স্কুলে শিক্ষক ছিলেন মোট ন’জন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারালেন আট শিক্ষকই, তার মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকও আছেন! গোসাবার ছোট মোল্লাখালি পঞ্চায়েতের মঙ্গলচন্দ্র বিদ্যাপীঠে প্রায় সাড়ে ন’শো পড়ুয়ার জন্য বর্তমানে স্থায়ী শিক্ষকের সংখ্যা আপাতত মাত্র এক জন! একাই রয়ে গেলেন শঙ্কর সর্দার নামে এক শিক্ষক। শুক্রবার স্কুলের পরীক্ষা প্যারাটিচার, শিক্ষাকর্মী ও পরিচালন কমিটির সদস্যদের দিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে আগামী দিনে কী ভাবে স্কুল চলবে, তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত পরিচালন কমিটি ও অভিভাবকেরা।
যেখানে স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা থাকার কথা ছিল অন্তত ১৮ জন, সেখানে ছিলেনই অর্ধেক। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে চাকরিহারা এ দিন কেউ স্কুলে আসেননি। পরিচালন কমিটির সভাপতি স্বপন রায় বলেন, “যিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন, তিনিও বাতিলের তালিকায় পড়েছেন। কী ভাবে যে স্কুল চলবে, বুঝতে পারছি না। পরিচালন কমিটির সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আপাতত গ্রামের কয়েক জন শিক্ষিত যুবক-যুবতীকে অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ করে পঠনপাঠন স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হবে।’’
অভিভাবক তথা স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তারক ঘরামি বলেন, “ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তো কেউ ভাবে না। কী যে হবে ওদের বুঝতে পারছি না। রাতারাতি একটা স্কুলের পরিকাঠামো সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। তবে আমরা গ্রামের মানুষজন একত্রিত হয়েছি। যাতে স্কুল ঠিক ভাবে চলে, সেই চেষ্টা করছি।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্যানিং মহকুমা স্কুল শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “শুধু মঙ্গলচন্দ্র বিদ্যাপীঠ নয়, আরও বেশ কয়েকটি স্কুলেও এক ধাক্কায় অনেক শিক্ষক চাকরিহারা হয়েছেন। সেই স্কুলগুলিও সমস্যায় পড়েছে।”
চাকরি হারানো শিক্ষকেরা বলছেন, যোগ্যতা থাকার ফলেই প্রায় দশ বছর ধরে তাঁরা পড়িয়েছেন। পড়ুয়াদের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। সেই সংযোগ ছিঁড়ে গেল!
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)