে। কিন্তু পরিবহণ ব্যবস্থা তেমন কিছুই নেই। কেউ কেউ গাড়ি ভাড়া করেছেন। পাথরপ্রতিমার এল প্লটের শ্রীধরনগর শৈলেন্দ্র বিদ্যাপীঠ এবং উপেন্দ্র হাই স্কুলের পড়ুয়াদের ঘনশ্যামনগর হাই স্কুলে ‘সিট’ পড়েছে। পরীক্ষার্থীদের ভোর ছ’টা থেকে সাড়ে ছ’টার মধ্যে বেরিয়ে যেতে হবে। নদী পেরিয়ে স্কুলে ঢুকতে লেগে যাবে ঘণ্টাখানেক। কে প্লটের বিএমএস গার্লস হাই স্কুল এবং ঋষি রায় বয়েজ হাই স্কুলের ‘সিট’ও ঘনশ্যামনগরের স্কুলে পড়েছে। এই দু’টি স্কুলের পরীক্ষার্থীদের পৌঁছতে সময় লাগবে। কারণ, ভোরের দিকে এই দ্বীপের ফেরিঘাট থেকে ঘনশ্যামনগর যাওয়ার সরাসরি নৌকো থাকে না। দু’টি নদী পেরিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে প্রায় দু’ঘণ্টা সময় লেগে যাবে। এখানে বাড়তি নৌকার ব্যবস্থা হয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। তবে, পরীক্ষার্থীদের অনেকেই পরীক্ষাকেন্দ্রের কাছে আগের দিন থেকে থাকছে। ঘোড়ামারা মিলন বিদ্যাপীঠের ছাত্রছাত্রীরাও কাকদ্বীপ এলাকায় পরীক্ষাকেন্দ্রের কাছাকাছি থাকছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy