প্রস্তুতি: কেকেআরের অনুশীলনে মগ্ন রাসেল। রবিবার। টুইটার।
আট দলের মধ্যে সাত নম্বরে পড়ে থাকা। সাত ম্যাচে মাত্র দু’টি জয়, সাকুল্যে সংগ্রহ চার পয়েন্ট। প্লে-অফের দৌড়ে বাজিগরের দলের উপরে বাজি ধরার লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। স্বয়ং অধিনায়কের দুঃস্বপ্নের টুর্নামেন্ট অব্যাহত। ব্যাটে তো রান পাচ্ছেনই না, ভুলে ভরা নেতৃত্ব প্রশ্নের মুখে পড়েছে। নাইটদের রিজার্ভ বেঞ্চে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সফল টিম সেইফার্ট ও বেন কাটিং আছেন। কিন্তু অধিনায়ককে বসানোর সিদ্ধান্ত কে নেবে!
এই অবস্থায় আজ, সোমবার, বিরাট কোহালির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের মুখোমুখি কলকাতা নাইট রাইডার্স। যারা এই মুহূর্তে এক নয়, একাধিক সমস্যায় জর্জরিত। সব চেয়ে বড় চিন্তা শুরুর দিকের ব্যাটিং। শুভমন গিল এবং নীতীশ রানা পাওয়ার প্লে-র ফিল্ডিং বিধিনিষেধের সুবিধা নিতে ব্যর্থ। তাঁদের স্ট্রাইক রেট ১২০-রও নীচে। ওপেনারেরা মন্থর ব্যাটিং করায় চাপ বাড়ছে মাঝের দিকের ব্যাটসম্যানদের উপরে। হেড কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম ওপেনারদের এই ব্যাটিংয়ের সমালোচনা করতে বাধ্য হয়েছেন। কড়া কথা শুনিয়েছেন যে, ‘‘ব্যাটিং ভঙ্গি যদি পাল্টানো না যায়, তা হলে ব্যাটসম্যানকেই পাল্টাতে হবে।’’ অর্থাৎ, বদলের ইঙ্গিত। তা হলে কি শুভমনকে বসানো হবে? ও দিকে নাইটদের ব্যাটিং পরামর্শদাতা ডেভিড হাসি আবার শুভমনের প্রশংসা করে বসে আছেন।
অতি সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজে ওপেনার হিসেবে প্রশংসিত হওয়ার মতো খেলেছিলেন শুভমন। কিন্তু চলতি আইপিএলে এখনও পর্যন্ত সাতটি ম্যাচে ১৩২ রান করতে পেরেছেন। গড় মাত্র ১৮.৮৫। স্ট্রাইক রেটও বেশ কম, ১১৭.৮৫। যথেষ্ট স্ট্রোক দেখা যাচ্ছে না তাঁর হাতে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মারতে পেরেছেন মাত্র ১৪টি বাউন্ডারি এবং পাঁচটি ছক্কা। সম্প্রচারকারী চ্যানেল স্টার স্পোর্টসে কেভিন পিটারসেন বিতর্ক উস্কে দিয়ে বলেছেন, ‘‘শুভমন গিল খুব ভাল ব্যাটসম্যান। আমার ওকে খুব ভাল লাগে। কিন্তু ক্রিজে ওকে আর একটু সক্রিয় হতে হবে। ওকে দেখে খুবই অলস মনে হচ্ছে।’’ ইংল্যান্ডের প্রাক্তন তারকা ব্যাটসম্যান ধারাভাষ্যের ফাঁকে আরও বলেছেন, ‘‘ওর কয়েকটি আউট খুবই খারাপ ধরনের। মনে হচ্ছে যেন খেলার গতির সঙ্গে ও তাল মেলাতে পারছে না। বড্ড অলস দেখাচ্ছে ওকে। পায়ের কাছের বলগুলোকে তো বাউন্ডারিতে পাঠাতে হবে। সক্রিয় হয়ে উঠতে হবে।’’
মর্গ্যানরা কেন সুনীল নারাইনকে পিঞ্চহিটার হিসেবে ব্যবহার করছেন না, সেটাই আশ্চর্যের। তাঁকে বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানের মতো চার নম্বরে নামানো হচ্ছে। অথচ আইপিএলে দ্রুততম অর্ধশতরানের তালিকায় প্রথম দশের মধ্যে নারাইনের দু’টি ইনিংস রয়েছে। তাই তাঁকে শুরুতে নামিয়ে ফাটকা খেলার পক্ষপাতী অনেকে। নারাইনের দুর্বলতা দ্রতগতিতে শরীরের দিকে আসা বোলিংয়ে। আরসিবির হাতে কোনও কাগিসো রাবাডা বা যশপ্রীত বুমরা নেই, তাই নারাইনকে উপরে তোলা যেতেই পারে। সুনীল গাওস্কর— যাঁর নামের অনুকরণেই নারাইনের বাবা ছেলের নামকরণ করেছিলেন, তিনিও একাধিক বার বলেছেন, নারাইনকে ওপেনে পাঠানো উচিত। একই সঙ্গে আন্দ্রে রাসেলকে কী ভাবে আরও বেশি বল খেলতে দেওয়া যায়, সেটাও ভাবতে হবে মর্গ্যানদের। সবাই জানে, রাসেল ক্রিজে এসে থিতু হতে কিছুটা সময় নেন। তার পরে তিনি টপ গিয়ারে ওঠেন। তবু রাসেলকে দেরি করে কেন নামানো হচ্ছে? ছয় বা সাত নম্বরে নামায় তিনি বেশি বল খেলতে পারছেন না, সতীর্থের অভাবেও ভুগছেন।
কেকেআর-কে সামান্য স্বস্তি দিতে পারে এই তথ্য যে, কোহালিরা যেমন দুরন্ত গতিতে শুরু করেছিলেন, সেই ছন্দ এই মুহূর্তে নেই। দু’টি ম্যাচ হেরেছেন তাঁরা এবং বাঁ হাতি স্পিনের বিরুদ্ধে হঠাৎই দুর্বল দেখাচ্ছে আরসিবির তারকাখচিত ব্যাটিং বিভাগকে। চেন্নাই সুপার কিংসের রবীন্দ্র জাডেজা এবং পঞ্জাব কিংসের হরপ্রীত ব্রারের বাঁ হাতি স্পিনের সামনে গুটিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে কোহালিদের। দু’জনেই তিনটি করে উইকেট নিয়ে গিয়েছেন। কেকেআর শাকিব-আল-হাসানকে দলে ফেরায় কি না, দেখার। নারাইন-শাকিব-বরুণের ত্রিমুখী স্পিনের সামনে ফেলা যেতেই পারে আরসিবি-কে। কোহালি, এবি ডিভিলিয়ার্স, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল প্রত্যেকেই স্ট্রোক খেলার জন্য গতিসম্পন্ন বল পছন্দ করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে স্পিনই অস্ত্র হতে পারে। ডিভিলিয়ার্সের বিরুদ্ধে যেমন সব চেয়ে সফল বোলারদের এক জন সুনীল নারাইন। অতিমারির আবহে আরসিবি ঘোষণা করেছে, তারা নতুন নীল জার্সি পরে কয়েকটি ম্যাচ খেলবে। তার পর সেই জার্সি নিলাম করে অর্থ সাহায্য করবে কোভিড আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy