মহিষমারিতে পুলিশ ক্যাম্পে আগুন। — নিজস্ব চিত্র।
ন’বছরের শিশুকে ধর্ষণ-খুনের অভিযোগে ধুন্ধুমার জয়নগরে। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে এলাকায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছে উত্তেজিত জনতা। থানা ঘিরে ফেলা হয়েছে। থানায় ভাঙচুরও করা হয়েছে বলে অভিযোগ। জয়নগরের মহিষমারিতে পুলিশ ক্যাম্পে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরে আগুন নেভাতে এলাকায় আসে দমকল। ব্যাপক উত্তেজনা রয়েছে এলাকায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে র্যাফ নামানো হয়েছে। পাল্টা লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। ছোড়া হয়েছে কাদানে গ্যাস।
শুক্রবার রাতে মহিষমারি এলাকায় পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয় এক শিশুর দেহ। পরিবার জানিয়েছে, দুপুরে কোচিং সেন্টারে পড়তে গিয়েছিল ওই শিশু। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী সে। কিন্তু কোচিং থেকে আর বাড়ি ফেরেনি। শিশুকে খুঁজে না পেয়ে মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যেরা। অভিযোগ, তাঁদের কথায় প্রথমে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তাঁদের বলা হয়েছিল, জয়নগর থানায় অভিযোগ জানাতে হবে। পরিবারের দাবি, অভিযোগের কথা শুনেই পুলিশ তৎপর হয়ে উঠলে শিশুটিকে হয়তো বাঁচানো যেত।
বাড়ি থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যেই পুকুর থেকে শিশুর দেহ খুঁজে পায় পুলিশ। তার পর সকালে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। দোষীর কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে পরিবার। সেই সঙ্গে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছে তারা।
শনিবার সকালে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে উত্তেজিত জনতা। ঝাঁটা, লাঠি, বাঁশ নিয়ে মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়িতে চড়াও হন মানুষ। থানার ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর চালানো হয়। পুলিশ ক্যাম্পে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় গুরুত্বপূর্ণ নথি। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পাশাপাশি এলাকার মানুষকে বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টাও চলছে। অ্যাডিশনাল এসপি রূপান্তর গোস্বামী বলেন, ‘‘অভিযুক্তকে আমরা গ্রেফতার করেছি। এখনও পর্যন্ত এক জনই গ্রেফতার। তদন্তের মাধ্যমে আরও কেউ জড়িত কি না, দেখা হবে। আপাতত এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। সেটাই আমাদের অগ্রাধিকার।’’
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি বলেন, ‘‘পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে আছে। আমাদের পুলিশের পুরো টিম এখানে আছে। মহেষমারি পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে এখানে। আমরা রাত ৯টা নাগাদ খবর পেয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত শুরু করি। কোথা থেকে শিশুটি নিখোঁজ হয়েছিল, কে শেষ বার তাকে দেখেছিল, এই তথ্যগুলি সংগ্রহ করেছিলাম তখনই। অভিযুক্তকে চিহ্নিতও করা হয়। জয়নগর থানায় সাড়ে ১২টা নাগাদ মামলা রুজু হয়েছে। তিন-চার ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হয়। অপরাধের কথা তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন। পুলিশ সমস্ত পদক্ষেপ করেছে। তার পরেও এলাকায় ক্ষোভ কেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ পুলিশ ক্যাম্পে আগুন ধরানোর ঘটনায় অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানিয়েছেন এসপি। শিশুটিকে খুনের আগে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই সে বিষয়ে নিশ্চিত হবেন তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy