নজরে: নিজেদের প্রমাণ করতে চান চেতন (ডান দিকে) ও ঋতুরাজ। ফাইল চিত্র।
কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠার সঙ্গে প্রস্তুতি ও স্নায়ুর চাপকে জয় করে একাধিক ম্যাচ জেতানোর ফল পেতে চলেছেন ঋতুরাজ গায়কোয়াড় ও চেতন সাকারিয়া। শ্রীলঙ্কা সফরে শিখর ধওয়নের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হতে পারে দুই তরুণ ক্রিকেটারের। বিশ্বের সব চেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ (আইপিএল) থেকেই উত্থান তাঁদের।
চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে গত মরসুমের শেষ তিনটি ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করে নজর কাড়েন ঋতুরাজ। এ বছর তাই সিএসকে অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি তাঁর উপরেই ভরসা রেখেছিলেন। মরসুমের শুরু থেকেই ওপেনিংয়ের দায়িত্ব ছিল ঋতুরাজের কাঁধে। করোনা আতঙ্কে আইপিএল বন্ধ হওয়ার আগে সাত ম্যাচে তাঁর রানসংখ্যা ১৯৬। রয়েছে দু’টি হাফসেঞ্চুরি। শ্রীলঙ্কা সফরে তরুণ ব্রিগেডের দলে তাই জায়গা হয়ে গিয়েছে পুণের ২৪ বছর বয়সি ব্যাটসম্যানের।
বাঁ-হাতি পেসার চেতন সাকারিয়া খেলেন রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে। এ বারই প্রথম আইপিএল খেলার সুযোগ পান তিনি। গুজরাতের ভরতেজ থেকে উঠে আসা চেতন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৫ ম্যাচে পেয়েছেন ৪১ উইকেট। যা খুলে দেয় আইপিএলের দরজা। রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে নতুন বলে তাঁর সুইং দেখে মুগ্ধ হন সুনীল গাওস্কর থেকে আশিস নেহরা। তাই শ্রীলঙ্কাগামী বিমানে ওঠার ছাড়পত্রও দেওয়া হয় তাঁকে।
ঋতুরাজ ও চেতন দু’জনেই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার খবরটি পেয়ে। পুণের বাড়িতে মা-বাবার সঙ্গে নৈশভোজ সেরে ওঠার সময় ফোন বেজে ওঠে ঋতুরাজের। জানতে পারেন ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন তিনি। অভিভাবকদের জানাতেই উৎসবের মেজাজ তৈরি হয় বাড়িতে। অন্য দিকে পিতৃবিয়োগের শোকে আঁধার নেমে এসেছিল চেতনের বাড়িতে। ভারতীয় দলে তাঁর সুযোগ পাওয়ার খবর কিছুটা হলেও সেই ক্ষত মেরামত করতে সাহায্য করেছে।
ধোনির নেতৃত্বে আইপিএলে খেলার সুযোগ পেয়ে উপকৃত ঋতুরাজ। শ্রীলঙ্কা উড়ে যাওয়ার আগে আনন্দবাজারকে তিনি জানান, ‘ক্যাপ্টেন কুল’-এর দেওয়া পরামর্শ মেনেই সফল হতে চান তিনি। চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলার সময় ঋতুরাজকে কী পরামর্শ দিয়েছিলেন ধোনি? শ্রীলঙ্কা উড়ে যাওয়ার আগে ফোনে ঋতুরাজ বলেন, ‘‘মাহি ভাই সব সময় আমাকে সাহায্য করত। আইপিএলে এ বার শুরুর দিকে আমি রান পাচ্ছিলাম না। আমার ওপর থেকে তবুও ভরসা হারায়নি। নিয়মিত ওপেন করিয়েছে। যে আস্থা আমার উপরে রেখেছে মাহি ভাই, সেটাই সাহায্য করেছে।’’ যোগ করেন, ‘‘মাহি ভাই সব সময় বলত, বিপক্ষের নাম দেখে না খেলতে। বলের মান অনুযায়ী ব্যাট করলেই সাফল্য পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে অনেক রকম ভাবে মাথা গরম করে দেওয়ার চেষ্টা করবে বিপক্ষ। সেই ফাঁদে পা না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল মাহি ভাই। শ্রীলঙ্কা সফরে ওর দেওয়া এই পরামর্শগুলো অনেকটাই সাহায্য করবে।’’
শ্রীলঙ্কা উড়ে যাওয়ার আগে স্পিনের বিরুদ্ধে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছেন ঋতুরাজ। বৈচিত্র বাড়িয়েছেন সুইপ, রিভার্স সুইপের মতো শটের সাহায্যে। বলছিলেন, ‘‘ঘূর্ণির বিরুদ্ধে রান করতে হলে সুইপ, রিভার্স সুইপ মারতে জানতে হবেই। সেই অস্ত্রে শান দিয়েই শ্রীলঙ্কা যাচ্ছি। আশা করি, হতাশ করব না।’’
চেতন সাকারিয়া যদিও শ্রীলঙ্কা সফরে উড়ে যাওয়ার আগে প্রস্তুতি নেওয়ার বিশেষ সুযোগ পাননি। করোনায় বাবাকে হারানোর পরে বাড়িতে মায়ের সঙ্গে সময় কাটাতে হত তাঁকে। দাদা আত্মঘাতী হওয়ার পরে বাবার মৃত্যুর দুঃসংবাদ তাঁর মা-কে মানসিক ভাবে দুর্বল করে দিয়েছে। চেতন বলছিলেন, ‘‘কী ভাবে মায়ের খেয়াল রাখব, সেটাই চিন্তা করতাম। আমি যদিও ধ্যানের মাধ্যমে নিজেকে মানসিক ভাবে চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করেছি। শ্রীলঙ্কায় ভাল কিছু করতে পারলে বাবার আত্মাও শান্তি পাবে।’’
ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পরে চেতেশ্বর পুজারার ফোনই প্রথম পান চেতন। বলেন, ‘‘চিন্টু (পুজারা) ভাই বলে দিয়েছে, চাপে পড়ার কোনও কারণ নেই। এ ভাবেই কষ্ট করে এই জায়গায় পৌঁছতে হয়। তাই কোনও রকম সমস্যা হলে প্রথমে চিন্টু ভাই-কেই জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy