সুনীল ছেত্রী। — ফাইল চিত্র।
ক্যাপ্টেন। লিডার। লেজেন্ড।
অধিনায়ক। নেতা। কিংবদন্তি।
গত কয়েক বছর ধরে এই তিনটি বিশেষণেই ডাকা হচ্ছে সুনীল ছেত্রীকে। ভারতীয় ফুটবল দলের ম্যাচ থাকলে এবং সেখানে সুনীল খেললে অন্তত একটি বার ধারাভাষ্যকারেরা এই শব্দ তিনটি একসঙ্গে উচ্চারণ করবেনই। বলা বাহুল্য, এই বিশেষণ এমনি এমনি আসেনি। ধারাভাষ্যকার থেকে সমর্থকেরা যে তিনটি শব্দে তাঁকে আখ্যায়িত করেন, তাঁর প্রতিটিই নিজের যোগ্যতায় অর্জন করেছেন এবং প্রমাণ করেছেন সুনীল। অবসরের দিনেও তিনি থেকে যাবেন ‘ক্যাপ্টেন, লিডার, লেজেন্ড’ হয়েই।
সুনীলের জীবনের দিকে ফিরে তাকালে এই শব্দগুলো হয়তো একটু অদলবদল করে নিতে হবে। কারণ অধিনায়ক হওয়ার আগেই দলের নেতা হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সুনীলের মধ্যে সহজাত একজন নেতা যে লুকিয়ে রয়েছে তা বোঝা গিয়েছিল অনেক আগেই।
ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীদের অনেকেরই মনে থাকবে ২০০৮ সালের এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে ভারত-মায়ানমার সেমিফাইনাল ম্যাচের কথা। বৃষ্টিভেজা কাদা মাঠে ফুটবল খেলার পরিবেশই ছিল না। সেই ম্যাচে শেষ দিকে ছেত্রীর একটি গোল ভারতকে ফাইনালে তুলে দেয়। সেই গোলটির কথা অনেকেরই মনে আছে। ভাইচুং ভুটিয়ার ক্রস সুনীল হেডে রিসিভ করেন। বেশ খানিকটা এগিয়ে যাওয়া বল ধাওয়া করে আবার হেডেই বল জালে জড়ান। মাটিতে বল ফেলতে দেননি। কারণ, কাদামাটিতে গোল করা সম্ভব হচ্ছিল না। হায়দরাবাদে সে দিন হাজার দুয়েক সমর্থকই শুধু নয়, ভারতীয় ফুটবল চিনেছিল সুনীলকে।
২০১২ সালের নেহরু কাপ ফাইনালের কথাও বলা যেতে পারে। ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে এক সময় কোণঠাসা হয়ে গিয়েছিল ভারতীয় দল। ম্যাচের মিনিট ১৫ বাকি থাকতে বিপক্ষের থেকে পেনাল্টি আদায় করেছিলেন সুনীল। নিজেই গোল করে সমতা ফিরিয়েছিলেন। টাইব্রেকারে ক্যামেরুনকে হারিয়ে ট্রফি জিতেছিল ভারত।
এই দু’টি এবং অনেক ছোট ছোট ঘটনা প্রমাণ করে দিয়েছিল সুনীলের প্রতিভা। তত দিনে প্রমাণ করে দিয়েছিলেন, গোল করার জন্য আর কেউ না থাকুক, তিনি অন্তত আছেন। সতীর্থদের চাঙ্গা করতেন তিনি। সতীর্থদের তাতাতেন তিনি। অধিনায়কের আর্মব্যান্ড ছাড়াও দলের মধ্যে এ ভাবে নেতৃত্ব দেওয়া যায়, এটা প্রমাণ করে দিয়েছিলেন সুনীল। নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে বুঝিয়েছিলেন, দলের দরকারে তিনি আছেন। তরুণদের উদ্দেশে নিঃশব্দে বলতেন, আমাকে দেখে শেখো। তখন ভাইচুংয়ের শেষের সময় চলে এসেছিল। ভারতীয় দলের পরবর্তী নেতা বেছে নিতে তাই কাউকেই খুব একটা মাথা খাটাতে হয়নি।
ভারতীয় দলের হয়ে খেলা প্রথম থেকে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত সুনীলের দায়বদ্ধতা ছিল একই রকম। বয়সের কারণে ধার কমেছে, গতি শ্লথ হয়েছে। কিন্তু যেটা কমেনি, সেটা হল জেতার অদম্য খিদে এবং ইতিবাচক মানসিকতা। জিতলে যেমন অতিরিক্ত উচ্ছ্বাসে ভেসে যাননি। তেমনই হেরে গিয়ে কখনও সুনীল কাঁদেননি। মাথা নীচু করে থেকেছেন, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করেছেন। সঙ্কল্প নিয়েছেন পরের বার সুযোগ এলে একই ভুল দ্বিতীয় বার না করার। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, ২০২৪-এ সেই যাত্রার শেষ পর্বে এসেও সুনীল সেই একই রকম।
সাধারণত ক্লাব পর্যায়ে ভাল খেলার পরেও জাতীয় দলে নির্বাচিত হন ফুটবলারেরা। সেখান থেকে ধীরে ধীরে পরিচিতি পান। কিন্তু সুনীলের ক্ষেত্রে বিষয়টা ঠিক উল্টো। তিনি কেরিয়ারের শুরুর দিকে জাতীয় দলের জার্সিতে নিজেকে যতটা প্রমাণ করতে পেরেছিলেন, ক্লাবের হয়ে ততটা পারেননি। ২০০৮ সালে জেসিটি ছাড়ার পর থেকে সুনীলের ফর্ম একটু হলেও খারাপের দিকে গিয়েছিল। জাতীয় দলের হয়ে যে রকম গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বা কঠিন কঠিন জায়গা থেকে গোল করছিলেন, সেই কাজ ক্লাবের জার্সিতে করতে পারছিলেন না।
এখানেই সুনীলের জীবনে একটি বড় পরিবর্তন এনে দেয় পর্তুগালের স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়ায় তাঁর সফর। কিছু দিন আগে সাংবাদিকদের সামনে স্বীকার করেছিলেন, বয়সটা আরও একটু কম হলে পর্তুগাল থেকে ফিরতেন না। কিন্তু স্পোর্টিংয়ের সঙ্গে কাটানো সময়, সেখানকার আধুনিক অনুশীলন প্রত্যক্ষ করা, কোচেদের থেকে পাওয়া শিক্ষা পরবর্তী কালে সমসাময়িকদের থেকে বহু গুণ এগিয়ে দিয়েছিল তাঁকে।
বেঙ্গালুরুতে যোগ দেওয়া সুনীলের জীবনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। নিজের খেলাকে এমন উচ্চতায় নিয়ে চলে যান যে বাকিরা ধারেকাছে ছিলেন না। সুনীল যেন তরুণ ফুটবলাদের প্রতি মুহূর্তে বোঝাতেন, যদি উন্নতি করতে হয় তা হলে আমাকে দেখে শেখো। প্রতিটি অনুশীলনে ঘাম ঝরানো, নতুন কিছু শেখার তাগিদ, নিজের সেরা অস্ত্র আরও শক্তিশালী করে তোলার চেষ্টা— কোনও কিছুতেই খামতি ছিল না। পরিশ্রম করতে পারেন অক্লান্ত। আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের শেষ সময় পর্যন্ত তিনি সেটা দেখিয়ে গিয়েছেন।
পর্তুগালে গিয়ে সুনীলের আরও একটি বড় প্রাপ্তি হল, ফিটনেসের গুরুত্ব বুঝতে শেখা। বিরাট কোহলি এক সময় বলেছিলেন, ২০১১ বিশ্বকাপের পর নিজের চেহারা আয়নায় দেখার পর ফিটনেস সম্পর্কে ধারণা বদলে গিয়েছিল তাঁর। সুনীলের ক্ষেত্রে কোন ঘটনা অনুঘটকের কাজ করেছিল জানা নেই। কিন্তু ফিটনেসকে তিনি যা গুরুত্ব দিয়েছিলেন এবং এখনও দেন, তার কোনও তুলনা নেই। অতীতে শোনা যেত, ফুটবলারেরা বিরিয়ানি খেয়েও মাঠে খেলতে নেমে পড়তেন! সুনীল এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সতর্ক। নিজের ডায়েট, ঘুম এবং অনুশীলন নিয়ে কোনও রকম আপসের রাস্তায় হাঁটেননি। কোনও দিন ছুঁয়ে দেখেননি মদ। এখনকার ফুটবলারদের অনেকেই এই সংযম দেখাতে পারেন না। সুনীল সেটা নিষ্ঠার সঙ্গে করেছেন। এখানেও তিনি বার্তা দিয়েছেন, আমাকে দেখে শেখো। আদর্শ অধিনায়কদের ঠিক যে রকম বার্তা দেওয়া দরকার, সেটাই করেছিলেন।
অধিনায়ক হিসাবে কোনও দিন সতীর্থদের ঘাড়ে কোনও কিছু চাপিয়ে দেননি। সবার আগে বলতেন, খেলাটাকে ভালবাসো। দলটাকে ভালবাসো। ওখানেই আসল আনন্দ লুকিয়ে। ম্যাচে হার-জিত নিয়ে পরেও ভাবা যাবে। বরাবর জোর দিয়েছেন পরবর্তী প্রজন্মকে তুলে আনার জন্য। প্রাক্তন ফুটবলারেরা হামেশাই বলে থাকেন, ‘আমাদের সময়ে এই ছিল’, ‘আমাদের সময়ে ও-ই ছিল’। ফুটবলের জন্য তাঁরা কী করেছেন সেই প্রশ্ন করলেই মুখে কুলুপ। নিশ্চিত থাকা যায় আগামী সময়ে সুনীল কোনও দিন এ কথা বলবেন না। তাঁর চলে যাওয়ার পরে ভারতীয় ফুটবলে কে গোল করবে? খেলা ছাড়া কয়েক দিন আগেও সুনীল এ নিয়ে আশাপ্রকাশ করেছেন। স্পষ্ট জানিয়েছেন, এখনকার ফুটবলারদের মধ্যে সেই সঙ্কল্প, সেই জেদ রয়েছে ব্যাটন বয়ে নিয়ে যাওয়ার। কোনও দিন কারওকে ছোট করে কথা বলেননি। কাউকে নীচু করে দেখাননি। দলের মধ্যে ঢুকতে দেননি কোনও দ্বন্দ্ব। ‘ইগো’ শব্দটাকে বুদ্ধির সঙ্গে সরিয়ে রেখেছেন বরাবর। দল গোল খেলে সবার আগে ছুটে গিয়েছেন গোলকিপারের কাছে। পিঠ চাপড়ে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছেন। বাকিদের কাছে টেনে কোথায় ভুল হল তা শুধরে দিয়েছেন। আদর্শ টিমম্যান। আদর্শ অধিনায়ক।
ভারতীয় ফুটবল অতীতে অনেক কিংবদন্তিই পেয়েছে। পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়, চুনী গোস্বামী, তুলসীদাস বলরাম, আমেদ খান, আপ্পারাও, সালে, জার্নেল সিংহ— শুরু করলে শেষ হবে না। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেও এটা বলাই যায়, ভারতীয় ফুটবলকে বিশ্বে প্রচার করার দিক থেকে সুনীল একমেবাদ্বিতীয়ম। এশিয়াড জেতা, অলিম্পিক্সে ভাল খেলার সুবাদে ভারত বিশ্ব ফুটবল মানচিত্রে ঠাঁই করে নিয়েছিল ঠিকই। কিন্তু ফুটবল আধুনিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারত ইঁদুরদৌড়ে ক্রমশই পিছিয়ে পড়তে থাকে। ভারত যে ফুটবল খেলে, এটাই ভুলতে বসেছিলেন অনেকে। র্যাঙ্কিংয়ে শেষের দিক থেকে উপরে উঠলে তবে খুঁজে পাওয়া যেত।
সেই ভারতীয় দলকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার প্রথম ভূমিকা নিয়েছিলেন ভাইচুং। তিনিও বিদেশে খেলতে গিয়ে সুনাম অর্জন করেছিলেন। সেই ধারাই অনেকটা এগিয়ে দিয়েছিলেন সুনীল। না হলে তাঁর অবসর ঘোষণার পর ফিফা কখনও লিয়োনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর সঙ্গে তাঁর ছবি পোস্ট করে সমীহ জানায়! ভারতের বাজার ধরার ভাবনা যদি দূরে সরিয়ে রেখে ভাবা যায়, তা হলে এটা বলা যায় সুনীল নিজেই সেই যোগ্যতা অর্জন করে নিয়েছেন। জাতীয় দলের হয়ে ৯৪ গোল করেছেন বলেই রোনাল্ডো, মেসির সঙ্গে ছবি দিয়েছে ফিফা। সুনীলের ৫০টা গোল থাকলে কি দিতে পারত? ফুটবল খেলে বিশ্বের ২১০টি দেশ। মেসি, রোনাল্ডো বাদে সক্রিয় ফুটবলারদের মধ্যে আর কোন দেশের খেলোয়াড় নিজেকে এই দৌড়ে নিয়ে আসতে পেরেছেন? তবু সুনীলের কাছে এই প্রশ্ন তুললেই তিনি বলেন, মেসি, রোনাল্ডোর গুণমানের সঙ্গে তাঁর তুলনাই হয় না। এটি স্রেফ সংখ্যাই।
ভারতীয় ফুটবল নিয়ে সুনীলের দায়বদ্ধতা এবং ভাবনাকে অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। যে দলের ম্যাচে একসময় দু’হাজার লোকেরও ভিড় হত কি না সন্দেহ, তাঁদের মাঠে নিয়ে আসতে পেরেছেন সুনীল। বছর কয়েক আগে সমাজমাধ্যমে তাঁর কাতর আবেদনের কথা নিশ্চয়ই কেউ ভুলে যাননি। নিজেকে কোন জায়গায় নিয়ে গেলে হাতজোড় করে সমর্থকদের মাঠে আসার আবেদন করা যায়! তা-ও আবার অধিনায়ক হয়ে। সুনীল নিজেকে সেই জায়গাতেই নিয়ে যেতে পেরেছেন। দলের, ফুটবলের প্রসারে হাতজোড় করতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি। ‘ইগো’ থাকলে কি সম্ভব এই জিনিস? ভারতীয় ফুটবলের প্রতি তাঁর অবদান নিয়ে কি এর পরেও কোনও প্রশ্ন তোলার জায়গা থাকে?
বস্তুত, ভারতীয় ফুটবলের সবচেয়ে বড় প্রচারক হিসাবে সুনীলের কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ থেকে যাবেন সমর্থকেরা। ভারতীয় ফুটবলের হতাশাজনক পারফরম্যান্স দেখে যাঁরা মুখ ফিরিয়েছিলেন, সুনীল তাঁদের মাঠে ফিরিয়ে আনতে পেরেছেন। অবসরের দিনে যুবভারতীতে ৬২ হাজার দর্শকের উপস্থিতি সেটা আবার প্রমাণ করে দিয়েছে। ভারতের ফুটবল ম্যাচ দেখতে আবার লোকে মাঠে আসছে। যার এক এবং একমাত্র কারণ সুনীলই। ক্রিকেট দলে বিরাট কোহলি ছাড়াও একজন রোহিত শর্মা রয়েছেন, একজন ঋষভ পন্থ বা হার্দিক পাণ্ড্য রয়েছেন। ভারতীয় দলে সুনীল ছাড়া আর কে?
শহর বা দেশের বিভিন্ন ক্রিকেট কোচিং ক্যাম্পে অতীতে খুদেদের জিজ্ঞাসা করলে এক সময় উত্তর আসত, ‘আমি সচিন তেন্ডুলকর হতে চাই’। পরে সেটাই বদলে হয়ে যায়, ‘আমি বিরাট কোহলি হতে চাই’। অবাক হলেও এটাই সত্যি, এখন বিভিন্ন ফুটবল কোচিং ক্যাম্পে এটা শোনা যায়, ‘আমি সুনীল ছেত্রী হতে চাই’। এই বদলটা আনতে পেরেছেন সুনীল। তাঁকে আদর্শ করেই এখন জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখে খুদেরা। বাড়ির দেওয়ালে রোনাল্ডো, মেসির পাশে শোভা পায় একটা সুনীল ছেত্রীর ছবিও।
সুনীল চলে গেলে কে গোল করবেন তা নয়, প্রশ্ন ওঠা উচিত কে এ ভাবে ভারতীয় ফুটবলের প্রচার করবেন? ৬ জুন পর্যন্ত মাঠ ভরেছে সুনীলের নামে। এর পর? যাঁরা অন্ধ ফুটবল সমর্থক তাঁরা হয়তো মাঠে আসবেন। পরের প্রজন্ম সেই একই আগ্রহ পাবে তো?
ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীদের কাছে এর পর কী পড়ে রয়েছে তা হয়তো জানা নেই। তবে এত দিন ধরে তাঁরা গর্ব করে বলতে পেরেছেন, ‘‘তোমাদের কাছে মেসি, রোনাল্ডো আছে তো কী হয়েছে? আমাদের কাছেও একটা সুনীল ছেত্রী আছে।’’ ভারতে আবার কবে সুনীল ছেত্রী তৈরি হবে উত্তরটা সুনীলেরও জানা নেই। ভারতীয় সমর্থকদেরও।
ভারতীয় ফুটবলের হয়তো এটাই সবচেয়ে বড় শূন্যতা রেখে গেলেন ‘ক্যাপ্টেন, লিডার, লেজেন্ড’। সঙ্গে থেকে গেল একগাদা প্রশ্নও, যার উত্তর কবে পাওয়া যাবে কেউ জানেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy