(বাঁ দিকে) কামারহাটির ক্লাবে অত্যাচারের এই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। ধৃত প্রসেন ওরফে লাল্টু (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
পুলিশের জালে কামারহাটির দুষ্কৃতী জয়ন্ত সিংহের আর এক শাগরেদ প্রসেন দাস ওরফে লাল্টু। সম্প্রতি একটি ভিডিয়োয় দেখা যায়, চোর সন্দেহে এক কিশোরকে নগ্ন করে অত্যাচার চালাচ্ছেন অভিযুক্ত। যন্ত্রণায় ছটফট করছে ওই কিশোর। (যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) সাঁড়াশি দিয়ে ওই কিশোরের গোপনাঙ্গ চেপে ধরার অভিযোগ ওঠে লাল্টুর বিরুদ্ধে। এই অত্যাচারের ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে লাল্টুকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তবে ভিডিয়োটিতে যে ঘটনা দেখা গিয়েছে, তা কবেকার, সেই বিষয়ে সুস্পষ্ট ভাবে কিছু জানা যায়নি।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বেলঘরিয়ার বাসিন্দা লাল্টু স্থানীয়দের কাছে জয়ন্তের অনুগামী হিসাবেই পরিচিত। লাল্টুর গ্রেফতারির পর দুই ভিডিয়োকাণ্ডে জয়ন্ত ছাড়াও তাঁর মোট সাত সঙ্গী গ্রেফতার হলেন।
বুধবার ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, কামারহাটির ভিডিয়োকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত জয়ন্তের ছয় সঙ্গী গ্রেফতার হয়েছেন। বাকিদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে বলে জানান তিনি। ভিডিয়োকাণ্ডে নির্যাতিতদেরও খোঁজ চলছে বলে জানানো হয়। ভিডিয়োটি যত পুরোনোই হোক, ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করে পুলিশ।
যে ভিডিয়োর ভিত্তিতে জয়ন্তের ছয় সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়, তাতে দেখা যায়, এক ব্যক্তিকে হাত-পা ধরে ঝুলিয়ে রেখে বেধড়ক মারধর করছেন কয়েক জন। আর যন্ত্রণায় আর্তনাদ করছেন ওই ব্যক্তি। সোমবার রাতে ভিডিয়োটি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির তরফেও তা পোস্ট করা হয়। বিজেপি ওই ভিডিয়ো পোস্ট করে লেখে, ‘‘কামারহাটির তালতলা ক্লাবে মদন-ঘনিষ্ঠ জয়ন্ত সিংহ কী ভাবে নিরস্ত্র মহিলাকে মারছেন, দেখা যাচ্ছে। যে রাজ্যের সরকার নারীদের সুরক্ষা নিয়ে গর্ব করে, সেখানে এই বর্বরতা মানবতার কলঙ্ক। এর দ্রুত তদন্ত এবং বিচার চাই।’’ ভিডিয়ো প্রসঙ্গে বিজেপির পাল্টা পোস্ট করে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র ঋজু দত্ত এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লেখেন, ‘‘এটি ২০২১ সালের মার্চ মাসের ভিডিয়ো। অভিযুক্তেরা জয়ন্ত সিংহ এবং তাঁর অনুগামী। ভিডিয়োতে যাঁদের দেখা যাচ্ছে, তাঁদের মধ্যে অন্তত দু’জন এখন জেলে।’’
বুধবার পুলিশও জানায়, ভিডিয়োটি ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে তোলা। পুলিশ কমিশনার জানান, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে আড়িয়াদহের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাহুল গুপ্ত নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে মোবাইল ফোন চুরির ঘটনা ঘটে। কিন্তু তিনি থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। চুরির ঘটনায় এক দম্পতিকে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের একাংশের। কামারহাটির আড়িয়াদহ তালতলা স্পোর্টিং ক্লাবে ওই দু’জনকে নিয়ে এসে বেধড়ক মারধর করা হয়। ঘটনায় অভিযোগের আঙুল ওঠে সেই জয়ন্ত-বাহিনীর দিকে। তবে ওই মারধরের ঘটনায় প্রসেন ওরফে লাল্টু ছিলেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy