রকমারি আঙ্গোট
সামনেই বিয়ে, তালিকা মেনে সব গয়না কিনে ফেলেছেন। কিন্তু নারী দেহের সর্বশেষ অলঙ্কার কিনেছেন তো? নূপুর ছাড়াও পায়ের আরও একটি অলঙ্কার হল চুটকি বা আঙ্গোট। সাজের জন্য তো বটেই, এ ছাড়াও এই গয়নার নেপথ্যে রয়েছে সনাতন ধর্মের রীতি ও জ্যোতিষশাস্ত্রীয় তাৎপর্য। রয়েছে পৌরাণিক কাহিনি ও আয়ুর্বেদিক গুরুত্বও। সাধারণত রুপোর আঙ্গোট পরেন বিবাহিত নারীরা।
পাথর বসানো, নকশা করা, চেন দেওয়া, সরু-মোটা বিভিন্ন আকৃতির রকমারি আঙ্গোট পাওয়া যায়। বর্তমানে এটি আপামর সাজসজ্জার অঙ্গ হয়ে উঠলেও সনাতন হিন্দু ধর্মশাস্ত্র অনুযায়ী শুধুমাত্র বিবাহিত নারীরাই পরতে পারেন এই অলঙ্কার।
রামায়ণ মহাকাব্যে জানা যায়, রাবণ সীতাকে অপহরণ করে উড়ন্ত রথে করে নিয়ে যাওয়ার সময়ে সীতা তাঁর অলঙ্কার একটা একটা করে পথে ফেলে দিয়ে যাচ্ছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল রামচন্দ্রকে পথনির্দেশ দেওয়া। সেই অলঙ্কারের তালিকায় আঙ্গোটেরও উল্লেখ ছিল। শোনা যায়, ত্রেতা যুগ থেকেই পায়ের আঙুলে রূপোর অলঙ্কার পরার চল শুরু হয়। জানা যায়, বিবাহিত নারীর প্রতিটি অলঙ্কার পরিধানের পিছনে রয়েছে বিশেষ তাৎপর্য। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে কপালে টিকলি যেমন সূর্যের শক্তিকে আবাহন করে, একই রকম ভাবে আঙ্গোট নির্দেশ করে চন্দ্রের স্থিতি। মন ও মস্তিষ্ক শান্ত রাখে চন্দ্র, যা দাম্পত্যের জন্য একান্ত জরুরি।
আয়ুর্বেদ মতে, দুই পায়ের আঙুলে রুপোর আংটি পরলে ঋতুচক্র নিয়মিত থাকে। এই আংটি অনেকটা আকুপ্রেশারের মতো কাজ করে সায়াটিকা স্নায়ুর উপর চাপ প্রয়োগ করে। এতে রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে। মনে করা হয়, পায়ের দ্বিতীয় আঙুলের সঙ্গে মহিলাদের ইউটেরাসের সুস্থতার যোগ রয়েছে। পাশাপাশি শরীর শীতল রাখতে সাহায্য করে রুপো।
এই অলঙ্কার ঘিরে বেশ কিছু প্রচলিত ধারণাও রয়েছে। যেমন পায়ের আংটি যেন সোনার না হয়। কারণ সোনাকে অত্যন্ত পবিত্র ধাতু বলে মনে করা হয়। নিজের আঙ্গোট অন্য কাউকে দিতে নেই। এতে নিজের সৌভাগ্য অন্যের কাছে চলে যায়, এমনটাও শোনা যায়। বিভিন্ন জনজাতির মহিলাদের বিশ্বাস, পায়ের এই অলঙ্কার অশুভ শক্তির হাত থেকে রক্ষা করে। এমনকি, রোগ-ব্যাধি থেকেও দূরে রাখে।
এই প্রতিবেদনটি ‘সাত পাকে বাঁধা’ ফিচারের অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy