পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি ঘিরে চলছে বিক্ষোভ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
আমপানে ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার সকালে গাইঘাটার জলেশ্বর ১ পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য সুপর্ণা বিশ্বাসের বাড়িতে চড়াও হয়ে বিক্ষোভ দেখালেন মহিলারা।
ব্লকের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের অভিযোগ, ওই পঞ্চায়েত সদস্য দুর্নীতিতে জড়িত। আমপানে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তেরা সরকারি টাকা পাননি। যাঁদের পাকা বাড়ি, ক্ষতিগ্রস্ত হননি— এমন অনেকে সরকারি টাকা পেয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত না হয়েও টাকা পাওয়ার তালিকায় রয়েছেন শাসক বা বিরোধী দলের নেতানেত্রী, পঞ্চায়েত সদস্য বা তাঁদের আত্মীয়স্বজন। সরকারি কর্মীরাও টাকা পেয়েছেন বলে অভিযোগ গ্রামের কিছু মানুষের। মহিলারা বলেন, ‘‘আমরা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও টাকা পাইনি। অথচ পাকা বাড়ির মালিকেরা টাকা পেয়েছেন।’’ আলপনা হালদার নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ে আমার ঘরের টিনে চাল উড়ে গিয়েছে। আমি কোনও ক্ষতিপূরণ পাইনি। আমরা টাকা না পেলে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়েও টাকা পেয়েছেন, তাঁদের টাকা ফেরত দিতে হবে।’’ অঞ্জনা দাস নামে এক মহিলার অভিযোগ, পঞ্চায়েত সদস্য ৩০ জনের তালিকা তৈরি করেছেন, যাঁদের সম্পূর্ণ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই তালিকায় পঞ্চায়েত সদস্য তাঁর আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতদের নাম ঢুকিয়েছেন। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তেরা অনেকেই বাদ গিয়েছেন।
সুপর্ণা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত সকলের নামই তালিকায় দিয়েছিলাম। কারা টাকা পেয়েছেন, তা আমাকে কেউ জানাননি। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের বিডিও অফিসে গিয়ে খোঁজ নিতে হবে, কেন তাঁরা টাকা পাননি।’’ পঞ্চায়েতটি তৃণমূলের দখলে। প্রধানের স্বামী বাচ্চু সাহা অবশ্য তালিকা তৈরি নিয়ে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ হয়নি বলেই
দাবি করেছেন। তবে গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের গোবিন্দ দাস বলেন, ‘‘ওই পঞ্চায়েত-সহ অনেক পঞ্চায়েত থেকেই প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ টাকা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।’’ তালিকা তৈরি নিয়ে অস্বচ্ছতার অভিযোগও তিনি স্বীকার
করে নিচ্ছেন। গাইঘাটা ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লকের প্রায় সাড়ে ৮ হাজার মানুষের নাম ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় তুলে জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তার মধ্যে ১ হাজার মানুষ ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। গ্রামবাসীর দাবি, ক্ষতিপূরণের তালিকা তৈরি বা সরকারি টাকা পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত সব দলের সদস্যেরাই এককাট্টা হয়েছেন। গাইঘাটার বিডিও বিব্রত বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত না হয়েও যদি কেউ টাকা পেয়ে থাকেন, তা আমরা জানতে পারলে তদন্ত করছি। অভিযোগ সঠিক হলে টাকা ফিরিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ব্লকে ৫ জন মানুষ টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন।’’ নতুন করেও ক্ষতিপূরণের জন্য বিডিও অফিসে আবেদন করেছেন। গোবিন্দ বলেন, ‘‘নতুন করে ৩০ হাজার মানুষ আবেদন করেছেন। সব আবেদন খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
গাইঘাটায় বিজেপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘তথ্য-প্রমাণ দেওয়া হোক। দল ব্যবস্থা নেবে। তবে সেটাই যথেষ্ট নয়। রাজ্য সরকারও আইন মেনে ব্যবস্থা নিক। তাদের দলের যাদের দুর্নীতি সামনে আসছে, তাদের বিরুদ্ধেও আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। দোষীদের সাজা হোক, এটাই চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy