ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ স্মরণের মঞ্চে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র
সুর বেঁধে দিয়েছিলেন সকাল ৭টা ৩ মিনিটের টুইটে। ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে দাও, মেশিন নয় ব্যালট চাই’— এটাই যে হতে চলেছে এ বারের শহিদ স্মরণ সমাবেশের কণ্ঠস্বর, তা ওই টুইটেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রোদ যত চড়ল, মমতাও যেন ততই তেতে উঠলেন বিজেপির বিরুদ্ধে। কাটমানি-বিক্ষোভকে চ্যালেঞ্জ করে বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা স্লোগান তুললেন— ‘ব্ল্যাকমানি ফিরিয়ে দাও’। সে দাবিতে রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ শুরু করার নির্দেশও দিয়ে দিলেন দলকে। আর একুশের মঞ্চ থেকে বাম-কংগ্রেসকে তৃণমূলনেত্রীর বার্তা, যে ডালে বসে আছেন, সেই ডালটাই কাটা বন্ধ করুন।
শহিদ স্মরণের এটা ছিল ২৬ বছর। কিন্তু এ বারের শহিদ স্মরণ সমাবেশের প্রেক্ষিত ছিল একেবারেই আলাদা। ক্ষমতায় আসার আগে পর্যন্ত বিরোধী দল হিসেবে শহিদ স্মরণের আয়োজন করত তৃণমূল। ২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদল ঘটার পর থেকে স্বাভাবিক ভাবেই এক লাফে বেড়ে যায় একুশের সমাবেশের জৌলুস এবং আয়োজন। রাজ্য জুড়ে একচ্ছত্র দাপটে বিরাজ করা একটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশের মেজাজ যেমন হওয়া উচিত,ঠিক সেই মেজাজেই হত শহিদ স্মরণ। কিন্তু এ বার সেই দাপটের আবহে আয়োজিত হয়নি সমাবেশ। বিরোধী আসনে নয়, এখনও এ রাজ্যে শাসকের আসনেই রয়েছে তৃণমূল। কিন্তু কয়েক মাস আগে হওয়া লোকসভা নির্বাচনে বড়সড় ধাক্কার মুখে পড়েছে দল। সেখানেই শেষ নয়, বরং রক্তক্ষরণ তার পরেও অব্যহত। এই রকম এক বেনজির আবহে কী বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সে দিকে নজর ছিল গোটা রাজ্যের।
এ দিনের ভাষণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় আগাগোড়াই ছিলেন তীব্র আক্রমণাত্মক। শহিদ স্মরণের সমাবেশে গত কয়েক বছর ধরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মূল নিশানায় থাকছিল বিজেপি। এ বারও তাই। কিন্তু এ বারের আক্রমণের ঝাঁঝ অন্যান্য বছরের আক্রমণকে ম্লান করে দিয়েছে।
বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রে (ইভিএম) ভোট নেওয়া চলবে না, ব্যালট ফেরাতে হবে— এই দাবি অনেক দিন ধরেই তুলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিনের সভা থেকে আরও জোর দিয়ে তিনি সে দাবি তুলেছেন। লোকসভা নির্বাচনে দেশ জুড়ে যে গেরুয়া ঝড় দেখা গিয়েছে, তা আসলে ঝড়, নাকি ভোটযন্ত্রের ‘কারসাজি’, সে প্রশ্ন এ দিন আরও জোর দিয়ে তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির ফলাফল এত ভাল কী ভাবে হল, সে প্রশ্ন তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘কী করে হল? কেমন করে হল? যত আসন পাবে বলেছিল, তাই পেল! অঙ্কটা মিলে গেল কী করে?’’ মমতা বলেন, ‘‘আমি এখনও মনে করি, ২০১৯ সালে যে ভোটটা হয়ে গেল, সেটা একটা মিস্ট্রি (রহস্য)। এটা হিস্ট্রি (ইতিহাস) নয়, এটা মিস্ট্রি। তাই তো বলি, ইভিএম চাই না, ব্যালট চাই।’’ তাঁর স্লোগান, ‘ব্যালট ফেরাও, গণতন্ত্র বাঁচাও।’ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আওতায় হওয়া পঞ্চায়েত এবং পুরসভা ব্যালটেই হবে বলে এ দিন ফের ঘোষণা করেন তিনি (যদিও পঞ্চায়েত ভোট এত দিনও ব্যালটেই হত)।
ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ দিবসের সভায় দলনেত্রী। মঞ্চে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। —নিজস্ব চিত্র
আরও পডু়ন: ‘অনেকেই এখন হাওয়া মাপছে, তাই ওদের ভিড়টা এ বার ফিকে’ বলছে মিছিলের মুখ
তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠস্বর এ দিন সবচেয়ে চড়া ছিল ‘কাটমানি’ বিক্ষোভের বিরোধিতায়। তৃণমূল কাউন্সিলরদের নিয়ে নজরুল মঞ্চে আয়োজিত এক সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই ‘কাটমানি’ প্রসঙ্গ তুলেছিলেন এবং অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পুরোপুরি পৌঁছতে না দিয়ে সে টাকায় ভাগ বসানোর প্রবণতা তিনি বরদাস্ত করবেন না বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সে দিন জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর সেই মন্তব্যকেই হাতিয়ার করে বিরোধী দলগুলো এবং রাজ্যের নানা প্রান্তে তৃণমূলের টিকিটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়। এই বিক্ষোভের বিরুদ্ধেই এ দিন সুর চড়িয়েছেন মমতা।
সাধারণ মানুষের প্রাপ্যে যেন অন্য কেউ ভাগ না বসায়, তা নিশ্চিত করতেই তিনি কাটমানির কথা বলেছিলেন, তারই অপব্যাখ্যা করছে বিজেপি, অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাঁঝালো আক্রমণে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি একটা মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে বললাম! আর বিজেপির নেতারা এলাকায় এলাকায় গিয়ে বলছে, টাকা ফেরত দাও। তুই সবচেয়ে বড় ডাকাত, তুই তৃণমূলকে বলছিস টাকা ফিরিয়ে দাও!’’
কাটমানির পাল্টা স্লোগান তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ব্ল্যাকমানি ফিরিয়ে দাও’। বিজেপির দিকে আঙুল তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ব্ল্যাক মানির জবাব চাই, জবাব দাও। নির্বাচনের খরচ কোথা থেকে এসেছে, জবাব দাও।’’ এ কথা বলেই দলকে নেত্রীর নির্দেশ, ২৬ এবং ২৭ জুলাই বিজেপির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে পথে নামতে এবং ‘ব্ল্যাকমানি’ ফেরত চাইতে। মমতার কথায়, ‘‘১৫ লাখ টাকা করে ব্ল্যাকমানি ফিরিয়ে দাও। আগে ফিরিয়ে দাও, তার পরে বিজেপির ঝান্ডা ধরবে।’’
‘কাটমানি’র বিরুদ্ধে মমতার পাল্টা স্লোগান, ‘ব্ল্যাক মানি ফিরিয়ে দাও’। ছবি: পিটিআই
বিজেপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই নাম না করে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষকে আক্রমণ করেন তিনি। অসমিয়া গামছাকে মাঝেমধ্যেই উত্তরীয় হিসেবে ব্যবহার করেন দিলীপ। ‘গামছাবাবু’ বলে সম্বোধন করে উজ্জ্বলা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘উজালা (উজ্জ্বলা) বের করব? কী গামছাবাবু? উজালাটা একটু বের করি! খাপটা খুলি একটু!’’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘উজালা কেসে আমি চাই তদন্ত হোক। তার কারণ অনেকেই অভিযোগ করেছেন।’’
দিলীপ ঘোষ অবশ্য সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেছেন, রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেই রয়েছেন। পারলে তদন্ত করুন, দুর্নীতি প্রমাণ করে দেখান।
বিজেপি-কে আক্রমণের ফাঁকেই অল্পক্ষণের জন্য হলেও এ দিন রাজ্যের অন্য দুই বিরোধী দলের উদ্দেশেও নিজের বার্তা দিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘‘সিপিএম এবং কংগ্রেসকে বলব, যে ডালে বসে আছ, সেই ডালটাকে না কেটে, বিজেপির বিরোধিতা কর।’’ বলেন মমতা। তিনি বলেন, সিপিএম বা কংগ্রেসের ভোট বা সমর্থন তাঁর প্রয়োজন নেই, কিন্তু বিজেপি-কে সাহায্য করা ওই দুই দলের উচিত নয়। মমতা বলেন, ‘‘বিজেপি একটা পরগাছা এখানে। নিজের কোনও ক্ষমতা নেই, কিচ্ছু নেই। কখনও সিপিএমের কানে কানে উঁকি মারে, কখনও কংগ্রেসের কানে কানে উঁকি মারে, আর তিনটে দল একসঙ্গে কাজ করে।’’
আরও পড়ুন: সঙ্কট বাড়ছে কুমারস্বামীর! আস্থা ভোটে যাবেন না, ফের জানালেন ‘বিদ্রোহী’ বিধায়করা
একুশের সমাবেশে যোগ দিতে কলকাতায় আসার পথে বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল কর্মীদের বাধা দেওয়া হয়েছে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘অনেক জায়গায় ট্রেন বন্ধ করে দিয়েছে, বাস আটকেছে।’’ যেখানে যেখানে তৃণমূল কর্মীদের আটকানো হয়েছে, সেখানে সেখানে সোমবার প্রতিবাদ মিছিল হবে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন। তবে বাধা দিয়েও যে লাভ হয়নি, সে কথা এ দিন বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তৃণমূল চেয়ারপার্সন। এ বারের সমাবেশকে দেখে ব্রিগেড সমাবেশ বলে মনে হচ্ছে— এই রকম মন্তব্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন করেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি সভামঞ্চে আসার সময়ে দেখেছেন যে, রেড রোডে ২-৩ লক্ষ লোক দাঁড়িয়ে রয়েছেন। ময়দানে বসেও অনেকে ভাষণ শুনছেন বলে তিনি দাবি করেন।
টলিউড থেকে বেশ কিছু তারকার বিজেপি-তে যোগদান প্রসঙ্গেও এ দিন বিজেপি-কে কটাক্ষ করেন মমতা। একই লোককে বার বার যোগদান করানো হচ্ছে, দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অভিনেত্রী অঞ্জনা বসুকে একাধিক বার বিজেপি-তে যোগদান করানো হয়েছে বলে মন্তব্য করে মমতা বলেন, ‘‘একই লোককে নিয়ে বার বার যোগদান করাচ্ছে। লজ্জা নেই! তোর যদি লোক না থাকে, তা হলে আমার থেকে ধার নে না! আমি দিয়ে দিচ্ছি এক-দু’টো।’’
তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই এ দিন আরও কয়েক জন টলি তারকা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে গিয়ে তাঁরা এ দিন বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম রিমঝিম মিত্র। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে রিমঝিম বলেন, বাংলা ফিল্ম ও টেলিভিশন ইনডাস্ট্রিতে কারও কারও ‘একচ্ছত্র আধিপত্য’ চলছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন এবং তাঁকে কোণঠাসা করা হচ্ছে বলেও রিমঝিম এ দিন মন্তব্য করেন।
কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘অটলজির সরকারও দেখেছি, আর এখনও দেখছি। আজকে যা ইচ্ছে বিল নিয়ে আসা হচ্ছে,দেখতে দেওয়া হচ্ছে না, মধ্যরাতে বিল নিয়ে আসা হচ্ছে, সকালে পাস করিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ কী বিল পাস হচ্ছে, কারও জানা নেই— অভিযোগ তৃণমূল চেয়ারপার্সনের।
শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। —নিজস্ব চিত্র
কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে ব্যবহার করেও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত হানা হচ্ছে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন ফের অভিযোগ করেন। সিবিআই বা ইডি-র মতো তদন্তকারী সংস্থা এ রাজ্যে যে সব অভিযোগের তদন্ত করছে, সে প্রসঙ্গ টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শতাব্দীকে (শতাব্দী রায়) ডেকেছে, প্রসেনজিৎকে ডেকেছে, ঋতুপর্ণাকে ডেকেছে, আরও অনেককেই ডাকবে। ডেকেই বলছে, তুমি বিজেপির অমুক লোকের সঙ্গে যোগাযোগ কর। যোগাযোগ করলে তোমার কিছু হবে না। আর না হলে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় হতে হবে, তাপস পাল হতে হবে।’’
শহিদ স্মরণের মঞ্চ থেকে এ দিন ফের বিজেপি-কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারি, ‘‘ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেব।’’ বিজেপি বাংলার সংস্কৃতিকে ধ্বংস করছে, মনীষীদের অপমান করছে— এ অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেও করেছেন। এ দিন সে কথাই আরও জোর দিয়ে উচ্চারণ করে মমতার মন্তব্য, ‘‘রবীন্দ্রনাথের গায়ে হাত দেবে না, বিদ্যাসাগরের গায়ে হাত দেবে না, রামমোহনের গায়ে হাত দেবে না, বিরসা মুন্ডার গায়ে হাত দেবে না, গাঁধীজির গায়ে হাত দেবে না, মৌলানা আজাদের গায়ে হাত দেবে না, আম্বেডকরের গায়ে হাত দেবে না। না হলে আমরা কিন্তু সবচেয়ে বিপজ্জনক, ডেঞ্জার লেভেল ক্রস করে যাব, মনে রাখবে।’’
এ দিনের সভায় উল্লেখযোগ্য অনুপস্থিতি ছিল কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্তর। শোভনের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, শনিবার রাত পর্যন্তও তাঁকে ধর্মতলার মঞ্চে হাজির থাকার জন্য বার্তা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তিনি আসেননি। যদিও তৃণমূলের তরফে শোভনকে বার্তা পাঠানোর কথা স্বীকার করা হয়নি। সব্যসাচী দত্তকে অবশ্য শহিদ স্মরণের মঞ্চে আনার চেষ্টা হয়নি বলেই তৃণমূল সূত্রে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy