বিকোচ্ছে এমনই ছোট ইলিশ। ছবি: দিলীপ নস্কর।
সচেতনতার প্রচারকে তোয়াক্কা না করেই ছোট ইলিশে ছেয়েছে মাছের আড়ৎ। আর তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন মৎস্যজীবীদেরই একাংশ। এই বিষয়ে মঙ্গলবারই একটি বৈঠক করেছে মৎস্য দফতর।
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ট্রলারগুলি এই সময় ইলিশ নিয়ে ফেরে। যদিও এ বছর বর্ষা দেরিতে আসায় ইলিশ খুব বেশি জালে ওঠেনি বলেই গোড়া থেকে জানাচ্ছিলেন মৎস্যজীবীরা। এ বার মৎস্য দফতরের নজরদারির অভাবেই ছোট ছোট ইলিশ ধরে ডায়মন্ড হারবারের বাজারে দেদার করা হচ্ছে বলে তাঁদেরই একাংশ অভিযোগ তুললেন। এর ফলে ভবিষ্যতে ইলিশের চূড়ান্ত আকাল হবে বলেও তাঁদের অভিযোগ।
মৎস্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোট ইলিশ ধরা সম্পূর্ণ বেআইনি। ইলিশ ধরার জন্য একটি নির্দিষ্ট মাপের জাল ব্যবহার করার কথা। সাধারণত, আকারে ২৩ সেন্টিমিটারের বেশি ও ওজন ৩০০ গ্রামের বেশি হওয়ার কথা একটি পরিণত ইলিশের। কিন্তু বাজারে যে ইলিশ মাছ এখন পাওয়া যাচ্ছে তার ওজন ৫০ থেকে ৭০ গ্রাম। লম্বায় পাঁচ থেকে সাত সেন্টিমিটার পর্যন্ত। জুন মাসের ১৫ তারিখ থেকে মাছ ধরার মরসুম হয়েছে। সুন্দরবন এলাকায় মাছ ধরতে যাওয়া নৌকাগুলি বড় মাছ নিয়ে বাজারে না ফিরলেও কিছুদিন ধরে ছোট মাছ নিয়ে ফিরছে। মৎস্যজীবীদের অনেকেই বলছেন, ইলিশের জন্য নির্ধারিত জালে কখনও এত ছোট ইলিশ ধরা পড়বে না। এক শ্রেণির অসাধু মৎস্যজীবী লুকিয়ে ছোট ফাঁসের জাল (ট্রল নেট) ব্যবহার করে ছোট মাছ ধরে সমুদ্রের ইলিশ শূন্য করার চেষ্টা করছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভাবছে না। আরও অভিযোগ ছোট ফাঁসের জাল (ট্রল নেট) সমুদ্র উপকূল থেকে ১২ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত ব্যবহার করা যায় না। সে নিয়মও মানা হচ্ছে না। সাধারণত ইলিশ মোহনাতেই ডিম পাড়ে। ফলে ছোট ইলিশ মোহনাতে আস্তে আস্তে বড় হয়। পরে গভীরে সমুদ্রে ওই ইলিশের ঝাঁক চলে যায়। অর্থাৎ সমুদ্র উপকূলের কাছাকাছি ছোট ইলিশ থাকে।
কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘‘ছোট ইলিশ ধরা বন্ধ করতে এবং অন্য কিছু বিষয় নিয়ে দিন কয়েক আগে পুলিশ প্রশাসন এবং মৎস্য দফতর নিয়ে সভা ডাকা হয়েছিল। সেখানে আলোচনা হলেও আখেরে লাভ হয়নি। মৎস্য দফতরের উচিত প্রতিটি ঘাটে, আড়তে ও মাছ বাজারে নজরদারি চালানো।’’ তিনি জানান, কয়েক বছর আগে ছোট মাছ-সহ ট্রলার ধরা পড়লেও মাছগুলো কেবল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। শাস্তির কোনও ব্যবস্থা নেই। ফলে অনেক মৎস্যজীবী ছোট মাছ ধরার সাহস পাচ্ছেন।
তবে নগেন্দ্র বাজার আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘‘ছোট মাছ আড়তে আসছে তা আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ আর মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) দক্ষিণ ২৪ পরগনা সুরজিৎ বাগ বলেন, ‘‘মৎস্য দফতর, আড়তদার ও বিভিন্ন সমিতির সদস্যদের নিয়ে সভা করা হয়েছে। সেখানে নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ছোট মাছ ধরার ক্ষেত্রে নিয়মগুলি স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে আবারও। বড় মাছের সঙ্গে ছোট মাছ ধরা পড়ে যেতে পারে। বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হবে। সামনের সপ্তাহে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে নজরদারি চালানোর ব্যবস্থা নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy