রবিবার রাতে শাসনে বিক্ষোভ ঠেকাতে ব্যস্ত পুলিশকর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।
যুবককে পিটিয়ে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসনে। পুলিশে অভিযোগ জানাতে গেলেও থানা থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, দাবি মৃতের আত্মীয়দের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে খড়িবাড়ি বাজার এলাকা। রাত পর্যন্ত মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে আহত হয়েছেন থানার আইসি-সহ পাঁচ পুলিশকর্মী। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অভিযোগ, এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল যুবকের। সম্পর্কের অবনতি হওয়ার কারণে তাঁকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। তার পর দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বাড়িতেই। যুবকের দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও দাবি স্থানীয়দের। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, এই ঘটনায় পুলিশের দ্বারস্থ হলে থানা থেকে জানানো হয়, যুবক আত্মহত্যা করেছেন। এর পরেই উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়।
শাসন থানার অন্তর্গত মহিষগদি সাহাজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা আলামিন সাহাজি। রবিবার বাড়ি থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, বছরখানেক ধরে এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন আলামিন। সম্প্রতি সেই সম্পর্কের অবনতি হয়। সেই কারণেই তাঁকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে, দাবি মৃতের পরিবারের। দেহ উদ্ধারের পর শাসন থানায় অভিযোগ জানাতে যান পরিবারের সদস্যেরা। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি। তারা জানায়, যুবক আত্মহত্যা করেছেন। এর পরেই মৃতদেহের রেখে বিক্ষোভ শুরু হয়।
খড়িবাড়ি বাজার এলাকায় রাতেই রাস্তা অবরোধ করেন মৃতের আত্মীয় এবং স্থানীয়েরা। যুবকের দেহ রাস্তায় রেখে তার সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এর ফলে রাতে ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে শাসন থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। গিয়েছিলেন আইসি-সহ পাঁচ আধিকারিক। তাঁরাও আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। এর পরেই পুলিশ লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তবে এলাকায় এখনও উত্তেজনা রয়েছে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে থেকে কয়েক জনকে আটক করে রাতেই নিয়ে যাওয়া হয় শাসন থানায়। পরে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।
বারাসত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার প্রতিক্ষা ঝাড়খারিয়া জানিয়েছেন, শাসনে পুলিশের উপর আক্রমণের ঘটনায় মোট ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার তাঁদের বারাসত আদালতে পাঠানো হচ্ছে।
মৃতের পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘ছেলেটাকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। থানায় গেলে বলছে, আত্মহত্যা করেছে! ওর শরীরে একাধিক জায়গায় ক্ষত রয়েছে। এক মহিলার সঙ্গে ওর সম্পর্ক ছিল। সে-ই এ সব করিয়েছে। মহিলা হাসপাতালে গিয়েছিল। সেখান থেকে তাকে পুলিশ সরিয়ে দিয়েছে। ওরাই পুলিশের সঙ্গে মিলেমিশে আত্মহত্যার মিথ্যা গল্প সাজিয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।’’
শাসন থানার আইসি ফিরোজ আলি বলেন, ‘‘যুবকের দেহ উদ্ধারের পর তা বারাসত হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছিল। পরের দিন তাঁর পরিবারের লোকজন থানায় এসে বলেন, যুবককে খুন করা হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। আমরা প্রথম থেকেই বলেছিলাম, লিখিত আকারে অভিযোগ জানাতে। ওঁরা লিখিত অভিযোগ জানান। সন্ধ্যায় ময়নাতদন্তের পর দেহ আসে। তার পর আমরা খবর পাই, রাস্তা অবরোধ করা হয়েছে। ওদের দাবি ছিল, মহিলাকে গ্রেফতার করতে হবে। পুলিশের ক্যাম্পে গিয়ে ঢিল ছুড়তে শুরু করেন কিছু মানুষ। পুলিশের স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় ন’জনকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করানো হয়েছে।’’ বিক্ষোভের থামাতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কিতে তিনি পড়ে গিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন আইসি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy