Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Drinking Water Crisis

পুকুরের জল খেয়ে এলাকায় বাড়ছে পেটের রোগ, দাবি বাসিন্দাদের

বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভোট এলে জল নিয়ে অনেক প্রতিশ্রুতি মেলে। ভোট হয়ে গেলে আর কাজ এগোয় না। এ ভাবেই চলছে বছরের পর বছর। বার বার প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হয়নি।

An image of the water crisis in Deganga

রাস্তার ধারে পড়ে রয়েছে জল সরবরাহের পাইপ। দেগঙ্গার সোহাই শ্বেতপুর পঞ্চায়েত এলাকায়। নিজস্ব চিত্র।

ঋষি চক্রবর্তী
দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২৩ ০৮:২২
Share: Save:

বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল বহু বছর আগে। অভিযোগ, ঢিমেতালে চলছে সেই কাজ। ফলে দেগঙ্গা ব্লকের ৫০ শতাংশ বাড়িতে এখনও পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছয়নি।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভোট এলে জল নিয়ে অনেক প্রতিশ্রুতি মেলে। ভোট হয়ে গেলে আর কাজ এগোয় না। এ ভাবেই চলছে বছরের পর বছর। বার বার প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হয়নি। জলের দাবিতে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা বিভিন্ন সময়ে বিক্ষোভ-অবরোধও করেছেন। তাতেও ফল মেলেনি।

এমনিতেই দেগঙ্গা ব্লক আর্সেনিকপ্রবণ। এলাকার মানুষ জানান, অধিকাংশ টিউবওয়েলেই জল মেলে না। পাম্প বসিয়েও অনেক সময়ে জল পাওয়া যায় না। এই পরিস্থিতিতে সরকারি উদ্যোগে পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা না থাকায় জলকষ্টে ভুগতে হয়। অনেকেই পুকুরের জল খান। অনেককে আবার জল আনতে পাড়ি দিতে হয় দীর্ঘপথ। দেগঙ্গা ১, চাকলা, সোহাই শ্বেতপুর, চাঁপাতলা-সহ বহু এলাকার মানুষই নিত্য ভুগছেন জল-যন্ত্রণায়।

চট্টলপাড়া এলাকার বাসিন্দা অমিত কর বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে আমাদের ব্লকের বহু জায়গায় জল নেই। বাড়িতে সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়েছি। কিন্তু তাতেও জল উঠছে না। টিউবওয়েলেও জল উঠছে না। বাধ্য হয়ে পুকুরের জল ব্যবহার করতে হচ্ছে। তাতে নানা রকম রোগ দেখা দিচ্ছে।” দেগঙ্গা ১-এর বাসিন্দা কৃষ্ণা ঘোষ বলেন, “অনেক দূর থেকে জল বয়ে আনতে হয়। এলাকায় সরকারি ভাবে জলের কোনও ব্যবস্থাই নেই। পঞ্চায়েতে জানানো হয়েছে। তার পরেও সমস্যার সমাধান হয়নি।”

সিপিএমের অভিযোগ, তাদের আমলে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু এত বছরেও সেই কাজ শেষ করতে পারেনি এই সরকার। সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আহমেদ আলি খান বলেন, “আমরা ক্ষমতায় থাকার সময়ে কাজ শুরু হয়। তৃণমূল সরকার তা এগিয়ে নিয়ে যেতে ব্যর্থ। মানুষকে সরকারি পরিষেবা দেওয়ার থেকে ওরা টাকা দিয়ে ভোট কিনতে বেশি আগ্রহী।”

বিজেপির দাবি, ২০২৪ সালের মধ্যে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য রাজ্যকে টাকা দিয়েছিল কেন্দ্র। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদেও সেই টাকা এসেছে। বরাদ্দ হয়েছে দেগঙ্গা ব্লকের জন্যেও। কিন্তু কাজ শুরু হয়েও বন্ধ হয়ে যায়। বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস মিত্র বলেন, “কেন্দ্রের টাকার সঙ্গে রাজ্যকেও টাকা দিতে হবে। রাজ্য দান-খয়রাতিতে ব্যস্ত। টাকার অভাবে কাজ করতে পারছে না। টেন্ডার কোথাও হয়েছে, কোথাও হয়নি। ফলে কাজে গতি নেই।”

উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, কিছু দিন কাজ বন্ধ থাকলেও ফের শুরু হয়েছে। জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ জ্যোতি চক্রবর্তী বলেন, “জলের ট্যাঙ্ক করতে সময় লাগে। সেই কাজও চলছে। সিপিএম দেগঙ্গায় ৩৪ বছরে পানীয় জলের পরিকাঠামো তৈরি করেনি। আমাদের শুরু থেকেই করতে হচ্ছে সব কিছু। চেষ্টা করছি, চলতি বছরে শেষ করার। ২০২৪ সালের মধ্যে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে যাবেই।” দেগঙ্গার বিধায়ক রহিমা মণ্ডল বলেন, “পাইপলাইন বসানোর কাজ চলছে। ইতিমধ্যে বহু গ্রামে জল পৌঁছে গিয়েছে। কিছু মৌজা এখনও বাকি আছে। সেখানেও দ্রুত জল পৌঁছবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Drinking Water Crisis stomach infection Deganga
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy