চাকরিহারাদের কেউ সমাজমাধ্যমে, এমনকী বন্ধুদের সঙ্গে কথোপকথন থেকেও নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখছেন, কেউ বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপন করে রয়েছেন বলেও জানা যাচ্ছে। অনেকে মানসিক চাপ নিতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলেও খবর। এমনই পরিস্থিতি বাগদা ব্লক জুড়ে। চাকরি যাওয়ার পরে গ্রামবাসীদের আবার অনেকেরই বক্তব্য, ‘‘অবশেষে সত্যের জয় হল। তবে আত্মগোপন করে কি সত্যিই কিছু আড়াল হবে?’’ বাগদার বাসিন্দা, চাকরি হারানো এক শিক্ষক বন্ধুদের ওয়টস্যাপ গ্রুপে রীতিমতো সক্রিয় থাকতেন। সুপ্রিম কোর্টের রায় বেরোনোর পরে তিনি গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। তারপর থেকে বন্ধুরা কেউ যোগাযোগ করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। এক বন্ধু তাঁর বাড়ি গিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার বন্ধু দিশাহারা, একেবারে ভেঙে পড়েছে। নিজেকে আড়াল করেছে।’’ এক শিক্ষক বাড়ির কাছেই স্কুলে পড়াতেন। পরিবারের লোকেরা জানান, নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা চলাকালীন নানা রকম টিকাটিপ্পনি শুনতে হত তাঁকে। বৃহস্পতিবার কোর্টের রায়ের পরে চাকরি হারিয়ে তিনি শ্বশুরবাড়িতে চলে গিয়েছেন। এক যুবক সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ ছেড়ে শিক্ষক হয়েছিলেন। তিনিও এখন বাড়িছাড়া। শিক্ষাকর্মী এক জন তো কোর্টের রায় শুনে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন! কয়েক জন এরই মধ্যে আশাবাদী, চাকরি ফিরে পাবেন বলে। তবে সকলের অবস্থান এক নয়। চাকরি হারানো এক শিক্ষিকা শনিবার মেয়েকে নিয়ে বেড়াতে বেরিয়েছিলেন। বললেন, ‘‘নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছিলাম। মাথা নত করে কেন ঘরে বসে থাকব?’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)