হাসপাতালে সন্তানরা নিজস্ব চিত্র
তিন সন্তানকে কীটনাশক খাইয়ে নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করল মা। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে পাথরপ্রতিমার রামগঙ্গা পঞ্চায়েতের যোগেন্দ্রপুর গ্রামে। মা ও দুই সন্তান বেঁচে গেলেও এক সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম শান্তনু ভোড় (৬)।
পারিবারিক অশান্তির জেরেই এই ঘটনা বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যোগেন্দ্রপুরের বাসিন্দা রাজু ভোড় ডানলপে একটি কারখানায় কাজ করেন। তাঁর স্ত্রী শিউলি তিন সন্তানকে নিয়ে যোগেন্দ্রপুরের বাড়িতে থাকেন। বড় মেয়ে পায়েলের বয়স সাত, দুই ছেলে শান্তনু ও সূর্য্যের বয়স যথাক্রমে ছয় ও তিন। মাস কয়েক ধরে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে স্ত্রীকে সন্দেহ করতে শুরু করেন রাজু। সোমবার রাতে এসব নিয়েই ফোনে দীর্ঘক্ষণ কথা হয় রাজু ও শিউলির। এরপর মঙ্গলবার দিনভর ফোন ধরেননি রাজু। ওইদিন সন্ধ্যায় বাজার থেকে বিছে মারব বলে কীটনাশক কিনে আনেন শিউলি। রাতে সেই কীটনাশকই তিন সন্তানকে খাইয়ে নিজে খেয়ে নেন।
এ দিন ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে শুয়ে শিউলি জানান, মঙ্গলবার মাংস খাওয়ার বায়না করে শিউলির ছেলেমেয়েরা। পাড়া থেকে একটা মোরগ কিনে এনে বাড়িতে রান্না করেন শিউলি। রাতে ছেলেমেয়েরা তা পেট পুরে খায়। পরে বাজার থেকে কিনে আনা কীটনাশক জলে গুলে তাতে চিনি মিশিয়ে ছেলেমেয়েদের এক চামচ করে দিয়ে নিজেও খেয়ে নেন। কীটনাশক খাওয়ার পর পরে বটি দিয়ে বাঁ হাতের শিরা কাটার চেষ্টাও করেন তিনি। কয়েক ঘণ্টা পর শান্তনু ছাড়া বাকিদের বমি হতে শুরু করে। ভোরের দিকে নিজেই প্রতিবেশী এক আত্মীয়কে ফোনে সব জানান শিউলি। তাঁরা এসে শিউলি-সহ সন্তানদের হাসপাতালে নিয়ে যান।
কেন সন্তানদের নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা? শিউলি বলেন, “বেশ কিছু দিন ধরে স্বামী অকারণে আমার উপর সন্দেহ করত। বলত, তুই মরলে আমি শান্তি পাব। গালিগালাজও করত। আমি আর ধৈর্য্য রাখতে পারছিলাম না। ছেলে মেয়েরা আমাকে ছাড়া থাকতে পারে না। তাই ওদের নিয়েই চলে যেতে চেয়েছিলাম।” রাজু বলেন, “স্বামী-স্ত্রীতে ঝগড়া সব বাড়িতেই হয়। তেমনই আমাদের মধ্যে হত।”
রাজুর প্রতিবেশী রামগঙ্গা পঞ্চায়েতের ওই গ্রামের সদস্যর স্বামী বিষ্ণুপদ সেনাপতি বলেন, “সকাল বেলায় চিৎকার চেঁচামিচি শুনে রাজুর বাড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি তিন ছেলে মেয়ে ও ওই মহিলা মেঝেয় পড়ে রয়েছে। পাড়া থেকে মোটর ভ্যান ডেকে সকলকে স্থানীয় গুরুদাসপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে শান্তনুকে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করে। বাকিদের ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে রেফার করে দেয়।” শান্তনুর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy