মধ্যমগ্রামে মেয়েকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন মা। বারাসত পুলিশ জেলা সূত্রের খবর, ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, সংসারে চরম আর্থিক অসচ্ছলতা থেকেই ওই বধূ এমন চরম পথ বেছে নিয়েছেন।
গত শুক্রবার রাতে মধ্যমগ্রামের দোহারিয়া শৈলেশনগর এলাকায় একটি বাড়ি থেকে প্রিয়াঙ্কা রায় ওরফে মধুমিতা (২৫) এবং তাঁর পাঁচ বছরের মেয়ে প্রশংসার দেহ উদ্ধার হয়। ওই ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট, ব্লিচিং পাউডার, অ্যাসিডের বোতল-সহ কেরোসিন তেলের জার উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
ঘটনার শুরু থেকেই তদন্তকারীরা মনে করছিলেন, মেয়েকে খুন করে প্রিয়াঙ্কা আত্মঘাতী হয়েছেন। কারণ, পাঁচ বছরের কোনও শিশুর পক্ষে আত্মঘাতী হওয়া সম্ভব নয়, সে ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল পুলিশ। তার উপরে সুইসাইড নোটে কাউকে মৃত্যুর জন্য দায়ী না করা হলেও, স্বামীকে প্রিয়াঙ্কা যে মেসেজ করেছিলেন তাতে লেখা ছিল, ‘‘সকালের দিকে তোমায় যা বলেছি, সেটা কাউকে বোলো না।’’
এতেও সন্দেহ হয় পুলিশের। তারা প্রিয়াঙ্কার স্বামীর সঙ্গে কথাও বলে। কিন্তু দম্পত্য কলহকে কেন্দ্র করে কিছু ঘটতে পারে, তেমন কোনও সূত্র এখনও পর্যন্ত পায়নি পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানান, ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, পাঁচ বছরের প্রশংসাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। আর প্রিয়াঙ্কার মৃত্যু হয়েছে বিষক্রিয়ায়। কিন্তু কী ধরনের বিষক্রিয়া, তা এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে জানা যায়নি বলেই পুলিশ সূত্রের খবর।
ঘটনার রাতে ঘরের খাটের উপরে পড়েছিল মেয়ে প্রশংসা। আর মা প্রিয়াঙ্কার দেহ পড়েছিল রান্নাঘরের সামনের মেঝেতে। তদন্তকারীরা জানান, প্রিয়াঙ্কার স্বামী প্রসেনজিৎ স্থানীয় একটি পিস বোর্ডের কারখানায় চাকরি করেন। ওই দম্পতির সংসারে অনটন লেগে ছিল। পুলিশের ধারণা, তার জেরেই সম্ভবত এমন কিছু ঘটেছে, যা ওই বধূকে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। কিন্তু কী ঘটল, সেটাই এখন জানতে চাইছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা জানান, প্রিয়াঙ্কার স্বামী তথা পরিবারের লোকজনের সঙ্গে বিশদে কথা বলা হবে। ঘটনার আকস্মিকতা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি প্রিয়াঙ্কার পরিবার ও প্রতিবেশীরা।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)