বেহাল: ভেঙেছে দেওয়াল। বাঁশ দিয়ে ঘেরা হয়েছে রান্নাঘর। নিজস্ব চিত্র।
আংশিক ভাবে শুরু হয়েছে স্কুল। মিড ডে মিলের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে রিপোর্ট তলব করেছে রাজ্য। প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদেরই দেওয়া হয় খাবার। আশা তৈরি হয়েছে, তবে কি অচিরেই শুরু হবে সব ক্লাস? বিষয়টি রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির উপরে নির্ভর করবে বলে জানিয়েছেন সরকারি কর্তারা। স্কুলগুলি মিড ডে মিল চালু হলে সামলাতে কতটা তৈরি, তা খতিয়ে দেখল আনন্দবাজার।
ইয়াসের দাপটে বিপর্যয় নেমে এসেছে বহু স্কুলে। সেই ক্ষত এখনও মেরামত হয়নি অনেক জায়গায়।
মিড ডে মিলের রান্নাঘরের দু’দিকের জরাজীর্ণ ইটের দেওয়াল ভেঙে যায় হাটগাছা কেসিএ হাইস্কুলে। সেই জায়গা বাঁশ দিয়ে কোনও মতে ঘিরে রাখা হয়েছে। এখানে ছেলেমেয়েদের বসিয়ে খাওয়ানো মুশকিল বলে জানালেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
স্বরূপকাটি এফপি স্কুলের রান্নাঘরের দেওয়াল থেকে প্লাস্টার খসে ইট বেরিয়ে পড়েছে। দেওয়াল থেকে বালি ঝরে। চাঙড় খসে পড়ে ছাদ থেকে। সংস্কার না হলে এই ঘরে রান্না করা যাবে না বলে মত প্রধান শিক্ষকের।
নবীনগঞ্জ এফপি স্কুলের রান্নাঘরের ছাদ যে কোনও সময়ে ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অমরেশ মণ্ডল। এই রান্নাঘরেই পাশাপাশি থাকা নবীনগঞ্জ জুনিয়র হাইস্কুলের মিড ডে মিলও রান্না হয়। সংস্কার না হলে কী ভাবে রান্না হবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন দুই স্কুলের শিক্ষকেরা।
শুধু এই স্কুলগুলি নয়, একই চিত্র উঠে আসছে হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ, সন্দেশখালি ব্লকের একাধিক স্কুলে।
সন্দেশখালি ২ ব্লকের হাটগাছা কেসিএ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিয়কুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘রান্নাঘরের দেওয়াল ইয়াসে ভেঙে পড়েছে। অ্যাসবেস্টসের চালেরও ক্ষতি হয়েছে। দেওয়াল না থাকায় ফাঁকা জায়গায় উনুনে রান্না করতে বিপাকে পড়তে হবে। গ্যাসের ব্যবস্থা নেই।’’ তিনি আরও জানান, স্কুলে খাওয়ার ঘর নেই। রান্নাঘর সংস্কার ও খাওয়ার ঘর তৈরি করতে প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা লাগবে। প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও অর্থ বরাদ্দ হয়নি।
অমরেশ বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলটি গৌড়েশ্বর নদীবাঁধের পাশে। আমপান ও ইয়াসের ধাক্কায় স্কুলের কয়েকটা শৌচাগারের অ্যাসবেসস্টের চাল উড়ে যায়। ক্ষতি হয়েছে রান্নাঘরের। ওই ঘর সংস্কার না হলে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, ছাত্রদের খাওয়ার থালাও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। নবীনগঞ্জ জুনিয়র হাইস্কুলের শিক্ষক বিজয় সরকার বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে খাওয়ার ঘর নেই। তাই ক্লাস ঘরেই খেতে হয়। বহুদিন ধরেই পানীয় জলের সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে পড়ুয়াদের।’’
স্বরূপকাটির একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিরঞ্জন মণ্ডল বলেন, ‘‘রান্নাঘর দীর্ঘদিন সংস্কার হয় না। বৃষ্টি হলে ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। মিড-ডে মিল চালু হলেও এই ঘরে রান্না করা যাবে না। তা ছাড়া, স্কুলে পানীয় জলের ব্যবস্থাও নেই। পাশের টাইমকল থেকে জল এনে ব্যবহার করতে হয়।’’
হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকে পুকুরিয়া ভবানী এফপি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীপক পাত্র জানান, রান্নাঘরের অ্যাসবেসস্টের চাল আমপানে উড়ে গিয়েছে। মিড ডে মিল চালু হলে বাইরে রান্না করতে হবে। হাসনাবাদ ব্লকের খলিসাখালি আদিবাসী এফপি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা চৈতালি মজুমদার জানান, রান্নাঘরের সংস্কার প্রয়োজন। গ্যাসের সংযোগ নেই। পানীয় জলের তীব্র সমস্যা। তবে শৌচাগার, খাওয়ার ঘর রয়েছে।
এ বিষয়ে হাসনাবাদের বিডিও মুস্তাক আহমেদ বলেন, ‘‘প্রাথমিক স্কুল খোলার আগে প্রয়োজনীয় সংস্কারের কাজ করা হবে।’’ হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ী জানিয়েছেন, মিড-ডে মিলের পরিকাঠামো নিয়ে প্রাথমিক খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। স্কুল খোলার আগে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। সেই আশ্বাস দিয়েছেন সন্দেশখালি ২ বিডিও অর্ণব মুখোপাধ্যায়ও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy