টলিপাড়ার চেনামুখ সন্দীপ্তার সমাজমাধ্যমের পাতা হাতড়ালে তাঁর একক ভ্রমণের বেশ কিছু সুন্দর ছবি চোখে পড়বে। ছবি: ফেসবুক।
সঙ্গী বলতে শুধু দু’-একটা ব্যাগ। আর কেউ নেই। কারও কথা শোনার নেই। নিজের মর্জি মতো চলা। খেয়ালখুশি মতো ঘুরে বেড়ানো। পাহাড় কিংবা সমুদ্র— একেবারে নতুন একটি জায়গাকে একা একা চিনতে শেখা। নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়া। পরিস্থিতি প্রতিকূল হলেও, নিজের বুদ্ধি দিয়ে কাটিয়ে ওঠা। নিজেকে নতুন করে চেনা। খারাপ লাগা, বিষণ্ণতা ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাওয়া। ‘সোলো ট্রিপ’-এর আসল প্রাপ্তি এগুলিই। ভ্রমণপিপাসুদের মধ্যে ক্রমশই বাড়ছে একলা সফরের প্রবণতা। কেউ মনে করেন, এই একক ভ্রমণ আসলে ব্যক্তি স্বাধীনতার উদ্যাপন। আবার কারও মতে, একা ঘুরতে যাওয়া মানে অন্তরের চেতনার সঙ্গে একাত্মতার সফর।
এ সব ‘সোলো ট্রিপ’-এর উদ্দেশ্য যা-ই হোক, চেনা পরিবেশ, জীবনের চেনা ছন্দ ছেড়ে নিজের সঙ্গে সময় কাটাতে অনেকেই বেড়িয়ে পড়েন অজানার পথে। শুধু যে সাধারণের মধ্যে ব্যক্তি স্বাধীনতা উদ্যাপনের বাসনা রয়েছে, তা তো নয়। টলিপাড়ার তারকারও এক কাঠি এগিয়ে এই বিষয়ে। দুর্গাপুজোয় লম্বা ছুটি পেতেই অর্ধেক টলিপাড়া ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল শুধু সোলো ট্রিপের হাতছানিতে। সামাজিক মাধ্যমে তারকাদের সেই একলা সফরের ছবি চোখে পড়বে। আর তখনই মনের মধ্যে একটা বড় প্রশ্ন জাগবে, ঘুরতে যদি একাই যাবেন, তা হলে ছবি তুলে দেবে কে? ক্যামেরার নেপথ্যে কার হাত? তারকাদের ক্ষেত্রে মাঝেমাঝে এই প্রশ্নের উত্তর ছবিতেই থাকে। রোদচশমায় ফুটে ওঠে অন্য কোনও চেনা তারকার মুখের অবয়ব। কিন্তু সব ক্ষেত্রে তো এমন হয় না। এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা সত্যিই একা ঘুরতে ভালবাসেন।
সময় পেলেও চলে যান সোলো ট্রিপে। টলিপাড়ার চেনামুখ সন্দীপ্তা সেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম। অভিনেত্রীর সমাজমাধ্যমের পাতা হাতড়ালে তাঁর একক ভ্রমণের বেশ কিছু সুন্দর ছবি চোখে পড়বে। প্রত্যেকটিই যে নিজস্বী, এমন নয়। কোন রহস্য লুকিয়ে থাকে ক্যামেরার আড়ালে? সন্দীপ্তার কথায়, ‘‘আমাকে অনেকেই এ কথা জিজ্ঞাসা করেন। আমি এখনও পর্যন্ত দু’টো সোলো ট্রিপে গিয়েছি। হিমাচলপ্রদেশ আর গুজরাতের কচ্ছের রান। আমি সাধারণত বিমানবন্দর থেকেই একটি গাড়ি ভাড়া করে নিই। গোটা সফরে এক জন গাড়িরচালকই থাকেন। দু’বার আমি দু’জন খুব ভাল চালক পেয়েছিলাম। যাঁরা একাধারে দারুণ ছবিও তোলেন। ওঁরা না থাকলে সত্যিই কী ভাবে ছবি উঠত, জানি না।’’
সব সময়ে কিন্তু সন্দীপ্তার মতো এমন গাড়িচালক না-ও পেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে কি একলা সফরের স্মৃতি শুধু মনেই থাকবে? ফোনে কিংবা ক্যামেরায় থাকবে না? তা তো হয় না। একা ঘুরতে গিয়ে ছবি তোলার উপায় জানা থাকলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন কিছু সরঞ্জামও।
ট্রাইপড
ঘুরতে গিয়ে কাউকে ছবি তোলার কথা বলতে লজ্জা পেতে পারেন অনেকেই। সে ক্ষেত্রে সঙ্গে নিয়ে যান একটি ট্রাইপড। ফোন কিংবা ডিএসএলআর, ছবি তুলতে সাহায্য করবে ট্রাইপড। টাইমার সেট করে দেওয়ার সুবিধা রয়েছে। তা ছাড়া ট্রাইপড চালনা করতে রিমোটও পাওয়া যায়। সেটা রাখতে পারেন। ট্রাইপডের উপরে ক্যামেরা কিংবা ফোন আটকে দিন। তবে বেড়াতে গিয়ে সব সময় টাইমার সেট করার কথা মনে থাকে না। সেক্ষেত্রে সেল্ফ টাইমার মোড চালু করে রাখুন। তাহলে আর আলাদা করে টাইমার সেট করার কথা মনে না থাকলেও দারুণ সব ছবি উঠবে। আবার সবার কাছে ট্রাইপড না-ও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে উঁচু কোনও স্থানে ক্যামেরাটি রাখুন। পাঁচিল অথব টেবিল জাতীয় কিছুর উপর ক্যামেরাটা সাবধানে রেখে ছবি তুলুন।
গোরিলা পড
ট্রাইপড আড়ে এবং বহরে বেশ বড়। নিয়ে যাতায়াত করাও বেশ অসুবিধাজনক। সে ক্ষেত্রে ট্রাইপডের বিকল্প হতে পারে গোরিলা পড। আলাদা করে বহন করার ঝক্কি নেই। হাত ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে নিলেই হয়। ছবি তোলাও বেশ সুবিধার। অনেক ভাবে ইচ্ছামতো রিল, ছবি, ভিডিয়ো বানাতে পারবেন।
সেলফি স্টিক
একলা সফরে গিয়ে ছবি তুলে দেওয়ার মতো সুবিধা মতো কাউকে পেলে ফোনের ক্যামেরা তো আছে। তা দিয়েই তো তুলে নেওয়া যায় নিজস্বী। তবে কায়দা করে ছবি তুলতে গেলে সঙ্গে রাখতে পারেন সেলফি স্টিক। অনেক দূর থেকে নিজেকে ক্যামেরায় ধরতে চাইলে কিংবা গাড়ির জানলা থেকে মুখ বাড়িয়ে কায়দার ছবি তুলতে কিন্তু কাজে আসবে এই জিনিসটি।
নান্দনিক কিছু ছবি তুলুন
বেড়াতে গিয়েছেন মানেই যে শুধু নিজের অবয়ব ক্যামেরাবন্দি করতে হবে, তার কিন্তু কোনও মানে নেই। একটু অন্য রকম ছবি তোলার পরিকল্পনা করুন। সে ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারেন আঙুল, পা। ধরুন পাহাড়ে গিয়েছেন। দরজা খুললেই ধূসর কুয়াশা। সেই কুয়াশার দিকে আপনার হাতটি আলতো করে বাড়িয়ে এমন করে ছবি তুলুন, যাতে মনে কুয়াশার গায়ে হাত বোলাচ্ছেন আপনি। কাচের মতো স্বচ্ছ পাহাড়ি নদীর জলে পা ডুবিয়ে কবিতার মতো ছবিও কিন্তু তুলে ফেলতে পারেন।
আলাদা কিছু ছবি তুলুন
এই ধরুন বেড়াতে গিয়ে একেবারে স্থানীয় একটি খাবারের রেস্তরাঁয় গিয়েছেন। নতুন পদ চেখে দেখেছেন। তবে শুধু মনে রাখলেই তো হবে না। ফোনেও তুলে রাখতে হবে। ছবি তুলুন খাবারের। কোনও খাবার পছন্দ হলে শেফের সঙ্গেও নিজস্বী তুলে রাখুন। আপনার একলা সফরের ছবি সবার চেয়ে আলাদা হতে বাধ্য।
বার্স্ট মোড মন্দ নয়
অধিকাংশ ক্যামেরা এবং ফোনেই এই বৈশিষ্ট্য রয়েছে। একসঙ্গে অনেকগুলি ছবি তোলার জন্য এটি আদর্শ। ‘বার্স্ট মোড’ চালু করে নিজস্বী তুলতে চাইলেও তা করতে পারেন। আর এমনি ছবি তুলতে চাইলে সে ক্ষেত্রে ট্রাইপডে ফোন কিংবা ক্যামেরা বসিয়ে টাইমার সেট করে বার্স্ট মোড চালু করে দিন। তার পর নানা ভঙ্গিতে একসঙ্গে অনেকগুলি ছবি তুলে ফেলুন।
মিষ্টি কথায় সাহায্য চান
একা ঘুরতে গিয়ে ছবি তোলা নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই, যদি আপনি খুব মিশুকে হন। ছবি তুলে দেওয়ার জন্য আশপাশের কাউকে অনুরোধ করতেই পারেন। ছবি তুলে দেওয়ার অনুরোধ করলে কেউ আপনাকে ফেরাবেন না বলেই আশা করা যায়। সঙ্গে যদি গাইড থাকেন, তা হলে তো সোনায় সোহাগা। তাঁকে বললে তিনিই আপনার ছবি তুলে দিতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy