থানার সামনে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
চোর সন্দেহে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরে মৃত্যু হয়েছে যুবকের। এই অভিযোগকেকেন্দ্র করে উত্তাল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঢোলাহাট এলাকা। এ বার পুলিশি হেফাজতে মারধরের মৃত্যুর অভিযোগ তুলে ঢোলা থানার এসআই রাজদীপ সরকার এবং আইসির বিরুদ্ধে এফআইআর করলেন নিহত যুবক আবু সিদ্দিকি হালদারের বাবা। এই প্রসঙ্গে সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও জানিয়েছেন অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশি হেফাজতে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় বুধবারও থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় আইএসএফ। তাদের দাবি, মৃত আবু সিদ্দিক আইএসএফের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। রাজনৈতিক কারণে তাঁকে খুন হতে হয়েছে। সঠিক তদন্তের দাবিতে সকালেও থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ হয়েছে। তবে এফআইআর দায়েরের পর বিক্ষোভ তুলে নেন আইএসএফের কর্মী এবং সমর্থকেরা।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার ঢোলাহাটের বাসিন্দা আবু সিদ্দিক। গত ৩০ জুন তাঁর কাকা মহসিন হালদারের বাড়ি থেকে কিছু সোনার গয়না চুরি যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, চুরির পরের দিনই ঢোলাহাট থানার পুলিশ আবু এবং তাঁর কাকাকে জোর করে থানায় তুলে নিয়ে যায়। তার পর সেখানেই আবুর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ লেখানোর জন্য মহসিনকে জোর করা হয়। অভিযোগ, এমনকি শেষ পর্যন্ত জোরপূর্বক মহসিনকে দিয়ে অভিযোগ লিখিয়ে নেওয়া হয়।
থানার লকআপে দফায় দফায় আবু সিদ্দিককে পুলিশ মারধর করে বলে অভিযোগ পরিবারের। গত ৪ জুলাই ওই যুবককে কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতে হাজির করিয়েছিল পুলিশ। তখন তাঁর সারা শরীরে আঘাতের দাগ ছিল বলে দাবি করেছেন পরিবারের সদস্যেরা। আদালত অবশ্য আবু সিদ্দিকির জামিন মঞ্জুর করে। বাড়ি আসার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন যুবক। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে প্রথমে মথুরাপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে ডায়মন্ড হারবারে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে সুরাহা না মেলায় কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় আবুকে। তবে ওই হাসপাতালে শয্যা না মেলায় হাসপাতালের মেঝেতেই ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ। অবস্থার অবনতি হওয়ায় আবুকে পার্ক সার্কাসের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। সোমবার রাত ১০টা নাগাদ নার্সিংহোমেই মৃত্যু হয় আবুর। তাঁর মৃত্যুর খবর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছতেই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। ঢোলাহাট থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের সদস্যেরা। এক স্থানীয়ের কথায়, ‘‘পুলিশই এখন বড় গুন্ডা। দোষী পুলিশদের কঠোর শাস্তি চাই।’’ মৃতের মা তসলিমা বিবি সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাওয়ের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। এই প্রসঙ্গে কোটেশ্বর জানান, আদালতে হাজির করানোর সময় আবুর কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল না। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy