অকপট: মানসিক চাপে আক্রান্ত হয়েছিলেন বাটলার। ফাইল চিত্র
মহানাটকীয় ফাইনালের সুপার ওভারের শেষ বলে নিউজ়িল্যান্ডের মার্টিন গাপ্টিলকে রান আউট করে ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ফাইনালে নামার আগে রীতিমতো টেনশনে পড়ে গিয়েছিলেন জস বাটলার। ইংল্যান্ডের উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানের ভয় ধরে গিয়েছিল যে, ফাইনালে হেরে গেলে হয়তো ক্রিকেট থেকে দূরেই সরে যেতে হবে তাঁকে।
পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে পড়ে যে, দলের মনোবিদ ডেভিড ইয়ংয়ের কাছেও ছুটতে হয়েছিল বাটলারকে। বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে ইংল্যান্ডের এক সংবাদপত্রে বাটলার বলেন, ‘‘এ বারের বিশ্বকাপ ধরে আমি আটটা ফাইনাল খেলেছি। যার মধ্যে সাতটাতেই হেরে গিয়েছিলাম। সমারসেটের হয়ে বেশ কয়েকটা ফাইনাল খেলেছি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (২০১৩) ফাইনাল খেলেছি, ইডেনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালেও দলে ছিলাম। তাই জানি, অন্য দলকে ট্রফি তুলতে দেখাটা কত যন্ত্রণার। ওই যন্ত্রণাটা আর পেতে চাইনি।’’
শুধু যন্ত্রণা পাওয়াই নয়, আরও একটা ব্যাপার নিয়ে রীতিমতো ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন বাটলার। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি সব চেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম একটা কথা ভেবে— হেরে যাওয়ার পরে আর কী ভাবে ক্রিকেট খেলে যেতে পারব। জানতাম, এ রকম সুযোগ হয়তো জীবনে আর আসবে না। লর্ডসে বিশ্বকাপ ফাইনাল। এর চেয়ে বড় মঞ্চ আর কী হতে পারে। আর আমি ভাবছিলাম, এ বারও যদি ট্রফি জিততে না পারি, তা হলে হয়তো অনেক, অনেক দিন ব্যাট হাতে তুলতে পারব না।’’
বাটলার জানিয়েছেন, মনোবিদ ইয়ংয়ের সঙ্গে কথা বলে উপকৃত হয়েছিলেন তিনি। তবে শুধু ফাইনাল নয়, বিশ্বকাপের মাঝপথেও এ রকম অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগেছিলেন বাটলার। যখন মনে হয়েছিল, সেমিফাইনালের আগেই হয়তো ছিটকে যাবে ইংল্যান্ড। বাটলার বলেছেন, ‘‘ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগেও ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কিছুতেই মানতে পারছিলাম না যে, একটা ম্যাচ হারলে আমাদের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে। একটা ম্যাচ হারলেই চার বছরের পরিশ্রম জলে চলে যাবে।’’
বাটলার ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন এই ভেবে যে, সেমিফাইনালের আগে ছিটকে গেলে কী রকম প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়তে হতে পারে তাঁদের। ‘‘আমাদেরও হয়তো চোকার্স বলা শুরু হত। আরও কী কী বলা হত কে জানে। যত এ সব ভেবেছি, তত মনে যেন ভয় ঢুকে গিয়েছিল,’’ বলেছেন বাটলার।
ফাইনালে বাটলার ৫৯ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছিলেন। এর পরে সুপার ওভারে এসেও ভাল খেলেন। সুপার ওভারের শেষ বলে জিততে গেলে নিউজ়িল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল দু’রান। ব্যাট করছিলেন গাপ্টিল। কী মনে হচ্ছিল শেষ বলের আগে? প্রশ্নের জবাবে বাটলার বলেন, ‘‘বাইরে থেকে দেখে হয়তো আপনাদের মনে হতে পারে, ওই সময় সবাই নার্ভাস থাকবে। কিন্তু ক্রিকেটার হিসেবে বলব, ওই সময় মাঠের বাইরে থাকার চেয়ে মাঠের ভিতরে থাকা অনেক ভাল। কারণ, তা হলে ম্যাচটার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করা যায়।’’
সেটাই করেছিলেন বাটলার। বিশ্বকাপের ভাগ্য ঠিক করে দেন মুহূর্তের তৎপরতায়। ‘‘গাপ্টিল বলটা লেগ সাইডে ঠেলেছিল। জেসন (রয়) যখন বলটা ধরে, আমার মনে হয়েছিল থ্রোটা ঠিক হলে আমরা ম্যাচটা জিতে যাব। জানতাম, গাপ্টিল ক্রিজের কাছাকাছিও পৌঁছতে পারবে না। চাপের মুখে ওই সময় বলটা ঠিকঠাক ধরা হয়তো সহজ ছিল না। কিন্তু জানতাম, কাজটা করতে পারব। ফাইনাল হলেও তো ব্যাপারটা অন্য রকম কিছু ছিল না। বলটা ধরে স্টাম্প ভেঙে দেওয়া। সেটা করতে পেরেছিলাম,’’ বলেছেন বাটলার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy