n মধ্যমণি: ম্যাচের পরে ধোনি, ঋষভ, রায়না, মইনদের আড্ডা। টুইটার
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মন্থর ব্যাটিং নিয়ে জোরাল চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে ক্রিকেট মহলে। সব চেয়ে বেশি করে প্রশ্ন উঠছে যে, ধোনি নিজে বড় শট খেলতে পারছেন না বুঝেও কেন নিজেকে পিছিয়ে নিচ্ছেন না ব্যাটিং অর্ডারে? কেন রবীন্দ্র জাডেজার মতো কাউকে বসিয়ে রেখে তিনি নিজে নামতে যাচ্ছেন?
জাডেজা কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে হারা ম্যাচ জিতিয়ে দিয়েছিলেন চেন্নাইকে। অথচ, তার পর ব্যাটিংয়ে উপরের দিকে ওঠানো তো দূরে থাক, ধোনি তাঁকে পিছনে ঠেলে দিচ্ছেন। সোমবারের ম্যাচে জাডেজা খেলতে পারেন মাত্র ২ বল। ধোনি ২৭ বল খেলে করেন ১৮ রান, স্ট্রাইক রেট ৬৬-র সামান্য বেশি। গোটা ইনিংসে একটিও বাউন্ডারি মারতে পারেননি তিনি, যা বিস্ময়কর। বোঝাই যাচ্ছে, ফিনিশার এবং পুরনো সেই আগ্রাসী ব্যাটিং এখন ধোনির ক্ষেত্রে অতীত।
সম্প্রচারকারী চ্যানেলে কথা বলতে গিয়ে ধারাভাষ্যকার হিসেবে আইপিএলে থাকা ব্রায়ান লারা বলে দেন, ‘‘যে ধোনিকে আমরা চিনতাম, তাকে দেখা যাচ্ছে না। ও ফর্মে ফেরার চেষ্টা করছে। কিন্তু এখনও বেশ মন্থর ব্যাটিং করছে। ব্যাটে-বলে হচ্ছে, সেটা থেকে যদি ও কিছুটা শান্তি পায়। কিন্তু আগের মতো দারুণ শেষ করতে পারছে না।’’ এখানেই না থেমে লারা যোগ করেছেন যে, জাডেজাকে অবশ্যই আগে ব্যাট করতে পাঠানো উচিত। ‘‘আমার মনে হয় জাডেজাকে আগে পাঠানো উচিত কারণ ও দারুণ ফর্মে রয়েছে। চেন্নাই ব্যাটিংয়ে জাডেজার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’
তবে ধোনি কেন নিজেকে আগে ব্যাট করাচ্ছেন, তা নিয়ে লারার একটা পর্যবেক্ষণও রয়েছে। তিনি বলছেন, ‘‘ও জানে, টিম প্লে-অফে চলে গিয়েছে। তাই হয়তো ফর্মে ফেরার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ফর্মে থাকা ধোনি চেন্নাইয়ের বড় সম্পদ।’’ ঋষভ পন্থদের দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে চেন্নাই মাত্র ১৩৬ তুলতে পেরেছিল। তা-ও সেটা সম্ভব হয়েছিল অম্বাতি রায়ডুর ব্যাটিংয়ের জন্য। কাছাকাছি এসেও হারের পরে ধোনির অতিরিক্ত মন্থর ব্যাটিংয়ের আরওই সমালোচনা হচ্ছে। ধোনি নিজেও স্বীকার করে যান, তাঁদের অন্তত ১৫০ তোলার উচিত ছিল। কিন্তু যেটা তিনি বলেননি, তা হচ্ছে, সেই স্কোরে পৌঁছনো সম্ভব হয়নি তাঁর মন্থরতম ব্যাটিং এবং অধিনায়ক হিসেবে জাডেজাকে ডাগআউটে বসিয়ে রাখার সিদ্ধান্তের জন্য।
পরে বোলিংয়ের সময়েও ডোয়েন ব্র্যাভাকে কেন মাত্র দু’ওভার বল করালেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ব্র্যাভো স্লগ ওভারে বরাবরই সেরা বোলার। একেবারে শেষের দিকে আক্রমণে এসেই তিনি ম্যাচ জমিয়ে দিয়েছিলেন। দিল্লিকে ম্যাচ জেতানো শিমরন হেটমায়ারের লোপ্পা ক্যাচ লং-অন বাউন্ডারিতে তাঁর বলেই ফেলে দেন পরিবর্ত ফিল্ডার কে গৌতম। ওই ক্যাচটা ধরতে পারলে চেন্নাই হয়তো ম্যাচ জিতে যেতে পারত। অনেকেই মনে করছেন, ব্র্যাভোকে পুরো চার ওভার করালে দিল্লির কাজ আরও কঠিন হতে পারত।
চেন্নাই কোচ স্টিভন ফ্লেমিং বলে যান, শুধু ধোনিই সমস্যায় পড়েননি। ‘‘স্ট্রোক নেওয়াটাই কঠিন হয়ে গিয়েছিল। একা ধোনি যে আটকে গিয়েছিল, তা নয়। ১৩৬ রান তুলেও আমরা ম্যাচ জেতার মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পেরেছিলাম। সেটাই প্রমাণ করে পিচ কতটা কঠিন ছিল। আমরা হয়তো ১০-১৫ রান কম করেছিলাম। ধোনি হেরে গেলেও বলেছেন, ছেলেরা দারুণ লড়াই করেছে। বলেন, পিচে স্ট্রোক নেওয়া কঠিন হয়ে গিয়েছিল কারণ দু’ধরনের গতি ছিল। ‘‘কয়েকটা উইকেট হারিয়ে আমরা চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। তার পরে মেরামত হল, ১৫০ রানের লক্ষ্য নিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু আমরা রানের গতি বাড়াতে পারিনি। আমার মনে হয়েছে, পিচ কঠিন ছিল।’’ ভক্তরা অবশ্যই শুনে বাহবা দিত যদি ধোনি বলতেন ‘আমরা’ নয় ‘আমি’ পারিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy