(বাঁ দিকে) বন্ধ দোকানপাট। (ডান দিকে) মাস্ক না পরায় হাতেনাতে ধরা হল এক বাইকচালককে। বৃহস্পতিবার, সোনারপুরে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
করোনার সংক্রমণ রুখতে বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকায় কড়া বিধিনিষেধ বলবৎ করেছে প্রশাসন। বাজার-দোকানপাট বন্ধ রাখার পাশাপাশি, মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা করা হয়েছে। বিধিনিষেধ না মানলে কড়া আইনি পদক্ষেপ করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা। কিন্তু তা সত্ত্বেও নাগরিকদের একাংশ বিধি মানছেন না বলে অভিযোগ। কঠোর নিয়ন্ত্রণ-বিধির প্রথম দিন, বৃহস্পতিবার সোনারপুর ও নরেন্দ্রপুর থানা এলাকায় মাস্ক ছাড়া পথে বেরোনো শতাধিক মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে বারুইপুর পুলিশ জেলা সূত্রের খবর।
অন্য দিকে, রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকা সংলগ্ন ওয়ার্ডে কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হবে বলে এ দিন জানান কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘সোনারপুর-রাজপুরে দোকানপাট বন্ধ থাকায় সেখান েথকে অনেকেই লাগোয়া কলকাতা পুর এলাকার ওয়ার্ডে আসছেন। তাই পুরসভার ১০৮, ১০৯, ১১১, ১১২, ১১৩, ১১০ ও ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের একাংশে কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হবে।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, বৃজি, পঞ্চসায়র, আনন্দপুরের মাদুরদহ, মুকুন্দপুর, কালিকাপুর, বাঁশদ্রোণী, কংগ্রেসনগর, রেনিয়া, আতাবাগান, বৈষ্ণবঘাটা, পাটুলি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় মাইক্রো-কন্টেনমেন্ট জ়োন করার কথাও ভাবা হচ্ছে। যেখানে প্রকোপ বেশি, সেখানে বেশি করে নজরদারি চালানো হবে।
এ দিন সোনারপুরের আইসি সঞ্জীব চক্রবর্তী এবং নরেন্দ্রপুরের আইসি অনির্বাণ ঘোষের নেতৃত্বে পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের বাহিনী বিভিন্ন বাজার, বাস ও অটোস্ট্যান্ড, এলাকার বড় রাস্তা এবং অলিগলিতে টহল দেয়। সোনারপুর, রাজপুর, হরিনাভি, কামালগাজি, বালিয়া, গড়িয়া মোড় ও গড়িয়া স্টেশন চত্বরে বিশেষ অভিযান চালানো হয়। সচেতনতার প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে মাস্কও বিলি করা হয়। আর সেখানেই পথচলতি মানুষ থেকে অটো এবং বাসচালকদের মাস্ক না পরার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
এ দিন রাজপুর-সোনারপুরের প্রায় সব দোকান-বাজারই বন্ধ ছিল। অলিগলিতেও অধিকাংশ দোকান বন্ধ রাখা হয়। সকালের দিকে বিভিন্ন পাড়ার কয়েকটি দোকান খোলা হলেও পুলিশের ধমক খেয়ে পরে সেগুলিও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ দিন পুর প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান-সহ এলাকার বিধায়কেরাও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। পুর প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান পল্লব দাস বলেন, ‘‘এত রকম প্রচার ও গত দু’দফায় সংক্রমণের ভয়াবহ পরিস্থিতির অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও সচেতনতা বাড়ছে না। সব দায়িত্বই প্রশাসনের। পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। কিছু মানুষের জন্য ফের ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তাঁদের শাস্তি পাওয়া উচিত।’’ এ দিন সোনারপুর উত্তরের বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম বলেন, ‘‘মানুষের সচেতনতা যে কবে ফিরবে, তা বোঝা যাচ্ছে না। প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় নিয়ে অমরত্ব লাভ করে ফেলেছেন বলে মনে করছেন অনেকেই। এই ভাবনাই ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। আগামী কাল থেকে আমিও পুলিশের সঙ্গে অভিযানে শামিল হব। আরও কড়াকড়ি করতে হবে।’’
সোনারপুর মোড়ে কর্তব্যরত এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘বহু দরিদ্র মানুষ মাস্ক কিনতে পারছেন না। আমরা তাঁদের মাস্ক বিলি করছি। অনেকেই অবশ্য মাস্ক পকেটে নিয়ে পথে ঘুরছেন। আর সব ক্ষেত্রে পুলিশ-প্রশাসনের দোষ খুঁজে বেড়াচ্ছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy